২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুরে ছিলেন রহিমা : পুলিশ

নিখোঁজ রহিমা বেগমকে (বাঁয়ে) উদ্ধারের আঁকুতি জানিয়েছিল তার মেয়ে মরিয়ম (ডানে)। - ফাইল ছবি

খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশা থেকে নিখোঁজের ২৯ দিন পর রহিমা বেগমকে জীবিত ও অক্ষত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলাধীন সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সেখানে তিনি ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ছিলেন।

রোববার রাত আড়াইটার দিকে খুলনার দৌলতপুর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, রহিমা তার আত্মগোপনের বিষয়ে পুলিশের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না এবং তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার পর থেকে তিনি ‘নির্বাক’ রয়েছেন।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে কেএমপির একটি দল ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রহিমাকে অক্ষত অবস্থায় পায়। এরপর রাত ২টার দিকে রহিমা বেগমকে দৌলতপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাড়ি থেকে দুই নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

কুদ্দুসের স্বজনরা পুলিশকে জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে রহিমা ওই বাড়িতেই ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে রহিমার ছেলে সাদী বলেন, ‘যেহেতু আমার মা জীবিত উদ্ধার হয়েছে, সেহেতু তার মুখে নিখোঁজের বিষয়টি জানলে তিনি ভালো বলতে পারবেন।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় যদি আমার পরিবারের কেউ জড়িত থাকে তবে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বিষয়টি আরো তদন্ত করবে বলে জানিয়েছেন মোল্লা জাহাঙ্গীর।

উল্লেখ্য, দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়ায় গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে বের হন রহিমা খাতুন (৫৫)। দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি আর বাসায় ফেরেননি। পরে মায়ের খোঁজে বের হয়ে সন্তানরা মায়ের ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নেয়ার পর তাকে না পাওয়া গেলে সাধারণ ডায়েরি এবং পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন তারা।

গত ২০ দিনেও রহিমার খোঁজ মেলেনি। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের আবেদনে মামলাটি পিবিআইয়ের যাচ্ছে। এ পর্যন্ত পুলিশ ও র‌্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ছয়জনকে গ্রেফতার করলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: নজরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নথি হস্তান্তর হয়নি। পিবিআই যেদিন চাইবে সেদিনই নথি হস্তান্তর করা হবে। এ জটিলতার কারণে এ মামলায় গৃহবধূর স্বামীর রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। পিবিআই মামলাটি বুঝে নিয়ে পরে পদক্ষেপ নেবে। এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো: গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল ও হেলাল শরীফ।

নিখোঁজ রহিমা খাতুনের মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ আমার মায়ের সন্ধান দিতে পারেনি। ফলে ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮তম দিনে আমার ছোট বোন আদুরি আক্তার আদালতে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তরের আবেদন করে। শুনানি শেষে ওই দিনই আদালত মামলা পিবিআইতে হস্তান্তরের আদেশ দেন।

সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement