২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

দ্বিতীয় মেয়াদে লকডাউনে সাতক্ষীরা

লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছে পুলিশ - ছবি নয়া দিগন্ত

সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমণ রোধে টানা এক সপ্তাহ লকডাউন শেষে শনিবার ভোররাত থেকে দ্বিতীয় মেয়াদের লকডাউন শুরু হয়েছে। আগামী ১৮ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত এই লকডাউন বলবৎ থাকবে।

গত ৫জুন থেকে সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরায় লকডাউন শুরু হয়। দ্বিতীয় মেয়াদের লকডাউনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী কেনাকাটার সময় এক ঘণ্টা এগিয়ে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত করা হয়েছে।

প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছে। রাস্তায় ছোট ছোট কিছু যানবাহন ও সীমিত পরিসরে মানুষ চলাচল করছে। শহরের ছোট ছোট গলি রাস্তাগুলোর মুখ বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার পরিবহন। পাশের দেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি’র কঠোর নজরদারি জারি রয়েছে। পুরো জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলছে।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ডা: জয়ন্ত সরকার জানান, জেলায় এ পর্যন্ত দুই হাজার ৩২৪ জন করোনা পজিটিভ হয়েছে। এ সময় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ৪৭ জনের। এর মধ্যে বর্তমানে ৬৮৩ জন সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল, বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক এবং বাড়িতে চিকিৎসাধীন আছে।

জেলায় করোনা শনাক্তের প্রথম দিন থেকে ১১ জুন পর্যন্ত গড় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। জেলায় করোনায় মোট মৃত্যু ৫১ জন ও সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ ও সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৪২ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬৮ জন করোনা পজিটিভ এসেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ।

তিনি আরো বলেন, চলতি জুন মাসের ১১ দিনে সাতক্ষীরা জেলায় এক হাজার ৪২৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭০৬ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। জুনের ১১ দিনে শনাক্তের হার ৪৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। মে মাসে জেলায় এক হাজার ৩৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্ত হয়েছে ৩০৫ জনের। মে মাসে শনাক্তের হার ছিল ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ। অর্থাৎ শনাক্তের প্রথম দিন থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সাতক্ষীরায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। মে মাসে শনাক্তের হার বেড়ে হয় ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং জুন মাসে তা বেড়ে দাড়ায় ৪৯ দশমিক ৫১ শতাংশে।

এদিকে সাতক্ষীরায় পর্যাপ্ত বেড, ডাক্তার ও জনবল সঙ্কটে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছে স্বাস্থ্যবিভাগ। বর্তমানে ৬৮৩ জন করোনা পজিটিভ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৩৫ ও সদর হাসপাতালে ৩৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্য রোগীরা রয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক ও পারিবারিক কোয়ারেন্টাইনে।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা: হুসাইন শাফায়েত জানান, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আটটি আইসোলেশন ও ১৩৫টি বেড ছাড়াও আট বেডের আইসিইউ রয়েছে। এছাড়া সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বেড রয়েছে মাত্র ৩৫টি। বেড ও জনবল না থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন ডাক্তাররা।

শনিবার সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরো ১৫টি বেড স্থাপনের কাজ চলছে বলে তিনি জানান।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় ১৮৮ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৬৮ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। সংক্রমণের হার ৩৬ শতাংশে নেমে আসায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।


আরো সংবাদ



premium cement