আত্মহত্যার আগে মায়ের কাছে স্কুলছাত্রীর আবেগঘন চিঠি
- ফরহাদ খান, নড়াইল
- ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০৯:৫৫
ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি প্রকাশের পর নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী লায়লা খানম আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘরের মধ্যে আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে। এর আগে লায়লা তার প্রেমিক হাকিম মুন্সীর (২৪) প্রতি নানা অভিযোগ করে আবেগঘন চিঠি লিখে যায়।
হাকিম বর্তমানে সৌদিপ্রবাসী। তিনি লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের ধলইতলা গ্রামের গোলাপ মুন্সীর ছেলে।
এদিকে লায়লার মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার মা হাকিম মুন্সীসহ তার বাবা গোলাপ মুন্সী ও ভাই লালু মুন্সীকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে অভিযুক্ত হাকিমদের বাড়ির সবাই পালিয়েছে।
আত্মহননকারী লায়লার মা মঞ্জু বেগম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঘরের মধ্য থেকে তার মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন তারা। এরপর টেবিলের ওপর থেকে তার মায়ের উদ্দেশ্যে লেখা একটি চিঠি উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা।
চিঠিতে স্কুলছাত্রী লায়লা লিখেছে, মা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। প্রিয় মা, আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও। আমার জন্য তোমাকে নানান মানুষ নানান কথা বলছে। শুধু আমার একটি ভুলের জন্য তোমাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে....।
লায়লার চাচা চান্দু শেখ জানান, প্রতিবেশি সৌদিপ্রবাসী হাকিম মুন্সী সম্প্রতি দেশে আসার পর লায়লার সাথে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। বিয়ের প্রলোভনে তারা দু’জনে অন্তরঙ্গ ছবি তোলে। এরপর মাসখানেক আগে হাকিম সৌদিআরবে চলে যায়। সেখানে (সৌদিআরব) গিয়ে লায়লার অন্তরঙ্গ ছবিগুলো ৩১ মার্চ ফেসবুকে প্রকাশ করে হাকিম মুন্সী। এসব অন্তরঙ্গ ছবি গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষের নজরে আসার পর কয়েকদিন ধরে লায়লাকে নিয়ে সমাজে নানা ধরণের কটূক্তি চলতে থাকে। একপর্যায়ে লজ্জা, ক্ষোভ ও অভিমানে স্কুলছাত্রী লায়লা বৃহস্পতিবার সকালে আত্মহত্যা করে।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, লায়লার ময়নাতদন্ত নড়াইল সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় লায়লার মা বাদি হয়ে হাকিমকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। আসামদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা