২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কুমারখালীতে আ’লীগের দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বে সভা পণ্ড, পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

কুমারখালীতে আ’লীগের দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বে সভা পণ্ড, পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন - ছবি : নয়া দিগন্ত

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীতে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বে কার্যকরী কমিটির সভা পণ্ড হয়ে গেছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শনিবার উপজেলা সভাপতি আব্দুল মান্নান খান ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান অরুন পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে একে অপরকে দোষারোপ করেছেন।

বর্তমানে উপজেলা শহরে দু’গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী শনিবার বেলা ১১টার দিকে আবুল হোসেন অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভা শুরু হলে বহিষ্কৃত প্রভাবশালী দু’জন সদস্য সভায় উপস্থিত হলে আপত্তি তোলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র শামসুজ্জামান অরুণ।

এর পর হট্টগোলের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান সভা মুলতুবি ঘোষণা করেন।

এর পরপরই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজ কার্যালয়ে এসে দুপুর ১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দফতর সম্পাদক আসাদুর রহমান আশা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল মান্নান জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জয়নাল আবেদিন ও আবদুল মাজেদ মাস্টারকে কার্যনির্বাহী সভা থেকে বের করে দেয়ার দাবি করেন সাধারণ সম্পাদক শামসুল জামান অরুণ। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাধারণ ক্ষমার কারণে তারা এখনো দলের সদস্য আছেন। তাদেরকে বের করে দেয়ার কথা বলায় আমি তার প্রতিবাদ জানাই। আমার কথা না মানায় কার্যনির্বাহী সভা মুলতুবি ঘোষণা করে আমিসহ অনেকেই সভাস্থল ত্যাগ করেছি।’

এর পর বেলা ৩টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান অরুণ শহরের কুণ্ডুপাড়ায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন।

স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে শামসুজ্জামান অরুণ বলেন, আগের বর্ধিত সভার কার্যবিধি অনুমোদন, বিভিন্ন ইউনিয়নের নতুন কমিটি গঠন, বিভিন্ন জনসভায় বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার কথা ছিল শনিবারের কার্যনির্বাহী সভায়।

এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘মূলত এই সভা বন্ধের জন্য বিভিন্ন ইস্যু খুঁজেছেন সভাপতি। কোনো কিছু না পেয়ে বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে সভাস্থলে ডেকে আনেন। তখন আমিসহ বেশ ক’জন নেতা বহিষ্কৃতদেরকে বের করে দেবার কথা বললে সভাপতি কার্যনির্বাহীসভা মুলতুবি ঘোষণা করে সভাস্থল ত্যাগ করেন।’

জানা গেছে, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহীসভা অনুষ্ঠিত হলেও এর পর কার্যনির্বাহীর কোনো সভা হয়নি।

সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকদের মধ্যে প্রভাববিস্তারকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই বিরোধ চলছিল। শেষ পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এলো। শনিবারের সভা পণ্ড হওয়ার পর শহরের উপজেলা চত্বর ও খাদ্য গুদামের আশপাশে দু’গ্রুপের কয়েক শ’ নেতা-কর্মী মহড়া দেয়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিত রাখতে শহরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। টহল দিতে দেখা গেছে র‌্যাব ও ডিবি পুলিশের সদস্যদের।


আরো সংবাদ



premium cement