২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নতুন ৮ জন করোনা আক্রান্ত

চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত মা-মেয়েকে ঢাকায় রেফার্ড

চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত মা-মেয়েকে ঢাকায় রেফার্ড -

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিনজনসহ জেলায় নতুন ৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৩৭ জন। গতকালের নতুন আক্রান্তরা হলেন চুয়াডাঙ্গা পাসপোর্ট অফিসের একজন, বিদ্যুৎ অফিসের একজন, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনসের একজন পুলিশ সদস্যসহ তিনজন, দামুড়হুদা উপজেলার দশমীপাড়ার দুইজন, দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের ২ জন, দর্শনা বাসস্ট্যান্ডপাড়ার একজনসহ মোট আটজন।

এদিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন থেকে করোনা আক্রান্ত মা ও মেয়েকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ ট্রিটমেন্ট ইউনিটের অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাদেরকে কুর্মিটোলা জেনারেলে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। করোনা আক্রান্তরা হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া আবুল হাসানের স্ত্রী ও মেয়ে।

গতকাল কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে চুয়াডাঙ্গার ফলোআপ নমুনাসহ ৪৬টি, মেহেরপুরের ১৯টি, ঝিনাইদহের ৫২টি, কুষ্টিয়ার ১৩৯টি, নড়াইলের ১১১টি নমুনাসহ মোট ৩৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করে চুয়াডাঙ্গায় নতুন ৮ জনের, মেহেরপুরের ৭ জনের, ঝিনাইদহের ১৩ জনের, কুষ্টিয়ার ২৬ ও নড়াইলের ৩০ জনেরসহ মোট ৮৪ জনের শরীরে নতুন করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলোআপ রিপোর্টসহ বাকি অন্য সবগুলো রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

গতকাল চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ২৫টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। সদর উপজেলা থেকে ১৪টি, দামুড়হুদা উপজেলা থেকে ৬টি ও আলমডাঙ্গা উপজেলা থেকে সংগৃহীত ৩টি ও জীবননগর উপজেলা থেকে দুটি নমুনাসহ সংগৃহীত ২৫টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

গতকাল জেলায় ৩ পুলিশ সদস্য, ২ জন সাধারণ করোনা রোগীসহ নতুন ৫ জন সুস্থ হয়েছেন। সুস্থ ৫ জনের আলমডাঙ্গা উপজেলার ১ জন, দামুড়হুদা ধানার ৩ পুলিশ সদস্য ও দামুড়হুদা উপজেলার আরও একজন। সুস্থ ৩ পুলিশ সদস্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং অন্য দুজন হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা: শামীম কবির জানান, জেলায় নতুন আক্রান্ত ৮ জনের মধ্যে সদর উপজেলার তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদেরকে হোম আইসোলেশন ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে। এছাড়া দামুড়হুদা উপজেলার আরও ৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে একজনকে রাতেই হাসপাতালের আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে। অন্যদেরকে হোম আইসোলেশন ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভিাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলায় এখন পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ২১৮১টি। প্রাপ্ত ফলাফল ২০৫২টি। করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৩৭ জনের, করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে ১৮২৭ জনের। সুস্থ ১৪৫ জন ও মৃত্যু ৩ জন।

জানা যায়, করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ৩০ জুন তারা করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ১ জুলাই কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবের ফলাফলে তাদের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ওইদিন রাতেই তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সন্ধ্যার পর আবুল হাসানের স্ত্রীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তার উচ্চ রক্তচাপসহ ডায়বেটিস রোগ থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কুর্মিটোলা রেফার্ড করা হয়। আক্রান্ত দুজনের পরিবারের সিদ্ধান্তে একই সাথে মা ও মেয়ে দুজনকেই স্থানান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: অনিক চৌধুরী বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে করোনা আক্রান্ত এক নারী ও তার মেয়ে আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ভর্তির পর থেকে মা ও মেয়ে দুজনেই স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন। আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার পর একজনের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তার শরীরে উচ্চ রক্তচাপসহ ডায়াবেটিস থাকায় যেকোনো সময় তার অবস্থা অবনতির দিকে যেতে পারে। মেডিক্যাল ন্যাশনাল গাইড লাইন্স অনুযায়ী করোনা আক্রান্ত কোনো রোগীর শরীরে উচ্চরক্তচাপ জাতীয় রোগ থাকলে তাদেরকে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। করোনা আক্রান্ত ওই নারীর শরীরে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থাকায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। একই পরিবারের একজনকে স্থানান্তরের প্রয়োজন হওয়ায় পরিবারের সিদ্ধান্তে দুজনকেই স্থানান্তর করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement