মহম্মদপুরে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের নতুন কমিটি গঠন
- মহম্মদপুর (মাগুরা) সংবাদদাতা
- ১৯ মার্চ ২০২১, ২১:৩৬
আমরা মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকেরা ৯৫ লাখ ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শেখাচ্ছি। অথচ আমাদের গ্রেড ষষ্ঠ হলেও সপ্তম গ্রেডের বেতন পাই। পাঁচ লাখ ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাচ্ছে যারা তারা পাচ্ছে ষষ্ঠ গ্রেডের বেতন। বৈষম্য দূর করার জন্য আমরা সবাই হা-হুতাশ করছি। কিন্তু আমাদের কেউ ঐক্যবদ্ধ না। আমাদের শিক্ষক সমিতি যদি আদর্শের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতো তবে বাংলাদেশে শিক্ষক সংগঠন পাঁচ থেকে দশটির বেশি হতো না। সেখানে শিক্ষক সংগঠন অর্ধশতাধিক। কেউই দাবি আদায়ের জন্য আগ্রহী না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মহম্মদপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের উপজেলা শাখার প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, সমস্ত দায়ভার প্রধান শিক্ষকের। বোর্ডও যদি ভুল করে তার দায়ভার প্রধান শিক্ষকের। একজন প্রধান শিক্ষককে সব সময় চাকরি যায় যায় অবস্থা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়। কোনো বিভাগে এত ঝুঁকি নিয়ে চাকরি করতে হয় না। আমরা কি বিধি নিয়ে চাকরি করি? আমাদেরতো কোনো চাকরি বিধিই নাই। আবার অবসরের পরে যে টাকা দেয়া হয় তার জন্য আমাদেরই উপার্জিত টাকা কর্তন করে অফিসে লোক পুষে আমাদেরকে টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
পরিষদের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবি আদায়ের জন্য আমরা মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও মাদরাসার প্রধান শিক্ষকেরা ওই দিন দুপুরে মহম্মদপুর মাধমিক বালিকা বিদ্যালয়ে একত্রিত হই। পরে বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের উপজেলা শাখার সম্মেলন করে কমিটি গঠন করি। কমিটিতে আমাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচীত করা হয়। সভাপতি করা হয় বিনোদপুর বি কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস কে নুরুজ্জামানকে।
জানা যায়, উপজেলায় স্কুল পর্যায়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে। যা অনেক ভাগে বিভক্ত। এর একাংশের সভাপতি পদে রয়েছেন ধুলজুড়া চুড়ারগাতী পি সি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও অন্য অংশে সভাপতি পদে রয়েছেন বালিদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মাহফুজার রহমান। এর আগে সমিতির কামরুজ্জামান ও নজরুল গ্রুপ থাকলেও বর্তমানে কামরুজ্জামান ও আউয়াল সিদ্দিকী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে।
এছাড়া মাধ্যমিক পর্যায়ে মাদরাসাগুলোতেও বিভিন্ন সমিতি রয়েছে। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেসিন ও শিক্ষক পরিষদ। বিভিন্ন গ্রুপের নেতৃবৃন্দও সম্মেলনে একতাবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন।
বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিষদের মাগুরা জেলা শাখার আহ্বায়ক আনিচুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ব্রাকেটপন্থী নজরুল, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট, সেলিম ভূঁইয়া, মাদরাসাদের মোদাররেসিন শিক্ষক সমিতি, আদর্শ শিক্ষক সমিতি, কামরুজ্জামান গ্রুপ, হেনাদাস গ্রুপ, কতরকমের গ্রুপ। আমরা একতাবদ্ধ নই। আমরা বিভক্ত। এখানে কোনো আদর্শ নেই। এখানে আমাদের অধিকার আদায়, পেশাগত দক্ষতা, নিরাপত্তা, আমাদের চাকরি নিরাপত্তা সংক্রান্ত শিক্ষক সমিতি আমরা করি না। আমরা করি বাড়িতে শিক্ষক সমিতি, বই বেঁচা সমিতি, প্রশ্ন বেঁচা সমিতি। এখানে অর্থের বিষয় থাকে। এগুলো ভাঙতে আমাদের একটি প্লাটফর্মে কিভাবে আসা যায়, কিভাবে ঐক্যবদ্ধ একটি প্লাটফর্মে শিক্ষকদের আনতে পারি সেজন্যই বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক প্রধানদের পরিষদ গঠন করেছি।
আড়াইশত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনপ্রসাদ বিশ্বাস বলেন, আন্দোলনে যেয়ে আপনি কিছু করতে পারবেন না। তবে বুঝিয়েও অনেক কিছু করা যায়। এই বোঝানোর জন্য আমাদের সঠিক নেতৃবৃন্দ দরকার। যারা আমাদের দাবিগুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরবে। এজন্য আমাদের একতাবদ্ধ হওয়া দরকার।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, কমিটির মধ্যে বিশৃঙ্খলা হলে তাদের দাবি আর উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় না। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দাবিগুলো উত্থাপন করতে হবে। কানে তুলতে হবে। নয়তো সহজ পথেও দাবি দাওয়া ফলপ্রসু হবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা