২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিষ্টি আঙ্গুর চাষে সফল রুহুল আমিন

- ছবি - নয়া দিগন্ত

যশোরের চৌগাছায় বাণিজ্যিকভাবে ভারতীয় মিষ্টি আঙ্গুর চাষ করে সফলতা পেয়েছেন রুহুল আমিন। তার আঙ্গুরের ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় করছেন। বাগান দেখে দর্শনার্থীদের অনেকে আঙ্গুর চাষে উৎসাহী হচ্ছেন।

রুহুল আমিন পৌরসভার বেলেমাঠ গ্রামের মইনুদ্দীনের ছেলে। তিন ভাই-বোনের সবার বড় রুহুল আমিন। অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে হয় তার। যে কারণে এসএসসি পাসের পরে তিনি বাবার পেশা কৃষিতে মনোযোগ দেন। এক বিঘা জমিতে পেঁয়ারা আবাদ দিয়ে শুরু করেন ফলের চাষ। এর পরে কুল, তার পরে ড্রাগন চাষে সফলতা অর্জন করেন। রুহুল আমিনের বর্তমানে কুল পেঁয়ারাসহ ছয় বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান রয়েছে। সাথে ১০ কাঠা জমিতে রয়েছে মিষ্টি আঙ্গুরের মাচা।

রুহুল আমিন জানান, গতানুগতিক চাষের বিকল্প হিসেবে আঙ্গুর চাষের চিন্তা করেন। ইউটিউব দেখে আঙ্গুর চাষের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি। গতানুগতিক ধারা পরিবর্তনের আগ্রহ থেকেই দেশের মাটিতে এ ফলের চাষ শুরু করেন। এখন তার বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙ্গুর। ফলনের পরিমাণ এত বেশি হয়েছে যে গাছের প্রতি ডগায় শোভা পাচ্ছে আঙ্গুর।

তিনি জানান, ইউটিউব দেখে আকৃষ্ট হওয়ার পরে ২০২২ সালের মার্চ মাসে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আব্দুর রশিদের কাছ থেকে চয়ন জাতের ৩৬টি আঙ্গুরের চারা সংগ্রহ করে ১৬ শতক জমিতে রোপন করেন। এক বছরেই সুমিষ্টি আঙ্গুরে ভরে গেছে মাচা। বাগানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত পরিচর্চাসহ খরচ হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমান বাগানে ৩৫ থেকে ৪০ মন আঙ্গুর রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় তিন লাখ ২০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে অনেক পাইকারি ব্যবসায়ী ক্ষেত ধরে ক্রয় করতে আগ্রহী হচ্ছেন বলেও তিনি জানান।

আজ শনিবার দুপুরে রুহুল আমিনের আঙ্গুর ক্ষেতে গেলে জানান, ১৬ শতক জমিতে ১০০টি গাছ রোপন করে ছিলাম। প্রথম চাষ তাই বুঝে উঠতে পারিনি। অন্যথায় ফলন আরো বেশি হতো। এদিকে অসংখ্য মানুষ আঙ্গুর ক্ষেত দেখতে রুহুল আমিনের বাগানে ভিড় করছেন। দেশের মাটিতে আঙ্গুর চাষ দেখে অভিভূত তারা।

এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা তুহিন হোসেন ও দর্শনার্থীরা জানান, আঙ্গুর খেলেও এর চাষ ও গাছ কখনই আমরা দেখেননি। রুহুল আমিনের আঙ্গুর চাষ দেখে বাগান করতে উৎসাহী হচ্ছেন এলাকার অনেকে। কিনে নিয়ে যাচ্ছেন চারা।

দর্শনার্থীরা জানান, দেশে আঙ্গুর চাষ করলে স্থানীয় চাহিদা মিটবে। ফলে আর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না।

মাহাবুর রহমান নামের এক প্রবাসী জানান, রুহুল আমিনের কাছ থেকে চাষ পদ্ধতি শুনেছি। আমিও আঙ্গুর চাষ শুরু করব।

চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, এ ধরনের নতুন নতুন ফল চাষে কৃষকদের উৎসাহী করতে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত কৃষি বিভাগ। রুহুল আমিনের বাগান দেখেছি। অনেক ফলনও এসেছে। আঙ্গুরসহ সব ধরনের ফল চাষে উৎসাহী কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা দিতে কৃষি বিভাগ প্রস্তুত।


আরো সংবাদ



premium cement