২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সোনালি আঁশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা

সোনালি আঁশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা - ছবি : নয়া দিগন্ত

লোকসানের আশঙ্কায় নিয়ে সোনালি আঁশ পাট নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন দামুড়হুদার বিভিন্ন নদী খালে বিলের পাড়ের পাটচাষীরা। নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খোলার প্রত্যাশা নিয়ে চলতি মৌসুমে পাট কাটা, জাগ দেয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

জানা যায়, অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের আবাদ ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। তবু দাম নিয়ে রয়েছে সংশয়। সময় মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় পাট কেটে জলাশয়ে জাগ দেয়া, পাট ছিলা নিয়ে ব্যস্ত চাষীরা। পাট কেটে নদী, পুকুর, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়ানোসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

আবার কোথাও দেখা গেছে, নারী-পুরুষ মিলে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন। খরচ বাঁচাতে রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে আঁশ ছাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও তাতে আগ্রহ নেই তাদের। কৃষক যদি ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেন তাহলে লাভবান হবেন। ন্যায্যমূল্য পেলে কৃষকরা আরো বেশি পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

দামুড়হুদা উপজেলার কুড়–লগাছি ইউনিয়নের কৃষক হাসান আলী স্বাধীন ৫ বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছেন। পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি। উপজেলার এলাকার পাটচাষি মিজানুর রহমান এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ মণ পাট উৎপাদন করেছেন। আর প্রতি বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।

কুড়লগাছি ইউনিয়নের কৃষক ইউসুফ আলী মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। পরে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। এবার তিনি ছয় বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছেন। বাজারে পাটের মূল্য নিয়ে তিনি কিছুটা সংশয়ে আছেন।

যদি সরকার পাটের ভালো দাম নির্ধারণ করে তাহলে আর্থিকভাবে কিছু লাভবান হবেন। আর লাভের মুখ দেখলে আগামী বছর আরো বেশি জমিতে পাটচাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। এবার গত বছরের তুলনায় এ উপজেলায় পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। এলাকার কৃষকরা যাতে পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারেন এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারেন- এ জন্য কৃষকদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শও দিয়েছেন।

কৃষকরা মনে করেন, পাটের ন্যায্যমূল্য পেলে চাষিদের মধ্যে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে।

এ বিষয় দামুড়হুদা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, এবার উপজেলায় ছয় হাজার দুই শ’ ৮৫ হেক্টর জমিতে পাট রোপন করা হয়েছে। ২২৫ জন কৃষকের মাঝে বীজ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আশা করছি ফলনও ভাল হবে নিয়মিত চাষীদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে দাম ভাল পেলে কৃষকেরা আরো উদ্বুদ্ধ হবে পাট চাষে।


আরো সংবাদ



premium cement