১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শ্বাসকষ্ট নিয়ে খুলনা মেডিক্যালে চিকিৎসা পাননি ইবি ছাত্রী

শ্বাসকষ্ট নিয়ে খুলনা মেডিক্যালে চিকিৎসা পাননি ইবি ছাত্রী - সংগৃহীত

শ্বাসকষ্ট নিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন সাবিকুন নাহার নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। পরে দুঃখ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন ওই ছাত্রী। ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন-

গত ৩ দিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছি। আজ আর না পেরে খুলনা মেডিকেলে গিয়েছিলাম, কিন্তু কপাল খারাপ। যখন শুনলো শ্বাসকষ্ট, তখন বলে তারা রোগী দেখে না। আমি উত্তরে বললাম তাহলে আমাদের মত লোক কোথায় যাবে?
উত্তর আসলো ৩/৪ টা
১. প্রাইভেট ক্লিনিক এ যান।
২. সদর হাসপাতালে যেতে পারেন। আমরা সরি।
তবে তিন নম্বরটা ছিল মজার উত্তর। ঠিক তখন ৪ জন পুলিশ ২ টা মধ্যবয়সী লোক নিয়ে আসে। তখন হাসপাতালের জরুরী বিভাগ থেকে ৩ নং উত্তর আসে ঠিক এভাবে- ‘আমরা এই সব রোগী যাই হোক দেখবো, কিন্তু আপনাকে না।’
আমি..
তাদের ২ নং কথার উত্তর হিসেবে বলছি আপনারাই যদি রোগী না দেখেন, সদরের ওরা কিভাবে কি করবে? ওরা চুপ।

আমি বললাম, কোনো ডাক্তার নাই আমাকে দেখার মত? আমি তো দম নিতে পারছি না। তারা বলে, আজ হবে না, কাল আসেন। তখন আমি বললাম, আমার অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তারা বলে, সারা দিন কি করছেন? আমি বললাম, আর সহ্য করতে না পেরে এখন আসলাম। তারা তখনও বলে, হবে না।

আর আমার আপনার প্রশাসনের পুলিশ ভাইয়ারা তখন (আমার ও ডাক্তারদের কথপকথোন) দেখল পুরোটা। কিন্তু কোনো রেসপোন্স নাই। ওখান থেকে চলে আসি আর গ্রাম্য ডাক্তার দেখাই। এখন একটু কম কষ্ট হচ্ছে।

আজকের প্রশাসন তাদের চেতনা নিয়ে জেগেও ঘুম ছিলো। বাহ বাহ..। বড় লেকচার ছাড়েন অথচ আপনারা রোগী দেখেননা আর শ্বাসকষ্টে কেউ মারা গেলে করোনা সন্দেহ তাই না? শেষে জানাজা মিলে না। আমার জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ বাংলাদেশ।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিকিৎসাবঞ্চিত সাবিকুন নাহার ইবির আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। গত কয়েকদিন যাবত শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। বুধবার শ্বাসকষ্টের মাত্রা বেড়ে গেলে সে খুমেকে যান। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শ্বাসকষ্টের রোগী শুনে তার চিকিৎসা না দিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেন। পরে সেখান থেকে নিরুপায় হয়ে ফিরে এসে স্থানীয় এক ডাক্তারের চিকিৎসা নেন সাবিকুন।

সাবিকুন নাহারের সাথে কথা বলে জনা যায়, সে করোনায় শ্বাসকষ্টে ভুগছেন না। আগে থেকেই তার এই সমস্যা আছে। তিন-চার মাস আগেও একবার শ্বাসকষ্ট বেড়েছিল। তখন চিকিৎসা নিয়ে সে স্বাভাবিক হয়। এছাড়া তার বংশগতভাবে তার এই সমস্যাটি আছে বলে জানান তিনি। তার নানীর শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। তবে খুমেকের ডাক্তারদের আচরণে সে মনে আঘাত পেয়ে ফেসবুকে লিখেছেন।

তিনি বলেন, শুধু আমি নয়। হয় তো আমার মতো অরো অনেক মানুষই সমস্যা নিয়ে হাসপাতলে গিয়ে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এতে সংকটকালীন রোগীদের আরো বেশি সংকটে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement