ভয়াবহ লোকসানের মুখে বিমান শিল্প

করোনা সংকটের কারণে বেসামরিক বিমান চলাচল ক্ষেত্রের আন্তর্জাতিক সংগঠন চলতি বছর মারাত্মক লোকসানের পূর্বাভাষ দিয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যাপক সরকারি সাহায্যের ডাক দিয়েছে আইএটিএ।

করোনা সংকটের জের ধরে গোটা বিশ্বে বেসামরিক বিমান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে৷ ফলে অনেক বিমান সংস্থা অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। সরকারি বিধিনিয়মের আওতায় অনেক দেশ সীমান্ত বন্ধ রেখেছে। বিমানবন্দরগুলির কার্যকলাপও অত্যন্ত সীমিত হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সরকারি সাহায্য ছাড়া অনেক সংস্থার পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হবে।

মঙ্গলবার গোটা শিল্পের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে বিমান চলাচল ক্ষেত্রের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইএটিএ। সংগঠনের পূর্বাভাষ অনুযায়ী ২০২০ সালে বিমান সংস্থাগুলির লোকসানের মাত্রা ৩১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছুঁতে পারে। উল্লেখ্য, গত ২৪ মার্চ এই সংগঠন ২৫ হাজার ২০০ কোটি ডলার লোকসানের আশঙ্কা করেছিল।

আইএটিএ-র এই পূর্বাভাষ সত্য হলে ২০১৯ সালের তুলনায় শুধু যাত্রীদের ভ্রমণের মাত্রাই চলতি বছর প্রায় ৫৫ শতাংশ কমে যাবে। সার্বিকভাবে বিমান চলাচল ৪৮ শতাংশ কমে যাব। করোনা সংকটের মেয়াদ তিন মাস স্থায়ী হবে, এমনটা ধরে নিয়েই প্রথমে লোকসানের হিসেব করা হয়েছিল। এখন আন্তর্জাতিক সংগঠনের আশঙ্কা, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বেশ কিছু বিধিনিয়ম দীর্ঘ সময় ধরে চালু থাকতে পারে। মার্চ মাসের শেষে আফ্রিকা ও ল্যাটিন অ্যামেরিকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলেও এখন এই দুই মহাদেশেও সংকটের আশঙ্কা করছে আইএটিএ।

বেসরকারি বিমানচলাচল ক্ষেত্রের এমন মারাত্মক সংকট এড়াতে বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার ডাক দিয়েছে আইএটিএ। প্রায় আড়াই কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের প্রশ্নও এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। শুধু এই শিল্পের স্বার্থেই নয়, বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ব্যবস্থা আবার চালু করার ক্ষেত্রে এবং সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ তরান্বিত করতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন আইএটিএ-র প্রধান আলেক্সঁদ্র দ্য জুনিয়াক।

আইএটিএ-র বড় বড় সদস্য সংস্থাগুলি প্রধান রুট বা যাত্রাপথের জন্য সরকারি ভর্তুকির লক্ষ্যে তদবির করতে চলেছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স গত সপ্তাহে দাবি করেছিল। তবে বাজেট এয়ারলাইন্সগুলি এর ফলে উপকৃত হবে না। ভর্তুকির কারণ হিসেবে আইএটিএ ১২ পাতার এক তালিকা প্রস্তুত করেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছিল। ২৯০টি বিমান সংস্থা এই সংগঠনের সদস্য হলেও ছোট সংস্থাগুলো ভর্তুকির এমন উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানাতে চাইছে না বলে রয়টার্স জানিয়েছে। ডয়চে ভেলে।