২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুটো তরমুজের দাম ২০ লাখ ৯৪ হাজার টাকা

দুটো তরমুজের দাম ২০ লাখ ৯৪ হাজার টাকা -

জাপানে একটা আঙুরের দাম ২৮ হাজার ৪৫৪ টাকাও হতে পারে কখনো কখনো। আর তরমুজের দাম কত বেশি হতে পারে তা তো এ সপ্তাহেই দেখা গেল। দুটো তরমুজ বিক্রি হয়ে গেল ২০ লাখ ৯৪ হাজার ৮০২ টাকায়!

জাপানের উত্তরাঞ্চলের ইউবারি শহর উন্নত মানের তরমুজের জন্য প্রসিদ্ধ। প্রতি মৌসুমে ইউবারি তরমুজের জন্য মুখিয়ে থাকেন জাপানিরা। মৌসুমের শুরুতেই তাই সাপ্পোরো পাইকারি বাজারে নিলামে বিক্রি হয় এই ধরনের তরমুজ। যত বড়, যত গোল তরমুজ, নিলামে দাম তত বেশি। এবার একেবারে গোল এক জোড়া ইউবারি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ২৭ লাখ ইয়েন, অর্থাৎ ২৪ হাজার ৭০২ ডলার বা ২০ হাজার ২৬০ ইউরোতে। বাংলাদেশী টাকায় দাম মাত্র ২০ লাখ ৯৪ হাজার ৮০২ টাকা!

এত দাম দিয়ে কে কিনলেন তরমুজ দুটো? সে আরেক গল্প। তরমুজগুলো কিনেছে স্থানীয় শিশু খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হোক্কাইডো প্রোডাক্টস লিমিটেড। তারা কিন্তু নিজেদের জন্য কেনেনি, কিনেছে ক্রেতাদের জন্যই। হোক্কাইডো প্রোডাক্ট লিমিটেড জানে, এমন তরমুজের একটা টুকরো পেলেও ক্রেতারা নিজেকে ধন্য মনে করবেন, তরমুজ খাওয়ার খুশির অভিজ্ঞতার কথা মনে রেখে ভবিষ্যতে বারবার কিনবেন হোক্কাইডোর পণ্য। তাই প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছে, মূল্যবান তরমুজ দুটো সমান ১০ ভাগে ভাগ করে লটারির আয়োজন করবে। যে ১০ সৌভাগ্যবান বা সৌভাগ্যবতীর নাম উঠবে লটারিতে, তারাই হবেন এক টুকরো অমৃতসম তরমুজের মালিক।

গত মৌসুমেও চড়াদামে দুটি তরমুজ কিনেছিল হোক্কাইডো প্রোডাক্ট লিমিটেড। তবে সেবার প্রতিটি তরমুজের দাম পড়েছিল ৯০০ ইউরোর মতো।

জাপানে উপহার বিনিময়ের রীতি রয়েছে। যেনতেন উপহার নয়, দামি উপহার। জাপানিদের বিশ্বাস, দামি উপহার দিয়ে সম্পর্কের গভীরতা বা গুরুত্ব বেশি বোঝানো যায়। উপহার দিয়ে বিনিময়ে পাওয়ার আশাও করেন উপহারদাতা। প্রাপকও প্রতিদান দেয়াকে অবশ্যপালানীয় কর্তব্য হিসেবেই দেখেন।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কেভিন শর্ট জানান, জাপানিদের মধ্যে উপহার আদান-প্রদানের রীতি চলে আসছে ১৬০০ থেকে ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত এডো আমল থেকে। ধীরে ধীরে এই রীতি সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে ওঠে। শুরুতে মৌসুমের নতুন মাছ দেয়া-নেয়ার চল ছিল। ধীরে ধীরে উপহারসামগ্রিতে বৈচিত্র্য বাড়তে থাকে। এক সময় ফলও উঠে আসে উপহারের তালিকায়। যেকোনো ফল মৌসুমে প্রথম বাজারে এলে একরকম হুড়োহুড়োই লেগে যায়। তখন ‘তাইয়ো নো তামাগো' (সূর্যের ডিম) নামের একটা আমের দাম ওঠে ৮০ ইউরো। খুব ভালো দুটো আম একবার এক ডিপার্টমেন্ট স্টোরে ২ হাজার ৪০০ ইউরোতেও বিক্রি হয়েছে।

জাপানের মানুষ ভালো আঙুর খুব দামি হলেই ‘আঙুর ফল টক' বলে নিজেকে প্রবোধ দিয়ে বসে থাকেন না। ২০১৬ সালে তাই ২৬টি আঙুরের একটা থোকা বিক্রি হয়েছিল ৮ হাজার ইউরোতে। তাহলে একটা আঙুরের দাম কত পড়েছিল? ২৭৫ ইউরো বা ২৮ হাজার ৪৫৪ টাকা!
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement