১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুর্নীতিমুক্ত সমাজ কাম্য

-

দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় রাসূল সা:-এর পদপে ও পদ্ধতি ছিল অনন্য। অন্যায়, অবিচার, কলহ-বিবাদ, দুর্নীতি, অরাজকতা দূরীভূত করে তিনি শান্তিপূর্ণ একটি কল্যাণমূলক আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে সম হন। তিনি দল-মত-গোত্র নির্বিশেষে আরবের জাতি-ধর্ম-বর্ণ সবার মাঝে শান্তিচুক্তি এবং সন্ধি স্থাপনের মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসমুক্ত দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন করেন। তাঁর অনুপম চরিত্র-মাধুর্য ও সত্যনিষ্ঠার কথা বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল। কিশোর বয়সে তিনি ‘হিলফুল ফুজুল’ নামক শান্তিসঙ্ঘ গঠন করে সামাজিক অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। আর্তমানবতার সেবা, অত্যাচারীকে প্রতিরোধ, মজলুমের সহযোগিতা,
শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ছিল এ শান্তিসঙ্ঘের অঙ্গীকার বাণী। মানুষের কল্যাণে তাঁর গড়া স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানটি পৃথিবীর প্রথম সাংগঠনিক রীতিতে প্রতিষ্ঠিত আদর্শ সমাজ সংস্কারমূলক প্রতিষ্ঠান। যার মাধ্যমে তিনি সমাজ জীবনে শান্তিশৃঙ্খলা বিঘœকারী সব কার্যক্রম প্রতিরোধে পদপে নিয়ে মক্কা থেকে যাবতীয় অন্যায়-অত্যাচার, শোষণ ও দুর্নীতি উচ্ছেদ করে সুশীলসমাজ গঠনে সচেষ্ট হন।
মহানবী সা: মক্কা বিজয়ের পর মক্কার বাজারে তদারকি করার জন্য হজরত সাঈদ ইবনে সাঈদ ইবনুল আস রা:কে নিযুক্ত করেছেন। (আল-ইসতেআব ১/১৮৭)। শুধু তা-ই নয়, রাসূলুল্লাহ সা: স্বয়ং বাজারে গিয়ে খাদ্যে ধোঁকাবাজি কিংবা ভেজাল হচ্ছে কি না সে খবরদারি করতেন। একবার রাসূল সা: খাদ্যশস্যের একটি স্তূপের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি স্তূপের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিলেন, ফলে হাতের আঙুলগুলো ভিজে গেল। তখন স্তূপের মালিককে ডেকে বললেন, এ কী ব্যাপার? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এতে বৃষ্টির পানি লেগেছে। তিনি বললেন, ‘সেগুলো তুমি স্তূপের ওপরে রাখলে না কেন? তাহলে লোকেরা দেখে নিতে পারত। জেনে রাখো, যে ব্যক্তি ধোঁকাবাজি করে, আমার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই’ (মুসলিম-১০২)। নিরপেভাবে অধীনস্থের অধিকার আদায়ে কাজ করা এবং জনগণের জান-মালের হেফাজত করা শাসকের মৌলিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। এ প্রসঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে রাসূল সা: বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। আর (কেয়ামত দিবসে) তোমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। সুতরাং জনগণের শাসকও একজন দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর পুরুষ তার পরিবারের একজন দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর ঘরসংসার ও সন্তানের দায়িত্বশীল, তাকে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গোলাম তার মনিবের মাল-সম্পদের ওপর একজন দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই একেকজন দায়িত্বশীল। আর তোমাদের প্রত্যেককেই (কেয়ামত দিবসে) তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’ (বোখারি-২৫৫৪)।
দুর্নীতিবাজ শাসকের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি বাণী উচ্চারণ করে রাসূল সা: বলেন, ‘কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন, আর সে যদি কল্যাণ কামনার সাথে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, তাহলে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না’ (বোখারি -৭১৫০)।
অন্য হাদিসে রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি মুসলিম জনসাধারণের দায়িত্ব লাভ করল আর তার মৃত্যু হলো এ হালতে যে, সে ছিল খেয়ানতকারী, তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন’ (বোখারি : ৭১৫১)।
সমাজ থেকে অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতি দমন করে একটি আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠায় নবীজীর আজীবন প্রয়াস বিশ্বমানবতার জন্য মহান অনুপ্রেরণার উৎস।
লেখক : প্রবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement
শিবপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর নিহত চকরিয়ায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩ গাজা মানবিক নরকে পরিণত হয়েছে : জাতিসঙ্ঘ প্রধান রাফা হামলার পরিকল্পনা ইসরাইলের ত্যাগ করা উচিত : চীন গাজা যুদ্ধে নতুন যে কৌশল অবলম্বন করল ইসরাইল হাসপাতালের শৌচাগারে মিলল নবজাতক শিশু ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিসিডিপি গঠন করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী অননুমোদিত জমি ভরাট কার্যক্রমের সন্ধান পেলে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ ভূমিমন্ত্রীর ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা ইসরাইলকে পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাতের ব্যাপারে সতর্ক করলো আইআরজিসি

সকল