২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

পরিমিত খাবার ও নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমে রোগব্যাধি কমে : অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান

বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান - ছবি : সংগৃহীত

পরিমিত খাবার ও নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করলে কমে যাবে রোগব্যাধি। প্রযুক্তির কারণে মানুষ শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডায়াবেটিস, ওজন বেড়ে যাওয়াসহ নানা রোগ-ব্যাধিতে।

গত বুধবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সায়েন্টিফিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান।

তিনি বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের তিনটি দিক- মেডিক্যাল ব্যবস্থাপত্র, ফার্মাসিস্ট ও নার্স। তার সাথে এখন যুক্ত হয়েছে কমপ্লিমেন্টারি বা সাপ্লিমেন্টারি মেডিসিন। তার পাশাপাশি পুষ্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এখন। আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) পুষ্টির ওপর এখন বেশ জোর দিচ্ছে।

ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ড্রাস্টি লিমিটেডের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান আরো বলেন, সব রোগীর জন্য ন্যাচারাল মেডিসিন নয়। যাদের বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন তাদেরকে সেই চিকিৎসাই করাতে হবে। যারা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সে অনুযায়ীই করতে চিকিৎসা করতে হবে। আবার কিছু রোগ ন্যাচারাল মেডিসিন প্রয়োগ করেই সুস্থ করে তোলা যায়। কোন পদ্ধতিটা কোন রোগীর ওপর কাজ করবে তা বুঝেই ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, সবাই মিলে একটা সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে রোগীরা উপকৃত হবে।

‘রিজেনারেটিভ হেলথ উইথ নিউট্রিশন অ্যান্ড অলটারনেটিভ মেডিসিন’ শীর্ষক সেমিনারটি ইবনে সিনার ন্যাচারাল মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. আবু খুলদুন আল মাহমুদ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিন চিকিৎসা বিজ্ঞানী আমেরিকান সেন্টার অব রিজেনারেটিভ হেলথের কনসালটেন্ট ড. এম মজিবুল হক। তিনি বলেন, প্রত্যেকের শরীরে ১০০টি বডি সেল আছে। এই বডি সেলগুলো প্রতি মুহূর্তে রিজেনারেটেড হয়। কোনো অঙ্গ অসুস্থ হলে যদি আমরা রি-জেনারেটেড খাবার দেই তাহলে সে অঙ্গটি সুস্থ হবে। কিন্তু ভালো খাবার না দিলে সুস্থ অঙ্গও অসুস্থ হবে। আমাদের শরীর একটা ভাঙা-গড়ার মধ্যে যায়।

ড. মজিবুল হক বলেন, আজ ৭০ ভাগ মানুষ ক্রনিক বা দুরারোগ্য ব্যধিতে ভুগছে। পৃথিবীর ৭৫ ভাগ মানুষকে কোনো না কোনো মেডিসিন নিতে হয়। পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকে। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মাঝে ৯ কোটি মারা যাবে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে। আমাদের কার্ডিলজিস্টের কি অভাব রয়েছে? গ্যাপটা কোথায়? সেটা হলো পুষ্টি।

তিনি বলেন, আমেরিকার বড় বড় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় দেখিয়েছে, ফ্যাট বা চর্বির সাথে হার্ট ডিজিজের কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে আমরা কেন কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য বলছি। এখন সময় এসেছে এসব কিছু প্রমাণের। সুস্থ থাকার জন্য আমাদের মেডিক্যাল চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা আছে। তবে এর পাশাপাশি পরীক্ষিত পুষ্টির সমন্বয় রিজেনারেটিভ মেডিক্যাল থেরাপি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ন্যাচারাল মেডিসিন এবং সর্বোপরি লাইফস্টাইল মডিফিকেশন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন দেশের প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো, ইবনে সিনা স্পেশালাইজড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান অ্যান্ড নিউট্রিশনিস্ট কনসালটেন্ট সুমাইয়া শাহানাজ, পুষ্টিবিদ ইশরাত জাহান, পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা, ইবনে সিনার স্ট্রাটেজিক মার্কেটিং বিভাগের এক্সিকিউটিভ আবু সালমান রানা প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement