২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কঙ্গোতে নারীদের যৌন আক্রমণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মীদের

কঙ্গোতে নারীদের যৌন আক্রমণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মীদের - ফাইল ছবি

গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ইবোলা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার সময় নারী ও কিশোরীদের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে যে ৮৩ জন সাহায্য কর্মীর বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেশ কিছু কর্মী আছেন বলে এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এসব নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে। এর মধ্যে কঙ্গোর নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯টি ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় ৫০ জনের বেশি নারী যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনার পর এই তদন্ত চালানো হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইয়েসুস বলেছেন, এই অপরাধ ‘ক্ষমার অযোগ্য’।

একটি নিরপেক্ষ কমিশন তদন্ত চালানোর পর ৩৫ পৃষ্ঠার এই রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে।

অতর্কিতে যৌন হামলা
অভিযোগ আনা হয়, স্থানীয় নারীদের প্রচুর মদ খাওয়ানো হয়। তারপর হাসপাতালে তাদের ওপর ‘অতর্কিতে’ যৌন হামলা চালানো হয়, তাদের জোর করে যৌন মিলনে বাধ্য করা হয়। এতে দুজন নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, তাদের সাথে এখনো কাজ করছেন এমন চারজনের চুক্তি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। সংস্থাটি আরো কিছু কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ড. টেড্রোস ঘ্রেব্রেইয়েসুস বলেছেন, এই তদন্ত রিপোর্ট পড়ে গা শিউরে ওঠে। তিনি নির্যাতিতাদের উদ্দেশ্যে সরাসরি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, ডাব্লিউএইচও-তে কর্মরত ব্যক্তিরা আপনাদের সাথে যে আচরণ করেছেন তার জন্য আমি দুঃখিত। সংস্থা তাদের নিয়োগ করেছিল আপনাদের সেবার জন্য এবং আপনাদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য। অপরাধীরা যাতে পার না পেয়ে যায় সেটাকে অগ্রাধিকার দেয়া আমার দায়িত্ব। তাদের জবাবদিহিতা করতে হবে।

তিনি আরো বলেছেন, চূড়ান্ত দায়িত্ব তার ওপরই বর্তায়। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাঠামো এবং সংস্কৃতি ঢেলে সাজানোরও অঙ্গীকার করেছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক মাতশিদিসো মোয়েতিও ‘সংস্থার কর্মীদের হাতে নিগৃহীতদের’ প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেছেন, তদন্তে যা প্রকাশ পেয়েছে তাতে তিনি ‘স্তম্ভিত, বিচলিত এবং মর্মাহত’।

পরিচালনা কাঠামোয় গলদ?
কমিশন বলেছে, মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে তারা দেখেছে- ‘যৌন হয়রানি এবং নির্যাতনের ঘটনার ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে ত্রাণ সংস্থাগুলোর পরিচালনা কাঠামোয় প্রস্তুতির অভাব এবং তাদের কাঠামোগত ব্যর্থতাও সুস্পষ্ট।’

তারা বলেছেন, সংস্থাটি ইবোলা নির্মূল করার দিকে সম্পূর্ণ মনোযোগ দেয়ার কারণে এরকমটা হয়ে থাকতে পারে।

গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ইবোলায় প্রাণ হারায় ২০০০-এর ওপর মানুষ।

ইবোলার বিস্তার ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত বছর জুন মাসে ইবোলা মহামারীর অবসান ঘোষণা করে সংস্থাটি।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement