২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

সোনামণির রোজা পালন

সোনামণির রোজা পালন -

রমজান মাসে ইবাদতের আবহ বিরাজ করে। এ মাস গুনাহ মাফের মাস। দোয়া কবুলের মাস। ছোট সোনামণিরা কোনো গুনাহ না করলেও আল্লøাহ সন্তুষ্টি লাভের আশায় রোজা পালন করে থাকে। রোজা পালন কিন্তু শিশুর জন্য উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর রোজা পালনে ধৈর্য ও মানসিক শক্তি বাড়ে। শিশুর রক্ত পরিশুদ্ধ হয়। শরীরের খারাপ পদার্থগুলো কিডনি, অন্ত্র দিয়ে বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হয়। এ বছরও আমাদের সোনামণিরা রোজা পালন করছে। রমজানে তাদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে মা-বাবাকেই।
ছোট সোনামণিদের রোজা পালনে তেমন বাধা নেই। এটি একটি মহান ইবাদত। ছোটবেলা থেকে এর চর্চা করলে বড় হয়ে তাদের ভালো কাজের উৎসাহ জোগাবে। এবার একটু বেশি সময় ধরে রোজা পালন করতে হচ্ছে বলে হয়তো বা তাদের একটু বেশি কষ্ট হবে। একটু দুর্বল হতে পারে। রোজা পালনে জটিল কোনো সমস্যা দেখা দেয় না।
এবার রোজায় গরম বেশ। গরমের কারণে ঘাম বেশি হয়। বড়দের মতো ছোটরাও ঘামে। কিন্তু বড়দের দেহের পরিমাপের তুলনায় ঘাম কম হয়। শিশুদের একটু ঘামেই তাদের সারফেস এরিয়ায় তুলনায় বেশি হয়। তাই শিশুরা পানিস্বল্পতায় ভোগে সহজেই। রোজায় এ ঘাম থেকেই শিশুরা পানিস্বল্পতায় ভুগতে পারে। এটি প্রতিরোধ করা যায় সহজেই। ইফতারের পর থেকে বেশি পরিমাণে পানি, শরবত, স্যালাইন পান করতে হবে। ইফতারের সময় শিশুরা যেন খুব ঠাণ্ডা পানি পান না করে সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। বেশি ঠাণ্ডা পানি পান করলে গলা ব্যথা, টনসিলাইটিস, ঠাণ্ডা-জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে।
শিশুদের খাবারে সব সময় সতর্ক থাকতে হয়। রোজার সময় আরো বেশি সতর্ক হতে হয়। রোজায় বাইরের খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া হয়। বাইরের খাবারে কেমিক্যাল থাকে। খাবারের এ কেমিক্যাল কিন্তু শিশুর কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে। বাইরের খাবার খেলে সোনামণিরা ডায়রিয়া, টাইফয়েড, আমাশয়, বদহজমসহ বিভিন্ন ধরনের পেটের পীড়ায় ভুগতে পারে। তেলজাতীয় খাবারও বেশি খেলে শিশুদের পেটের সমস্যা হতে পারে। ভাজাপোড়া খাবার বেশি খেলে পেটব্যথা, বদহজম হতে পারে। তাই যতটা সম্ভব তেল ও ভাজা-পোড়া খাবার শিশুদের কম খেতে দিন। রোজাদার শিশুদের বাসায় বানানো খাবার খেতে দিন। ইফতারিতে শরবত, স্যালাইন, ফিরনি, খেজুর, কলা, শসা ও ফলমূল, দই-চিড়া খেতে দিন। ছোলা-মুড়ি কম খাওয়াই ভালো।
গরমে খাবার খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়, সহজেই ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। তাই বাসি খাবার সোনামণিদের দেবেন না। এ বাসি খাবার থেকে হতে পারে ডায়রিয়া, পেটের পীড়া। ফ্রিজে খাবার রাখলে তা গরম করে খেতে দিন।
শিশুদের দুর্বলতা দূর করতে প্রচুর পানি পানের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার, শাকসবজি, ফলমূল বেশি করে খেতে হবে। এক সাথে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়া ভালো। দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার বেশি করে দিন। অনেক শিশু চা-কফি বেশি পান করে। রোজা রেখে চা-কফি, কোমল পানীয় পান করা ঠিক নয়। রোজা রেখে রোদে বেশিক্ষণ ঘোরাঘুরি বা খেলাধুলা করা যাবে না। অনেক শিশু সাহরির সময় না ওঠতে পারায় না খেয়েই রোজা রাখে। এতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাহরি অবশ্যই খেতে হবে। সাহরিতে আঁশ জাতীয় খাবার যেমন- শাকসবজি, ফলমূল বেশি করে খেতে হবে। এ ধরনের খাবার পেটে অনেকক্ষণ থাকে।
রোজা রেখে যদি শারীরিক সমস্যা বেশি দেখা দেয়, বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে তবে রোজা নাও রাখতে পারে শিশুরা। কোনো ধরনের সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement