২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত, বন্ধ হয়নি ভারতে যাতায়াত

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত, বন্ধ হয়নি ভারতে যাতায়াত - ছবি- সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে ভারতে আরো ১৪ দিন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারিসহ বিভিন্ন শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে বেনাপোলসহ সকল স্থলপথে চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন কার্যক্রম। তবে বন্ধ হয়নি দু’দেশের মধ্যে মানুষের যাতায়াত। ছাড়পত্র আছে এমন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারছেন। গত ১৩ দিনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন আড়াই হাজারের বেশি যাত্রী। তাদের মধ্যে ১৭ জন করোনা বা কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এতে বেনাপল বন্দর এলাকায় কিছুটা আকঙ্ক তৈরি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দফায় ২৬ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত ১৪ দিন স্থলবন্দরে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। ভারত ফেরত যাত্রীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ায় শনিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আবারো সতর্কতামূলক ১৪ দিনের জন্য বন্দরে এ নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়। শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এমন নিদের্শনার একটি পত্র পৌঁছানোর কথা নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবীব।

এ দিকে দিন দিন ভারতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে তা বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে। ভারত ফেরত ছয়জন যাত্রীর শরীরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে বলে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে। এতে দেশজুড়ে এখন করোনার নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞায়ও বন্ধ হয়নি বন্দর বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, প্রথম নিষেধাজ্ঞার পর শনিবার পর্যন্ত ১৩ দিনে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন দুই হাজার ৫৬০ জন বাংলাদেশী। তাদের মধ্যে ১৭ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এসব যাত্রীরা ভারতে গিয়ে আক্রান্তের শিকার হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়। আক্রান্ত ওই যাত্রীরা বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে যশোর করোনা রেড জোনে রয়েছে।

যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ইউছুফ আলী জানান, করোনা আক্রান্ত যাত্রীদের যশোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের রেড জোনে রাখা হয়েছে। অন্য যাত্রীদের বেনাপোল, যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। জটিল বা মুমূর্ষ রোগীদের হাসপাতালের কোয়ারেন্টিনে সুযোগ দেয়া হচ্ছে।

বেনাপোল চেকপোস্ট বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিলন হোসেন জানান, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দেশে প্রবেশ করেছে। এতে বন্দর এলাকাবাসীর মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তবে ফলাফল মারাত্মক ভয়াবহ হতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ভারত অক্সিজেন রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। সুতরাং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এ মহামারীর হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে। 

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার বলেন, প্রতিদিন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে তিন শ’ থেকে সাড়ে চার শ’ বিভিন্ন ধরনের পণ্যবোঝাই ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করছে। এই ট্রাকচালকদের মাধ্যমে যাতে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ না ছড়ায় এজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বন্দরের ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবিব জানান, নতুন করে আবারো ১৪ দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। নতুন করে কোনো পাসপোর্টধারী যাত্রী দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত করছে না। তবে নিষেধাজ্ঞার আগে যারা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আটকা পড়েছিল তারা ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ছাড়পত্র নিয়ে দেশে ফিরছেন। এখন থেকে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।


আরো সংবাদ



premium cement