২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জীবন বদলানোর টিপস : আত্মমর্যাদা (দুই)

-


[জিম্বাবুয়ের মুফতি ড. ইসমাইল মেনক এ সময়ের অন্যতম প্রসিদ্ধ ইসলামী স্কলার। তিনি মদিনায় ইসলামের ওপর উচ্চতর পড়াশোনা এবং অলডারগেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোশ্যাল গাইডেন্সের ওপর ডক্টরেট করেছেন। টুইটারে কোভিড-১৯ এর লকডাউনের সময় অনুশীলনের জন্য গিফট করা দু’টি বইয়ে জীবনাচরণের বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে তিনি সহজ সরল কিছু টিপস দিয়েছেন। লকডাউন গিফটের জীবন বদলানোর প্রথম বইয়ের শেষ আলোচনা হলোÑ আত্মমর্যাদা। এই পরিচ্ছেদের শেষ অংশ আজ। অনুবাদ করেছেন মাসুমুর রহমান খলিলী।]

বস্তুবাদের দাস হওয়ার ব্যাপারে সাবধান থাকুন। আপনার জন্য প্রাপ্তি কখনোই যথেষ্ট হবে না। আপনি আরো চাইতে থাকবেন এবং সহজেই ধনী ব্যক্তিদের দিয়ে নিয়ন্ত্রণ হতে থাকবেন।
হে পরাক্রমশালী। আমাদের নিজের কাজে মনোযোগী হয়ে প্রশান্ত জীবন যাপনে সন্তুষ্ট থাকতে সহায়তা করুন এবং আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না এমন জিনিসের ভার আপনি গ্রহণ করুন।
আমাদের যা চাই তার প্রতি বিশেষ মনোনিবেশ করার জন্য আমরা দোষী। এটি কখনোই যথেষ্ট হয় না। আমরা তাই গ্রহণ করি যা সর্বশক্তিমান দেন । আমাদের প্রতি তাঁর এই কৃপার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
আপনার জনপ্রিয় হওয়া এবং অন্যের অনুমোদন লাভেরও প্রয়োজন নেই। সর্বশক্তিমান আপনাকে এই উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেননি । নিজের কাছে সত্যনিষ্ট থাকুন।
আপনি যখন অবশেষে এই জীবনের সত্য অর্থ এবং আপনার হৃদয়ের সঠিক জায়গা খুঁজে পেয়েছেন, তখন আপনি কম প্রোফাইলেই খুশি থাকবেন। আপনি হবেন কৃপা লাভকারী, ধন্য।
প্রিয়জন কেউ মারা গেলে আমরা দুঃখ পাই, এমনকি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ি। ক্ষতির জন্য আমরা শোক অনুতাপ করি। তবে ভুলবেন না যে একদিন, অন্যরা আমাদের মৃত্যুতে একই রকম শোক করবে।
আপনার জন্য আপনার জীবন আছে। আমার আছে আমার জীবন। একটার সাথে আরেকটার তুলনা করা বন্ধ করুন । আমরা বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার মধ্যে আছি। এর সবকিছুর মধ্যে এক একটি কৃপা এবং শিক্ষা রয়েছে।
আপনি সঠিক কারণে এবং আপনার হৃদয়কে সঠিক স্থানে রেখে যখন কোনো কাজ করেন, আপনি তখন কৃপাপ্রাপ্ত হন; আপনার চেহারা, রঙ, পরিচয় বা মর্যাদা এসব কোনো ব্যাপার নয়।
কঠিন দিন সবসময় থাকবে। অন্যের মসৃণ জীবন ও চলাচল দেখে কখনো বঞ্ছনাবোধ করবেন না। জেনে রাখুন, আমরা সবাই উত্থান-পতনের মুখোমুখি হই। এটাই জীবন।
লজ্জা বিশ্বাসের একটি অঙ্গ। যিনি নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করেন এবং কোনোরকম লজ্জাবোধ করেন না তার সম্পর্কে সাবধান হোন। ভালো আচার-আচরণের চর্চা করুন এবং এতে আপনি লজ্জাবোধ অর্জন করবেন।
সর্বদায় মনে রাখবেন, সর্বশক্তিমানের ডিক্রি যা আমরা দেখতে এবং বুঝতে পারি তার থেকে অনেক দূরে। আমাদের ভাবনা-চিন্তা অতদূর যেতে পারে না। সুতরাং অতিচিন্তা এবং অতি বিশ্লেষণ না করাই ভালো। এটি তাঁর জন্য ছেড়ে দিন।
ব্যর্থতা কোনো দিন স্থায়ী হয় না। আপনি নিজেই নিজেকে তুলে ধরুন, দৃঢ় বিশ্বাস রাখুন এবং এগিয়ে যান। বিশ্বাস করুন যে, সর্বশক্তিমান আপনার জন্য আরো ভালো কিছু পরিকল্পনা করছেন। ধৈর্য ধারণ করুন।
আমাদের বিরুদ্ধে শয়তানের বড় অস্ত্র হলে আমাদের কামনাকে জাগিয়ে দেয়া, সৃষ্টিকর্তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি এবং আমাদের মনে দুনিয়ার পরমানন্দ হারানোর ব্যাপারে অস্থিরতা তৈরি করা।
আমরা নিখুঁত নই এবং কখনোই হবো না। বাইরের জগতকে দেখানোর জন্য নানা ধরনের মুখোশ লাগানোর দরকার নেই। ভণ্ডামি বা দ্বিচারিতা বিপজ্জনক।
সব লোকই যে আপনার চোখে চোখ রেখে তাকাতে পারবে এমন নয়। কিছু লোক আপনাকে কখনোই বুঝবে না। আপনি কে তা অন্যকে ঠিক করতে দেবে না। আপনি নিজের কাছে সত্যনিষ্ঠ থাকুন।
অতিমাত্রিক হবেন না। ভালো চেহারা এবং মেধা দিয়ে বোকা বনবেন না। শারীরিক সৌন্দর্য মূল্যহীন, যদি আপনার অন্তর হয় ছদ্মবেশী। আরও গভীর দিকটি অবলোকন করুন।
আপনার জীবনে কী নেই তা নিয়ে চিন্তা করার চেয়ে সর্বশক্তিমান আপনাকে যে দয়া করেছেন তার প্রতি শোকর জানাতে প্রতিদিন আরো বেশি সময় কাটান! কৃতজ্ঞ হোন।
সর্বশক্তিমান, আমি আমার নিজের সমস্ত ত্রুটি বা ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও কৃতজ্ঞ। আপনি এরপরও আমাকে অন্য একটি সুযোগ দেয়ার জন্য বেছে নিয়েছেন। অন্য একটি দিন দিয়েছেন। এটি আমি নষ্ট করব না।
আমরা মানুষ। আমরা অনেক ভুল করি। আমরা রেগে যাই। আমরা আহত হই। আমরা কাঁদি। আমরা দুঃখিত হই। সবসময় হেদায়েতের জন্য, সত্য পথের জন্য সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করুন।
সবাইকে খুশি করার চেষ্টা বন্ধ করুন। এটা অসম্ভব। আপনি কিভাবে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন তা কোনো বিষয় নয়। এটি কখনো কারো পক্ষে যথেষ্ট হবে না। আপনি যা শুধু তাই হোন।শয়তানের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন; ইবলিশ সর্বদায় আপনার আবেগের সাথে খেলে আপনার মধ্যে বিষণœতা জাগিয়ে তুলে এবং এমন মূল্যহীন বানিয়ে ফেলে, যেন কেউই আর পাত্তা না দেয় । কিন্তু সর্বশক্তিমান আপনাকে দেখাশোনা করেন ও ভালোবাসেন।
যখন কেউ আপনার বিরুদ্ধে পূর্ব ধারণা পুষে রাখে, তখন তারা এটিকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য সর্বদাই চেষ্টা করবে। এটিকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করে সময় নষ্ট করবেন না। শুধু নিজের বিবেকের কাছেই সৎ থাকুন।
যেখানে যতটা সম্ভব বিতর্ক এড়িয়ে চলুন। আপনি যখন তর্কে জড়ান তখন শয়তান ফিসফিস করে এবং আপনার অহংবোধকে জাগিয়ে দেয়। তবে সর্বশক্তিমানের পুরস্কারের বিষয়টি ভাবুন। সামাজিক মিডিয়ার একটি দুঃখজনক দিক হলোÑ এটি আমাদের জীবনকে অন্যের সাথে তুলনা করে। আমরা আমাদের প্রতি সর্বশক্তিমানের কৃপার প্রশংসা করি না। আমরা শুধু চাই এবং আরো চাই।
আপনার নিজ জীবনে যা চলছে তার ব্যাপারে কেন অন্যকে বিশ্বাস করবেন এবং ভয় পাবেন অন্যের বিচারকে? সর্বশক্তিমানকে বিশ্বাস করুন, আপনি যা করছেন তার চেয়েও আপনার সম্পর্কে তিনি বেশি জানেন।
আপনি দুঃখিত, হতাশ, হৃদয়ভাঙ্গা অথবা এমনকি ক্ষতবিক্ষত হতে পারেন। তবে প্রতিদিন একটি নতুন প্রত্যাশার সাথে জাগ্রত হোন, সংগ্রাম চালিয়ে যান এবং হাল ছাড়বেন না। জীবন বদলানোর টিপস সম্পর্কিত মুফতি মেনকের দুটি বইয়ের প্রথম খণ্ড সমাপ্ত। দ্বিতীয় বইটির অনুবাদ দিগন্ত ইসলামী জীবন পাতায় দেখতে চাইলে আপনার মতামত জানান হফরংষধসরলরনড়হ@মসধরষ.পড়স শীর্ষক ইমেইলে। পাঠকরা চাইলে আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশ শুরু হবে। না চাইলে এখানেই শেষ।


আরো সংবাদ



premium cement
ফিলিপাইনে ব্রহ্মস পাঠাল ভারত, ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি চীনের মোকাবেলায় নতুন ডিভিশন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে! আবারো চেন্নাইয়ের হার, ম্লান মোস্তাফিজ 'কেএনএফ' সন্ত্রাস : সার্বভৌম নিরাপত্তা সতর্কতা অর্থনীতিতে চুরি : ব্যাংকে ডাকাতি পাকিস্তানে আফগান তালেবান আলেম নিহত যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য না করলে এ বছরই রাশিয়ার কাছে হারতে পারে ইউক্রেন : সিআইএ প্রধান রাশিয়ার সামরিক শিল্পক্ষেত্রে প্রধান যোগানদার চীন : ব্লিংকন ইরাকে সামরিক ঘাঁটিতে 'বিকট বিস্ফোরণ' শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার

সকল