২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সুন্দরবনে আবারো আগুন, পুড়ছে বনভূমি

পুড়ছে সুন্দরবন - ছবি নয়া দিগন্ত

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানী এলাকার ২৪ নম্বর কম্পার্টমেন্টে আবারো আগুন লেগেছে।

সোমবার বেলা এগারোটার দিকে এই আগুনের ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসীর বলছেন প্রায় পাঁচ একর বনভূমিতে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।

আগুন নেভাতে স্থানীয় লোকজন, বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। আগুনের বিস্তার যাতে না বাড়তে পারে সেজন্য ফায়ার লাইন (আগুনের অংশের মাটি আলাদা করা) কাটার কাজ করছে তারা।

এলাকাবাসী ও বন বিভাগের লোকজন বলছেন মৌয়ালদের ফেলে দেয়া আগুন থেকে এই আগুনের সূত্রপাত। এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের পাশের ধানসাগর এলাকার চার শতক বনভূমি পুড়ে যায়।

শরণখোলা উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মরা ভোলা নদী পার হয়ে সুন্দরবন। সেখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনের দাসের ভারানী টহল ফাঁড়ির আওতাধীন এলাকায় আগুনের ঘটনা ঘটে।

বন বিভাগের শরণখোলা স্টেশন অফিস, মরাভোলা ও দাসের ভারানী টল ফাড়ির বনরক্ষী, দক্ষিণ রাজাপুর, মাঝেরচর ও রসুলপুর গ্রামের শতাধিক গ্রামবাসী আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছেন।

আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়া দক্ষিণ রাজাপুর, মাঝেরচর ও রসুলপুর গ্রামের আফজাল চাপরাশি, রেজাউল, সালাম ও সুমনে সাথে কথা বলে জানা যায়, সুন্দরবনের দাসের ভারানি এলাকায় আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা গ্রামবাসী সেখানে ছুটে এসেছি। আমরা বাড়ি থেকে কলসি, বালতি, জগ ও হাড়ি নিয়ে পাশের ভোলা নদী থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছি।

আরেকটি দল আগুন যাতে সুন্দরবনের সব দিকে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ফায়ার লাইন (আগুনের অংশের মাটি আলাদা করা) কাটার কাজ করছে। মরা ভোলা নদী থেকে আগুন লাগার স্থানের দুরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। দূরে হওয়ায় পানি পেতে কষ্ট হচ্ছে। এখানে আর কোনো পানির উৎস নেই। যার কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। প্রায় পাঁচ একর এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে তারা বলছেন।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সোমবার সকাল এগারোটার দিকে ফাঁড়ির অদূরে ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখতে পায় বনকর্মীরা। তারা সেখানে গিয়ে দেখে কোথাও কোথাও ধোঁয়ার কুন্ডলি আবার কোথাও কোথাও আগুন লেগেছে।

এই বনে বলা, গেওয়া ও লতাগুল্ম জাতীয় গাছপালা রয়েছে।

তিনি বলেন, আগুনের খবর স্থানীয়দের জানানো হলে তারা আমাদের সাথে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছেন। আগুনের বিস্তৃতি যাতে সব এলাকায় ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেজন্য স্থানীয়দের নিয়ে একদিকে পানি ছিটানো হচ্ছে অন্যদিকে ফায়ার লাইন কাটার কাজ চলছে।

শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার দমকল বাহিনীর দু’টি দল বনের ভেতরে পাইপলাইন টানতে শুরু করেছে। পানির যোগান কম থাকায় আগুন নেভানোর কাজে অসুবিধা হচ্ছে।

জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের ফেলে দেয়া আগুন থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। তবে কতটুকু এলাকায় আগুন ছড়িয়েছে, কি ধরণের গাছপালা পুড়ছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পরে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব নিরুপণ করে জানানো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement