১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

৬ দাবিতে উত্তাল বুয়েট, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

৬ দাবিতে উত্তাল বুয়েট, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন - সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কাম্পাসে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আবারো শুরু করার প্রচেষ্টার প্রতিবাদে সকল প্রকার শিক্ষাকার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

২০১৯ সালে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রথম বর্ষের মেধাবী ও সংবেদনশীল শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে বুয়েট ক্যাম্পাসে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভয়ঙ্কর নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী জড়িয়ে পড়ার পর থেকে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের রাজনীতি বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা।

এরপর থেকে ছাত্রলীগ বিক্ষিপ্তভাবে ক্যাম্পাসে রাজনীতি বা বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিবারই শিক্ষার্থীদের রাজনীতি বিরোধী সংগঠনের প্রতিরোধের মুখে পড়েছে এবং সর্বশেষ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ডাক ধারাবাহিক সেই সূত্রেই পড়ে বলে মনে হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ রহিম রাব্বি এবং তাদের প্রবেশের ক্ষেত্রে 'গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। এরপর ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির কয়েকজন নেতাকর্মী ছাত্রলীগ সভাপতিকে ফুলের তোড়া উপহার দেন।

বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়ার লক্ষ্যে এই প্রবেশ চেষ্টা বলে মনে করছেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

নিরাপদ ক্যাম্পাস ও বুয়েটের কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

শত শত শিক্ষার্থী সকাল থেকে আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভে যোগ দেয় এবং সেখানে একটি সংবাদ সম্মেলন করে।

ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন যে- তাদের বিরোধীরা 'রাজনৈতিক উদ্দেশে বুয়েট ক্যাম্পাসকে ব্যবহার করার ষড়যন্ত্র করছে। এর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চের নির্ধারিত ক্লাস এবং পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণাও দেন তারা।

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি ও কর্মসূচিগুলো হলো-
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে ২৮ মার্চ মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ২১তম ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও হলের সিট বাতিল করতে হবে।

২. ইমতিয়াজের সাথে বুয়েটের বাকি যেসব শিক্ষার্থী জড়িত ছিলেন তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল ও টার্ম বহিষ্কার করতে হবে।

৩. রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বহিরাগত যারা ক্যাম্পাসে ঢুকেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না, তারা কেন ও কীভাবে প্রবেশের অনুমতি পেলেন- এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট জবাবদিহি দিতে হবে বুয়েট প্রশাসনকে।

৪. ১ ও ২ নম্বর দাবি আগামীকাল শনিবার সকাল ৯টার মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগ চান।

৫. ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের কারণে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এর প্রতিবাদ হিসেবে আগামীতাল শনিবার ও পরদিন রোববার টার্ম ফাইনালসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করা হবে।

৬. আন্দোলনরত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনোরকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে না, এই মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement