১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

অ্যাপেনডিসাইটিস

-

পেটের নিচে ডানদিকে বৃহদান্ত্রের সঙ্গে লাগানো আঙ্গুলের আকারের থলিকে অ্যাপেনডিক্স বলা হয়। লম্বায় ২-২০ সে.মি.। এটি দেহের গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ করে না। কোনো কারণে অ্যাপেনডিক্সে ইনফেকশন হলে এটি ফুলে যায় ও তাতে প্রদাহ হয়। একেই বলে অ্যাপেনডিসাইটিস।
আমাদের মধ্যে একটি ভ্রান্ত ধারণা আছে যে তলপেটের ডান পাশে নিচের অংশে ব্যথা করলেই অ্যাপেডিসাইটসের ব্যথা বলে চিন্তিত হয়ে পড়ি। অপারেশন করাতে হবে বলে আমাদের দুচিন্তার অন্ত থাকে না। এটা কিন্তু ঠিক নয়। অ্যাপেনডিসাইটিস ছাড়াও আরো অনেক কারণে এ ব্যথা হতে পারে। অযথা দুশ্চিন্তা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন এটা অ্যাপেনডিসাইটিস কি না। তবে এ রোগের কিছু কিছু লক্ষণ আছে। সেগুলো হলো সাধারণত প্রথমে ব্যথা নাভীর চারপাশে অনুভব হয় এবং কয়েক ঘণ্টা পর ব্যথাটা তল পেটের ডান পাশে চলে আসে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে পেটের অন্য অংশেও ব্যথা হতে পারে। এর সাথে বমি বমি ভাব ও এমনকি বমিও হতে পারে, খাবারে অরুচি দেখা যায়। পাতলা পায়খানা এবং জ্বর হতে পারে। কাশি দিলে পেটে তীব্র ব্যথা হয়। অথবা ধীরে ধীরে কুঁচকির একটু উপরে জোরে চাপ দিন যতক্ষণ না একটু ব্যথা লাগে। তার পর চট করে হাতটা সরিয়ে নিন। অ্যাপেনডিসাইটস হলে রোগী ব্যথা পাবে। তলপেটের বামদিকে সমানভাবে চাপ দিলে পেটের মধ্যে নাড়িভুঁড়ি বাঁদিক থেকে সরে ডান দিকে যায়। যদি এর ফলে ডানদিকের তলপেটে একটা প্রচণ্ড তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে সম্ভবত এপেনডিসাইটিস হয়েছে বলে বুঝতে হবে। আল্ট্রাসনোগ্রাম কিংবা রক্ত পরীক্ষা অ্যাপেনডিসাইটিস নির্ণয়ে সহায়ক হতে পারে। তবে এ রোগ নির্ণয়ে চিকিৎসকের অভিজ্ঞতাই গুরুত্বপূর্ণ। পেটের ডানদিকে নিচের অংশে অনেক কারণে ব্যথা হতে পারে, বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে। তাই এ রোগে অপারেশনের আগে চিকিৎসককে অবশ্যই অন্য কারণগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। তবে অ্যাপেনডিসাইটিস হলে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা হচ্ছে অপারেশন। কারো অ্যাপেনডিসাইটিস হলে যদি অপারেশন করা না হয় তাহলে প্রদাহিত অ্যাপেনডিক্স কখনো কখনো ফেটে গিয়ে ইনফেকশন সমস্ত পেটে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং জীবন বিপন্ন হতে পারে। তাই দেরি না করে অপারেশন করাই শ্রেয়।
লেখক : শিশু সার্জন, গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল


আরো সংবাদ



premium cement