২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাবেক স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে রক্তমাখা কাপড়ে আত্মসমর্পণ

সাবেক স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে রক্তমাখা কাপড়ে আত্মসমর্পণ - ছবি : নয়া দিগন্ত

চুয়াডাঙ্গার পৌর এলাকায় প্রাক্তন স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করে থানায় আত্মসর্মপণ করেছেন সাবেক স্বামী জসিম উদ্দিন (৩৫)। গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার ফেরিঘাট রোডে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় আহত ওই নারীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয় পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করেছেন। পরে জসিম উদ্দীনকে হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ। আহত ফাহমিদা শিলা চুয়াডাঙ্গা শহরের হোটেল ব্যবসায়ী আবু কাওসারের মেয়ে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী জানান, ‘এক বছর পূর্বে আমার সঙ্গে জসিম উদ্দীনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কিন্তু সে আমার বাবার হোটেলেই ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে আসছিল। ১০ দিন পূর্বে আমি চুয়াডাঙ্গা শহরের মালেক নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহ করেছি। আমার বিবাহের ঘটনা জানার পরে জসিম আমার বাসায় এসে একটি ছুরি দিয়ে আমাকে আক্রমণ করে পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।’

অপরদিকে মালেক বলেন, গত ১০ দিন আগে ফাহমিদা শিলার সাথে আমার বিয়ে হয়। তারপর থেকেই আমার স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন জসিম উদ্দিন। এরপর সোমবার সকালে বাড়িতে ঢুকে আমার স্ত্রীর ওপর হামলা চালায় সে।

এদিকে ফাহমিদা শিলার বাবা আবু কাউসার মধু সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর আগে জসিমের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-কলহ বাড়তে থাকে। সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় গত এক বছর আগে বিচ্ছেদও হয়। কিন্তু এরপরও জসিম তার মেয়েকে নানাভাবে উক্ত্যক্ত করত।’

তিনি আরো বলেন, ‘জসিম হঠাৎ করে আমার বাড়িতে আসে এবং মেয়ের ঘরে ঢুকে তাকে চাকু মারে। এ সময় আমার মেয়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাজিদ হাসান বলেন, ‘দুপুরের আগে পরিবারের সদস্যরা রক্তাক্ত অবস্থায় ওই নারীকে জরুরি বিভাগে নেয়। তার দুই হাতে দুটি ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার ডান হাতে ১৫টি সেলাই দেয়া হয়েছে, তার বাম হাতের শিরা কেটে হাড় বের হওয়ায় অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনের হাতের পাতা কেটে গেছে। তাকে জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ খকরুল আলম খান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার বড় বাজারে এক ফাহমিদা শিলা নামের এক নারীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে জখম করেছেন জসিম উদ্দিন নামের এক কর্মচারী। ঘটনার পর রক্তমাখা অবস্থায় সে নিজেই সদর থানায় উপস্থিত হয়ে জখমের বিষয়টি জানান। এবং নিজেকে ওই নারীর স্বামী বলেও দাবি করেন। তবে ছুরিকাঘাতের সময় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানা হোফাজতে নেয়। আমরা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়া জসিম-শিলার বিবাহ বিচ্ছেদ ও মালেক এক ব্যক্তির সাথে ওই নারীর বিয়ে নিয়ে পুলিশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’


আরো সংবাদ



premium cement