১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রমজানে সুস্থ থাকতে

-

রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের সওগাত নিয়ে এসেছে পবিত্র মাহে রমজান। এই সময়ে নিয়মিত জীবনযাপনে আসে পরিবর্তন। সিয়াম সাধনার এই মাসে সুস্থ থাকতে ফলিত পুষ্টির আলোকে সাহরি, ইফতার ও এর মধ্যবর্তী সময়ে অনুসরণীয় বিষয়গুলো জনসচেতনতার জন্য তুলে ধরা হলো-

সাহরি
করণীয় :
-সাহরিতে সামর্থ্য অনুযায়ী আঁশজাতীয় খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন (লাল চাল, লাল আটা, শাকসবজি, বিচি জাতীয় শস্য- সিমের বীচি, মটরশুঁটি প্রভৃতি। আঁশজাতীয় খাবার ধীরে হজম হয়, ফলে ক্ষুধা অনুভব কম হয় এবং পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়।
-সাহরিতে অতিরিক্ত খাওয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। ভাতের পরিমাণ কমিয়ে শাকসবজি এবং সামর্থ্য অনুযায়ী মাছ-গোশত ও অন্যান্য তরকারি গ্রহণ করা উচিত।
-প্রতিদিনের আমিষের চাহিদা পূরণে ও দেহের ক্ষয় পূরণে সামর্থ্য অনুযায়ী ছোট-বড় মাছ, মুরগির গোশত, ডিম, ডাল, দুধ ও দুধজাতীয় খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।
-রোজায় পানিশূন্যতা রোধে ও সহজে হজম হয় এমন শাকসবজি যেমন- লাউ, ঝিঙে, পটোল, চিচিঙ্গা, চালকুমড়া প্রভৃতিকে অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে। সাহরিতে খাবারের পর সামর্থ্য অনুযায়ী টক বা মিষ্টিজাতীয় ফল রাখা প্রয়োজন।
বর্জনীয় :
-সাহরিতে চা ও কফি পান না করাই ভালো। এগুলোতে থাকা ক্যাফেইন তৃষ্ণার সৃষ্টি করে, এসিডিটি উৎপন্ন করে ও খাদ্যের পুষ্টি পরিশোষণে বাধা দেয়।
-সাহরিতে অতিরিক্ত তেল, মসলা ও চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা বাঞ্ছনীয়।
-তেহারি, খিচুড়ি, বিরিয়ানি প্রভৃতি সাহরিতে না খাওয়াই ভালো। এসব খাবার হজম করতে দেহে প্রচুর পানি পরিশোষিত হয় যা রোজাদারকে তৃষ্ণার্ত করবে।

ইফতার
করণীয় :
-ইফতারে পানীয় হিসেবে সামর্থ্য অনুযায়ী ঘরে তৈরি তাজা ফলের শরবত, ডাবের পানি, তোকমা, ইসবগুল প্রভৃতি গ্রহণ করা যেতে পারে, যা দেহের পানি ও লবণের (ইলেকট্র্রোলাইট) ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করবে ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে কাজ করবে।
-এ ছাড়াও যেকোনো মিষ্টি ফল যেমন- খেজুর, তরমুজ, কলা প্রভৃতি গ্রহণ করা যেতে পারে, যা দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ করতে সহায়তা করবে।
-পুষ্টিসমৃদ্ধ ও সহজে হজম হয় এমন খাবার ইফতারে রাখা যেতে পারে (সিদ্ধ ছোলা, দই-চিড়া, সবজি খিচুড়ি বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও শসা টমেটোর মিশ্রিত সালাদ প্রভৃতি)।
-ইফতারে আমিষের চাহিদা পূরণের জন্য ডিম বা ডিমের তৈরি খাবার গ্রহণ করা যেতে পারে।
-ইফতারে খাবার খেতে হবে ধীরে ও ভালোভাবে চিবিয়ে যা খাবার সহজে হজমে সহায়ক হবে।
বর্জনীয় :
-অধিক মশলা এবং কৃত্রিম রঙযুক্ত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চললে ইফতার পরবর্তী বদহজম, অস্বস্তি ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
-ইফতারে অতিরিক্ত ভাজা, পোড়া বা গ্রিল করা খাবার যেমন- গোশতের ফ্রাই, গ্রিল বা শিক কাবাব ইত্যাদি পরিহার করা প্রয়োজন। এসব খাবারে তৈরি হওয়া ট্রান্সফ্যাট হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ।
-অতিরিক্ত লবণ ও চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় যেমন- চিপস, জিলাপি, কার্বোনেটেড সফট ড্রিংকস, সিঙ্গারা, সমুচা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, কেক-পেস্টি, পিজা-বার্গারসহ যাবতীয় জাংক ফুড এড়িয়ে চলা ভালো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার গ্রহণের জন্য ২০৩০ সাল নাগাদ ৭০ লাখ মানুষ হৃদরোগ বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করবে।

ইফতার ও সাহরি মধ্যবর্তী সময়ে
করণীয় : দেহের পানির চাহিদা পূরণে ইফতার এবং সাহরির মাঝের সময়ে আড়াই থেকে তিন লিটার বা ৬ থেকে ১৪ গ্লাস নিরাপদ পানি পান করতে হবে। রোজায় পর্যাপ্ত পানি পান করলে মাথা ব্যথা, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়েও সহায়ক হবে।
বর্জনীয় : রাতের খাবার গ্রহণের পরে সাথে সাথে ঘুমাতে যাওয়া পরিহার করতে হবে। সাহরি পর্যন্ত রাত জেগে থাকা পরিহার করুন, পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিশ্চিত করুন।
তথ্যসূত্র : বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) কৃষি মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার


আরো সংবাদ



premium cement
নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবে আইসিসি! ঢাকায় কাতারের আমিরের নামে সড়ক ও পার্ক তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে পুনরায় ফ্লাইট চালু হামলায় কোনো ক্ষতি হয়নি : ইরানি কমান্ডার ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ‘কেন্দ্র’ ইসফাহান : সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা মিয়ানমারের বিজিপির আরো ১৩ সদস্য বাংলাদেশে রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংকের সেই ম্যানেজারকে চট্টগ্রামে বদলি দুবাইয়ে বন্যা অব্য়াহত, বিমানবন্দর আংশিক খোলা ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’

সকল