২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হজের সময় ডায়াবেটিক ও অন্য রোগীদের করণীয়

-

হজ পালন করা সৌভাগ্যের বিষয়। আল্লাহ যাকে ডাক দেন সেই হজে যেতে পারে। কবুল হাজীরা শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যান। হজ পালনের জন্য শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা একান্ত প্রয়োজন। হজের প্রতিটি আনুষ্ঠানিকতা শ্রমসাধ্য ব্যাপার। পরিবর্তিত পরিস্থিতি জীবনযাত্রার পরিবর্তন, ধর্মীয় আবেগ, অতিরিক্ত পরিশ্রম, আবহাওয়ার তারতম্য সব মিলে হাজীরা, বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে পারেন। পানিশূন্যতা, সর্দিজ্বর, কাশি, শরীর ব্যথা, ডায়রিয়া ও সুগার কমবেশি হতে পারে। পায়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাধারণ রোগ সম্পর্কে (ডায়রিয়া, সর্দিজ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেটে গ্যাস, আমাশয় এবং বুকে ও প্রস্রাবে ইনফেকশন) এবং এর নিরাময়ের জন্য ওষুধ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নিয়ে এবং অনন্য রোগীরা তাদের ডাক্তারের সাথে রোগ সম্পর্কে আগে থেকে পরামর্শ করে প্রস্তুতি নিয়ে এই জটিলতা থেকে রেহাই পেতে পারেন।

রোগীদের হজপূর্ব প্রস্তুতি
- রমজানের আগে থেকে মুয়াল্লিম ও ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে হজের প্রস্তুতি নিন।
- প্রতিদিন আধা ঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস করুন।
- ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অন্যান্য রোগের চিকিৎসা নিন।
- বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সুগার ও ব্লাড প্রেসার কন্ট্রোলের ব্যাপারে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে হাতে-কলমে শিক্ষা নিন। হাইপোগ্লাইসেমিয়া ও সিক ডে ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে জেনে নিন।
- প্রয়োজনীয় ওষুধ, ইনসুলিন, সিরিঞ্জ, গ্লুকোমিটার, তুলা, ডিপস্টিক প্রভৃতি আলাদা প্লাস্টিকের খালি বাক্সে নিন।
- সবসময় প্রেসক্রিপশন সাথে রাখবেন, ফটোকপি অন্য ব্যাগে রাখবেন।
- গরম জায়গায় ইনসুলিন পানিতে রাখতে পারবেন অথবা সরবরাহকারীদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারবেন।

হজের সময় রোগীদের করণীয়
- সব সময় কিছু খাবার (যেমন- গ্লুকোজ, চিনি, বিস্কুট, খেজুর) সাথে রাখবেন।
- হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে কিভাবে চিকিৎসা করতে হবে তা সাথীদেরকে শেখাবেন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি (জমজমের) পান করবেন।
- যারা ইনসুলিন (দুই-তিন বার) নিয়ে থাকেন তারা ইহরামের আগেই গ্লুকোমিটার দিয়ে গ্লুকোজ ও ডিপস্টিক দিয়ে প্রস্রাবে কিটোন দেখে নিতে পারেন।
- ইহরামের দিনগুলোতে প্রস্রাবের সুগার দেখে ইনসুলিন ও ডায়াবেটিসের ওষুধ ঠিক করতে পারবেন।
- তাওয়াফের আগে, সায়ির আগে, কঙ্কর নিক্ষেপের আগে, কোরবানি ও অপরাপর অতিরিক্ত পরিশ্রমের জায়গাতে আগে কিছু খেয়ে নেয়া ভালো।
- ওই সব পরিশ্রমের দিনগুলোতে ইনসুলিন ২৫ শতাংশ কম নেয়া এবং সালফোনাইল ইউরিয়া গ্রুপের ওষুধ ২৫ শতাংশ কম খাওয়া ভালো।
- অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটির সময় পায়ের যত্ন নেবেন।
- জমজমের নরমাল পানি বেশি বেশি করে পান করবেন।
- যেকোনো জরুরি অবস্থায় হজ মেডিক্যাল টিমের শরণাপন্ন হবেন।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, এন্ডোক্রাইনোলজি (ডায়াবেটিস ও হরমোন) বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement