১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইনগুইনাল হারনিয়ার চিকিৎসায়...

-

পেটের মধ্যস্থ খাদ্যনালী বা অন্য যেকোনো অঙ্গ পেটের দুর্বল স্থান দিয়ে বাইরে আসাকে হারনিয়া বলে। হারনিয়া সচরাচর দেখা যায় এমন একটি রোগ। হারনিয়ার মধ্যে ইনগুইনাল হারনিয়া আরো কমন। ইনগুইনাল হারনিয়া সাধারণত কুচকির মাঝামাঝি ১ বা ২ ইঞ্চি উপরে দেখা যায়। যেকোনো বয়সেই এ রোগ হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হন এ হারনিয়ায়। পেটের মাংসপেশির দুর্বলতাই হারনিয়ার একমাত্র কারণ। এই দুর্বলতা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন- জন্মগত, অপারেশন, আঘাত এবং ইনফেকশন ইত্যাদি।

ইনগুইনাল হারনিয়ার উপসর্গ
প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীরা বলবে হাঁটাচলা করলে, ভারী বস্তু উঠালে কিংবা হাঁচি-কাশি দিলে আমার কুচকির উপরটা গোলাকার বলের মতো ফুলে ওঠে এবং শুয়ে থাকলে এটা চলে যায়। মাঝে মধ্যে শক্ত হয়ে যায় এবং ব্যথা হয়। কিছু দিন এভাবে চলার পর গোলাকার ফোলাটি ধীরে ধীরে অণ্ডকোষ থলিতে নেমে আসে এবং শুয়ে থাকলে আপনা আপনি পেটের ভেতর চলে যায়। এভাবে ফোলাটি বড় হতে থাকে এবং তখন চাপ দিয়ে ভেতরে ঢোকাতে হয়। ধীরে ধীরে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে যে এটি আর চাপ দিলেও পেটের ভেতরে ঢুকছে না। এই পর্যায়ে প্রচণ্ড ব্যথা, বমি এবং পেট ফাঁপা ও পায়খানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থাকে ইনটেন্সিটিনাল বা খাদ্যনালীর অবস্ট্রাকশন বলা হয়। এই অবস্থায় জরুরিভাবে অপারেশন না করলে জীবনমরণ সমস্যা হতে পারে।
চিকিৎসা : অপারেশনই হচ্ছে এই রোগের একমাত্র চিকিৎসা। ওষুধে এ রোগ সারাতে পারে না। ছোট এবং প্রাথমিক পর্যায়ে অপারেশন করানোই উত্তম। কারণ এতে খরচ কম। রোগীকে অপারেশনের পরে হাসপাতালে বেশি দিন ভর্তি থাকার প্রয়োজন পড়ে না। এ ছাড়া হারনিয়ায় ম্যাশ লাগানোর প্রয়োজন পড়ে না। ফলে খরচ কমে যায়। লজ্জায় অনেকে চিকিৎসককে দেখান না। ফলে রোগীরা চিকিৎসকের কাছে আসেন এ রোগের জটিলতা নিয়ে। আবার অনেক রোগীই অপারেশন করাতে ভয় পান। অপারেশন না করিয়ে তারা কবিরাজ-হেকিমদের কাছে চিকিৎসা নিতে থাকেন। এতে তারা নিজেদের মারাত্মক সমস্যা করতে থাকেন, ধীরে ধীরে হারনিয়া আকার বড় হতে থাকে। এ হারনিয়া অবস্ট্রাকটেড হয়ে রোগীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। এ ছাড়া বড় হারনিয়ার ক্ষেত্রে ম্যাশ লাগানোর প্রয়োজন পড়ে, এতে চিকিৎসা করা কঠিন ও ব্যয়সাধ্য হয়। হারনিয়া অপারেশন নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। এ অপারেশনটি বেশ সহজ। আমাদের দেশের সব সার্জনই কিন্তু এ অপারেশনে দক্ষ। তাই হারনিয়া দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত সার্জনের শরণাপন্ন হন। এ ব্যাপারে চিকিৎসককে লজ্জা করে রোগটি জটিল করবেন না।
লেখক : সার্জারি বিশেষজ্ঞ, গাইবান্ধা রাবেয়া ক্লিনিক, গাইবান্ধা

 


আরো সংবাদ



premium cement