২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাইনোকোমাসটিয়া

-

কোনো কারণে পুরুষের স্তন বৃদ্ধি হলে এটাকে গাইনোকোমাসটিয়া (স্তন বৃদ্ধি) বলে। একটি ছেলে যখন যৌবনে পদার্পণ করে তখন তার টেসটোসটেরন নামে পুরুষ হরমোন জাগ্রত হয়ে পুরুষের অবকাঠামো পুরুষাঙ্গ, অণ্ডকোষ, দাড়ি, গোঁফ, পুরুষাঙ্গের চারদিকে লোম বড় হতে শুরু করে এবং তৎসঙ্গে স্তনও বৃদ্ধি হয়, তবে স্তন যে পর্যন্ত বাড়ে বা যত বড় হয় তার ৭৫ ভাগই ১-২ বছরের মধ্যেই আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। প্রায় ৭০ শতাংশ যুবক বালকদের উঠতি বয়সে এই স্তন বৃদ্ধি হতে পারে, ৪০ শতাংশ যুবকের স্তনে কিছু কিছু ব্যথা হতে পারে এবং ৪ শতাংশ যুবকের স্তন থেকে কিছু তরল পদার্থ নিঃসরণ হতে পারে। একজন পুরুষের তিন ধাপে স্তন বাড়তে পারেÑ একটি নিউবরন অর্থাৎ ছোট বয়সে, দ্বিতীয় যৌবনকালে এবং তৃতীয়ত বৃদ্ধকালে। মূলত পুরুষ হরমোন এবং মেয়ে হরমোন এই দুইয়ের অসামাঞ্জস্য অর্থাৎ পুরুষ হরমোন কমিয়ে মেয়েলি হরমোন বেশি হলে এই গাইনোকোমাসটিয়া হতে পারে।
গাইনোকোমাসটিয়ায় (স্তন বৃদ্ধি) অনেক সময় রোগী মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন। অনেকে এই রোগকে গোপন করে যান। এর ফলে রোগীর অস্বস্তি আরো বাড়তে পারে। এই গাইনোকোমাসটিয়ার অনেক জানা-অজানা কারণ রয়েছে, তার মধ্যে ফিজিওলজিক্যাল বাচ্চাদের পির্ডবার্টি গাইনোকোমাসটিয়া। কিছু ওষুধ আছে এই গাইনোকোমাসটিয়ায় কাজ করতে পারে। যেমন ডাই ইউরেটিস-ইসপাইরোনোলেকটন, ডিগোকসিন, সিমিটিডিন, এন্টিএন্ডোজেন, সিপ্রোটেরন এসিটেড, এনাবলিক স্টেরয়েড, ডিপ্রেশন এর কিছু ওষুধ যেমন এমিট্রিপটাইলিন ইত্যাদি। কিছু জেনেটিক কারণ যেমন ক্রাইন ফিল্টার সিন্ড্রম। কিছু রোগে মেয়েলি হরমোন বেড়ে গিয়ে এ ধরনের পরিস্থিতি হতে পারে। তার মধ্যে লিভার সিরোসিস, অণ্ডকোষের টিউমার অকার্যকর, কিডনির রোগ ইত্যাদি। ২৫ শতাংশের ক্ষেত্রে এর কারণ জানা যায়নি। এই গাইনোকোমাসটিয়া বা স্তন বৃদ্ধি চিকিৎসা হিসেবে প্রধানত দুই ক্যাটাগরিতে পড়ে। একটি হলো মেডিক্যাল চিকিৎসা মাধ্যমে অন্যটি সার্জিক্যাল পদ্ধতির মাধ্যম।
যেহেতু কারণ অনুযায়ী এর চিকিৎসা রয়েছে। তাই এর জন্য যথাশিগগির চিকিৎসার পরামর্শ একজন হরমোন বিশেষজ্ঞ বা এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের কাছে যাওয়া দরকার।
লেখক : অধ্যাপক, ডায়াবেটিস অ্যান্ড
অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ
আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা

 


আরো সংবাদ



premium cement