২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনাভাইরাস : মৃত্যু ও শনাক্তে আগস্ট কি দেশের জন্য ভয়াবহ মাস?

- ছবি : সংগৃহীত

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের মার্চের আট তারিখে করোনাভাইরাস আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হবার পর আগস্ট মাসেই সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত মানুষ শনাক্ত হয়েছেন। একই সাথে সংক্রমিত হবার পর এ মাসেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ মারাও গেছেন।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ৬১৮ জন। মারা গেছেন ২৬ হাজার ১৯৫ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গত আঠারো মাসের মধ্যে রোগী শনাক্ত, মৃত্যু ও শনাক্তের হার আগস্ট মাসেই সবচেয়ে বেশি ছিল।

সর্বাধিক মৃত্যু
করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মারা গেছেন মোট ২৬ হাজার ১৯৫ জন। এর মধ্যে কেবল আগস্ট মাসেই মারা গেছেন পাঁচ হাজার ৩৯৬ জন। অর্থাৎ বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত যত মানুষ মারা গেছেন, তার প্রায় ২১ শতাংশের মতো মানুষ কেবল আগস্ট মাসেই মারা গেছেন।

মারা যাওয়া মানুষের বড় অংশটি হাসপাতালে মারা গেছেন এবং তাদের প্রায় ৬৫ শতাংশ পুরুষ।

এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৬ হাজার ৯৮৭ জন ছিলেন পুরুষ আর নারী ছিলেন ৯ হাজার ২০৮ জন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ বছরের আগস্ট মাসের শুরু দিনে ২৪ ঘণ্টায় ২৩১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এরপর পাঁচই আগস্ট এবং ১০ আগস্টে একদিনে সবোর্চ্চ ২৬৪ জন করে মারা যান।

যদিও দিনে দুই শ’ এর বেশি মৃত্যু শুরু হয়েছিল জুলাই মাসের আগেই।

রোগী শনাক্ত
বাংলাদেশে আগস্ট মাসের শেষ দিন পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত মোট রোগী শনাক্ত হবার সংখ্যা ১৫ লাখ ৬১৮ জন। আগস্ট মাসের ৩১ দিনে মোট দুই লাখ ৫১ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আগস্ট মাসের প্রথম আট দিনেই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল এক লাখ চার হাজারের বেশি।

এ মাসের শেষ ১৮ দিনে এসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়েছে।

আগস্ট মাসের প্রথম দিন প্রতি ১০০টি করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত রোগীর হার ছিল ৩০ শতাংশ। তবে মাসের শেষ দিনে এ হার কমে প্রায় ১২ শতাংশ নেমেছে।

যদিও দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর হার সর্বোচ্চ ছিল জুলাই মাসে।

আগস্ট কি সবচেয়ে ভয়াবহ মাস?
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করে যা দেখা যাচ্ছে তাতে প্রশ্ন জাগে তাহলে কি দেশের জন্য আগস্ট মাসই সবচেয়ে ভয়াবহ মাস ছিল?

এ প্রশ্নের জবাবে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা: এএসএম আলমগীর বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের ইমপ্যাক্ট অনুযায়ী মানে রোগী শনাক্ত এবং মৃত্যুর হার বিবেচনা করলে বলা যায় এ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হয়ত আগস্ট মাসই সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল।’

দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের ফলে রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি। তবে তিনি বলেছেন, ‘আশার কথা হচ্ছে এখন সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। সেটা ধরে রাখতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে যেন এ হার আবার বেড়ে না যায়।’

দেশে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে জুলাই মাসের এক তারিখ থেকে কয়েক দফায় ‘কঠোর লকডাউন’ দেয়া হয়। যদিও মাঝে ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য কয়েক দিন লকডাউন শিথিল করা হয়েছিল।

এরপর আবারো আরেক দফা লকডাউন দিয়ে শেষ পর্যন্ত ১১ আগস্ট থেকে লকডাউন শিথিল করে সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক থেকে শুরু করে গণপরিবহন, শপিং মল এবং দোকানপাট খুলে দিয়েছে সরকার।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement