২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জিজ্ঞাসাবাদে অপহৃত হওয়ার কথা জানিয়েছেন রহিমা বেগম : পিবিআই

- ছবি - সংগৃহীত

মাসখানেক নিখোঁজ থাকা রহিমা বেগমকে অপহরণ করা হয়েছিল। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) জিজ্ঞাবাদে রহিমা এমনটাই জানিয়েছেন। তার বক্তব্য, নিজ বাসার নিচ থেকে চার-পাঁচজন দুর্বৃত্ত মুখে কাপড় বেঁধে তাকে অপহরণ করেছিল। আজ রোববার দুপুরে সন্তানদের মুখোমুখি করার পর তিনি এ তথ্য জানান।

ফরিদপুরের বোয়ালমারি থেকে শনিবার রাতে উদ্ধারের পর রহিমা বেগম (৫৫) ও আরো দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারির কুদ্দুসের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। কুদ্দুস এক সময় খুলনার একটি জুট মিলে চাকরি করতেন ও রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়াটিয়া ছিলেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে সোনাডাঙ্গা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে রহিমা বেগমকে পিবিআই কার্যালয়ে আনা হয়।

পিবিআই খুলনার সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সকালে এক প্রেস ব্রিফিং করেন। তখন জানিয়ে ছিলেন, রহিমা কোনো কথাই বলছেন না। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে সাংবাদিকদের জানান, বেলা ১টার দিকে মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ তাকে চার মেয়ের মুখোমুখি করা হয়। মেয়েরা মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করেন। পরে রহিমা বেগম অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন।

পিবিআই সুপার বলেন, রহিমা বেগম তাকে চারজন অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় বলে দাবি করেন। তাদের মধ্যে জমি-জমার বিরোধ থাকা কিবরিয়া, মহিউদ্দিনকে তিনি চিনতে পারেন। তারা তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ও বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। এরপর তাকে এক হাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দেন। রহিমা বেগমের দাবি, তিনি কিছুই চিনতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে গোপালগঞ্জের মুকছেদপুর হয়ে পূর্ব পরিচিত ভাড়াটিয়ার ফরিদপুরের বোয়ালখালী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে যান। কিন্তু তার কাছে কোনো মোবাইল নম্বর না থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি।

পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, আমরা রহিমা বেগমের বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে নিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর আর ঘরে ফেরেননি তিনি। এরপর থেকে রহিমার ছয় সন্তান কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কখনো মাইকিং করেছেন। সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনের পর মাকে খুঁজে পেতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায় এ পর্যন্ত খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ গোলাম কিবরিয়া, রহিমার দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল এবং হেলাল শরীফ গ্রেফতার আছেন।


আরো সংবাদ



premium cement