২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দুর্ঘটনায় বিচ্ছিন্ন অঙ্গ সংরক্ষণ

দুর্ঘটনায় বিচ্ছিন্ন অঙ্গ সংরক্ষণ -

কোরবানির ঈদে অনেক অপেশাদার সাধারণ মানুষ পশুর গোশত প্রস্তুতে নিযুক্ত হন। কাটাকাটির অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হন। বিশেষ করে ভারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে সজোরে হাড় কাটার সময় কারো পুরো আঙুল হয়তো বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কোরবানির ঈদে এ ঘটনা বিরল নয়। প্রতি বছরই বড় ঈদে দেশের প্লাস্টিক সার্জনদের কাছে এমন অনেক কেস আসে। কিন্তু সঠিক সময়ে পৌঁছাতে না পারায় এবং সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে না আনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত ফলাফল দেয়া সম্ভব হয় না।
শুধু কোরবানির কাটাকাটি ছাড়া ও মারামারি বা রোড ট্রাফিক এক্সিডেন্টে ও কারো অঙ্গ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। বিচ্ছিন্ন অঙ্গ কেউ পুনঃসংযোজন করতে চাইলে আসতে হবে মাইক্রোসার্জারিতে পারদর্শী একজন প্লাস্টিক সার্জনের কাছে। আমরা সাধারণ মানুষ বিচ্ছিন্ন অঙ্গের সংরক্ষণ পদ্ধতি জানি না এবং কত সময়ের মধ্যে আসতে হবে তাও জানি না।
বিচ্ছিন অঙ্গটি (আঙুল, হাত বা পা) প্রথমেই নরমাল স্যালাইন দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নরমাল স্যালাইন পাওয়া না গেলে পরিষ্কার পানি দিয়ে খুব দ্রুত পরিষ্কার করে নিলেও চলবে। তারপর একটি পরিষ্কার কাপড় বা টিস্যু দিয়ে শুকিয়ে ফেলতে হবে। শুকনো অঙ্গটি একটি পরিষ্কার পলিথিনে ভরে পলিথিনের মুখ ভালোভাবে আটকে নিতে হবে। অতঃপর একটি আইস বক্সে বরফ দিয়ে সেখানে পলিথিনে ভরা অঙ্গটি সংরক্ষণ করতে হবে। যদি আইস বক্স না পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে অন্য একটি পলিথিনে বরফ নিয়ে তার ভিতর পলিথিনে মোড়ানো অঙ্গটি সংরক্ষণ করা যাবে।
বরফ দেয়ার উদ্দেশ্য হলো দীর্ঘ সময় যেন সতেজ থাকে অঙ্গটি। তাই পরিবহনের সময় প্রয়োজনে মাঝপথে বরফ সংযোজন করা যাবে।
অঙ্গহানির ৬ ঘণ্টার মধ্যে নির্দিষ্ট হাসপাতালে পৌঁছাতে হবে। এই ক্ষেত্রে সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই সবচেয়ে ভালো হয় যদি রওনা দেয়ার আগেই মাইক্রোসার্জারিতে অভিজ্ঞ একজন প্লাস্টিক সার্জনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে রওনা দেয়া যায়, যাতে সেই সময়ের মধ্যে সার্জন তার টিম ও অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত করে ফেলতে পারে।
লেখক : বার্ন, প্লাস্টিক সার্জন

 


আরো সংবাদ



premium cement