২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মৃদু শ্বাসকষ্টে বাড়িতে অক্সিজেন নেয়ার পক্ষে মত বিশেষজ্ঞদের

মৃদু শ্বাসকষ্টে বাড়িতে অক্সিজেন নেয়ার পক্ষে মত বিশেষজ্ঞদের - প্রতীকী

ঠিক শ্বাসকষ্ট হয়তো নয়। কিন্তু শ্বাসপ্রশ্বাসে একটা অস্বস্তি কিংবা সামান্য হাঁফ ধরে যাওয়ার সমস্যা মৃদু উপসর্গযুক্ত অনেক করোনা রোগীরই থাকে। কারও বা হয়তো পালস অক্সিমিটারে দেখা যাচ্ছে, স্বাভাবিকের চেয়ে রক্তে সামান্য কমে গিয়েছে অক্সিজেনের মাত্রা। অনেকের আবার প্রবল শ্বাসকষ্ট না হলেও সমস্যাটা হয়তো একটু বাড়াবাড়ি হয়েছ, অথচ তিনি সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি হতে পারছেন না হাসপাতালে।

এমন রোগীদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও সবচেয়ে জরুরী ওষুধ হল অক্সিজেন। কিন্তু তার জন্য কি সব সময়ে হাসপাতালের উপরই নির্ভরশীল হতে হবে? যদি উপায় না-থাকে, তখন? এই ধরনের রোগীদেরকে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বাড়িতে রেখেই অক্সিজেন দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

এমনকী তারা অনেকে মনে করছেন, খুব বেশি অসুস্থ না-হলে বরং হাসপাতাল এড়িয়ে বাড়িতেই চলা উচিত অক্সিজেন থেরাপি। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে। সময়ের দাবি মেনে সরকারি-বেসরকারি টেলিমেডিসিন পরিষেবাতেও এ ব্যাপারে রোগী-পরিজনকে সাহায্য করার পক্ষে সওয়াল করছেন তারা। কেননা, গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রেও এই ব্যবস্থা বাড়িতে থাকা ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মধ্যবর্তী কয়েক ঘণ্টা সময়ে অনিবার্য ভাবেই জীবনদায়ী।

অক্সিজেন দরকার পড়লে কী করণীয়? ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ পার্থসারথি ভট্টাচার্য বলছেন, 'সমস্যাটা সামান্য হলে বাড়িতেই অক্সিজেন নেওয়া যেতে পারে। আমার অনেক রোগীই কোভিড নিয়ে বাড়িতেই অক্সিজেন নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।' তবে তিনি সাবধান করছেন, ফোনে হলেও একজন চিকিৎকের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ থাকাটা জরুরি।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, 'শুধুমাত্র একটু অক্সিজেন নিতে হবে বলেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়াটা খুব কাজের কথা নয়। তাতে সব রকম সংক্রমণের ঝুঁকিও যেমন বাড়ে, তেমনই বাড়িতে থাকার স্বাচ্ছন্দ্য ও মনোবলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।' তবে টানা পাঁচ-ছ'ঘণ্টা অক্সিজেন নেওয়ার পরেও যদি রক্তে অক্সিজেনের মাত্রায় উন্নতি না-দেখা যায়, তা হলে অবিলম্বে হাসপাতালে যেতে বলছেন তিনি।

সে জন্যই বাড়িতে যে এ সব ক্ষেত্রে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করাটা জরুরি, তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ তমোরীশ কোলে। তিনি বলেন, 'শ্বাসকষ্ট যদি না-ও হয়, কোভিড আক্রান্তের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ শতাংশের কম হয়ে গেলে অক্সিজেন নিতেই হবে।'

প্রয়োজন কখন?
ক) শ্বাসকষ্ট কিংবা শ্বাস নিতে অসুবিধা
খ) অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৮৫-৮৮% বা তার কম
গ) অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক, কিন্তু অল্প হলেও সময়ের সঙ্গে স্যাচুরেশন ক্রমাগত নিম্নগামী
ঘ) বসে বা শুয়ে থাকার তুলনায় দু'-পাঁচ মিনিট হাঁটাহাঁটির পর অক্সিজনের মাত্রা ৩-৪% কমলে

জরুরি, বুঝবেন কী করে?
ক) জিভ, মুখ, ঠোঁট বা হাতের তালু ফ্যাকাসে বা নীলচে
খ) পেটের ওঠানামা মিনিটে ২২-২৪ বার বা তার বেশি
গ) টানা এক মিনিট কথা বলতে অসুবিধা
ঘ) হাঁটাহাঁটি করলেই যদি দ্রুত অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে

দেবেন কী করে?
ক) সিলিন্ডারের সঙ্গে ভালভ, মিটার, রেগুলেটর, হিউমিডিফায়ার বটল, পাইপ-সহ মাস্ক/ক্যানুলা আছে কিনা দেখুন
খ) জলে পাইপ দিয়ে দেখে নিন বুদবুদ বেরোচ্ছে কি না
গ) নাকে মাস্ক/ক্যানুলা লাগান
ঘ) আস্তে আস্তে নব ঘুরিয়ে অক্সিজেন চালুর সময়ে মিনিটে ১-২ লিটারের বেশি ডোজ (হিউমিডিফায়ার বটলের দাগ দেখে রেগুলেট করতে হবে) দেবেন না
ঙ) ৯২% বা তার বেশি স্যাচুরেশন হয়ে গেলে আর অক্সিজেন নয় (যদি না অক্সিজেন খুললেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়)


আরো সংবাদ



premium cement