১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনায় কারণে আসছে না ব্যাপারিরা, হতাশ চৌগাছার গরু খামারিরা

যশোর - ছবি : সংগৃহীত

যশোরের চৌগাছা উপজেলার প্রতিটি গ্রামে বেশির ভাগ বাড়িতে গরু লালন-পালন করা হয়ে থাকে। ধারদেনা করে গরুর খাবার কেনে এ কৃষি পরিবারগুলো। অনেকে আবার বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েও গরু কিনে লালন-পালন করে। কোরবানি ঈদে ওই গরু বিক্রি করে ঋণ শোধ করে দেন তারা। কিন্তু এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে সে আশার গুড়ে বালি, স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। দারুণভাবে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কায়য় তারা। এ উপজেলার হাজারো কৃষক পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে যেতে বসেছে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৬ হাজার ৫১৭টি পারিবারিক ও বাণিজ্যিক খামার রয়েছে। এসব খামারে কোরবানি উপলক্ষ্যে দেশীয় পদ্ধতিতে প্রায় ৭ হাজার ৫১৫টি গরু মোটাতাজা করা হয়েছে।

উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের মশিউর রনগর গ্রামের গরুর খামারী আলাউদ্দীনের খামারে ৪৬টি গরু রয়েছে। যার ক্রয় মূল্য প্রায় ৫৬ লাখ টাকা। তিনি বলেন, প্রতিটি গরু কমপক্ষে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারলে তার আসল বাচবে। করোনার কারণে বিভিন্ন এলাকার বড়-বড় ব্যাপারীরা এ এলাকায় আসছেন না। কেউ এলেও গরুর দাম বলছেন অর্ধেক। এমন চলতে থাকলে রাস্তায় বসা ছাড়া আর উপায় থাকবে না। আলাউদ্দীনের খামারে সবমিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়। সে হিসেবে সঠিক সময়ে গরুগুলো বিক্রি করতে না পারলে তার কম পক্ষে ১০ লাখ টাকা লোকসান হবে।

স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী মিঠু মিয়া, আনছার আলী, জিল্লুর রহমান ও আসাদুজ্জামান বলেন, তারা প্রতি বছর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরু ক্রয় করে ঢাকা, সিলেট, চট্রগামের পাইকারি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতেন। এবছর এখনো কোনো পাইকারি ব্যাপারি বা ক্রেতা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। আমরা তাদের কাছে মোবাইল করলে বলছেন করোনার কারণে গরুর চাহিদা অনেক কম।

সিংহঝুলী গ্রামের পারিবারিক গরু খামারের মালিক রবিউল ও মিজানুর রহমান কাটু, আন্দুলিয়া গ্রামের আরশাদ আলী, মাধবপুর গ্রামর কওছর আলী বলেন, কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য এলাকার অনেকেই গরু লালন-পালন করে মোটা তাজা করেছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো ব্যাপারী আসেনি।

পুড়াপাড়া গ্রামের গরুর মার্মের মালিক মুছা খান বলেন, আমার ফার্মে দেশী-বিদেশী জাতের ২০টি গরু লালন-পালন করে বড় করেছি এ বছর অনেক টাকা লোকসান হবে মনে হচ্ছে।
নারায়ণপুর গ্রামের সামছুল আলম আশা বলেন, দুটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আর বাড়ির ধান-পাট বিক্রি করে ৫টি গরু কিনেছি। গরুর খাবার এলাকার একটি আড়ত থেকে বাকিতে কিনছি। গরু সঠিক সময়ে বিক্রি করতে না পারলে মহা বিপদে পড়তে হবে।

সব মিলিয়ে করোনার প্রভাবে গরু বিক্রি করতে না পারলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন উপজেলার প্রান্তিক গরু চাষীরা।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবীদ প্রভাশ চন্দ্র গোস্বামী বলেন, উপজেলার সকল পারিবারিক ও বাণিজ্যিক খামারের মালিকদের বলা হয়েছে এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে গরু বহন করা ঝুঁকি রয়েছে। সে কারণে স্থানীয় বাজারে গরু বিক্রি করার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement