২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

করোনাভাইরাস চিকিৎসা ও পরামর্শকরোনাভাইরাস চিকিৎসা ও পরামর্শ

-

করোনাভাইরাস নিয়ে ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। ভয়ের পরিবর্তে মানুষ যদি অধিকতর সচেতন থাকে, তাহলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা কঠিন কিছু নয়। এ ভাইরাস একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে সংক্রমণের সুযোগ যদি না পায়, তাহলে তা ছড়াবে না। আবার দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা গেলে ব্যবস্থাপনা কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। নতুন এ করোনাভাইরাসের জন্য এখনো কোনো টিকা বা চিকিৎসা উদ্ভাবন না হলেও আনুষঙ্গিক অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। লিখেছেন প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: এ বি এম আবদুল্লাহ

করোনাভাইরাস কী?
করোনাভাইরাস আসলে একটি ভাইরাসের গোত্র বা পরিবারের নাম। এ পরিবারের মধ্যে ছয়টি ভাইরাস আগে থেকেই রয়েছে এবং নতুন করোনাভাইরাসসহ অর্থাৎ কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা এখন সাত। যার মধ্যে চারটির লক্ষণ সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই। তবে মার্স ও সার্চ সবচেয়ে প্রাণঘাতী ছিল।
কোভিড-১৯ কী? আক্রান্ত রোগীর লক্ষণ কী?
নতুন করোনাভাইরাস দিয়ে সৃষ্ট রোগের নামকরণ হয়েছে কোভিড-১৯। সর্বপ্রথম ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত মার্স ও সার্চের মতো প্রাণঘাতী নয়। অন্যান্য ভাইরাস জ্বরের মতোই কোভিড-১৯ এর শুরুর দিকের লক্ষণগুলো হলো জ্বর, ক্লান্তিভাব, শুষ্ক কাশি। এ ছাড়া শরীর ব্যথা, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা ব্যথা, পাতলা পায়খানাও থাকতে পারে। সময়ের সাথে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে তীব্রতা বাড়ে এবং মৃদু থেকে তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা যায়। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরও কোনোরকম লক্ষণ প্রকাশ পায় না বা মৃদু লক্ষণ থাকতে পারে।
করোনাভাইরাস, ফ্লু বা সাধারণ সর্দি-কাশির তফাত কী?
করোনাভাইরাস আর সাধারণ ফ্লু বা সাধারণ সর্দি-কাশির উপসর্গগুলোর মধ্যে বেশ কিছু মিল রয়েছে। কোভিড-১৯ এর প্রধান উপসর্গ জ্বর, কাশি। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু হলে গলা ব্যথার মতো উপসর্গও থাকে। আবার নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অনেকের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট থাকতে পারে, যা ফ্লুতে দেখা যায় না। ফলে পরীক্ষা না করে কোভিড-১৯ আছে কি না বোঝা মুশকিল।
এ ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়?
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত কণার মধ্যে এ ভাইরাসটি থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দিলে তিন ফুটের মধ্যে কেউ থাকলে এ ভাইরাস ছড়াতে পারে। বাতাসে এ ভাইরাসটি ছড়ায় না, বরং শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত কণার মাধ্যমে ছড়ায়। কণাটি ভারী হওয়ায় এটি বাতাসে ভেসে বেড়াতে পারে না, তাই এটি মাটি, মেঝে বা অন্য কোনো বস্তুর ওপর পড়ে এবং দীর্ঘ সময় জীবিত থাকতে পারে। সেখান থেকে স্পর্শের মাধ্যমে অন্য কারোর করোনা সংক্রমণ হতে পারে।
সংক্রমণের ঝুঁঁকি কাদের বেশি?
করোনাভাইরাস সংক্রমণ যে কারোর হতে পারে। তবে ইমিউনিটি সিস্টেম যাদের দুর্বল বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের কম যেমন ডায়াবেটিস, কিডনি বিকল, হৃদরোগী, অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছেন যারা, বিশেষ করে বৃদ্ধরা সাধারণত মারাত্মক করোনা ঝুঁঁকিতে থাকেন। ধূমপায়ী পুরুষের মধ্যে এ ভাইরাসের মারাত্মক প্রভাব লক্ষ করা গেছে। ধূমপানের ফলে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কিছুটা কম থাকে বিধায় এরা শ্বাসনালী ও ফুসফুসকে আক্রমণ করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা দানের সাথে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁঁকি অনেক বেশি।
শিশুরা কতটা ঝুঁঁকিতে?
যেকোনো বয়সের মানুষই এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। শিশুদের শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণত কমই হয়। আক্রান্ত বাবা-মা বা পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে এবং বারবার তাদের সংস্পর্শে এলে শিশুদের ঝুঁঁকি বাড়ে। তবে শিশুদের মধ্যে যাদের অ্যাজমা রয়েছে বা অন্য কোনো জন্মগত বা দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে, তাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
কতটা ভয়ঙ্কর এ ভাইরাস? ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি কি পরিপূর্ণ সুস্থ হতে পারেন?
শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য অসুস্থতার মতো এ ভাইরাসের ক্ষেত্রেও সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, জ্বরসহ হালকা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। এর ফলে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অর্গান বিপর্যয়ের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। আশার কথা, করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৮০ শতাংশ রোগীই ভালো হয়ে যায়, এমনকি কোনো চিকিৎসা না নিলেও অথবা ঘরে বসে সর্দি-জ্বরের মতো চিকিৎসা নিলেও। এ ভাইরাসে আক্রান্ত মাত্র ২০ শতাংশ রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে এবং ২-৩ শতাংশকে আইসিইউতে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। যাদের রোগের প্রকোপ কম, তাদের সুস্থ হতে এক সপ্তাহ লাগতে পারে।
তাপমাত্রার সাথে করোনার বিস্তারের সম্পর্ক আছে কি?
তাপমাত্রার সাথে করোনার সম্পর্ক নেই। প্রথম দিকে ধারণা করা হতো, শীতপ্রধান দেশে এর বিস্তার বেশি, তবে দেখা যাচ্ছে সময়ের সাথে সব দেশেই এ ভাইরাসের বিস্তার বাড়ছে। মূলত ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এ ভাইরাস টিকতে পারে না, বাস্তবে এত তাপমাত্রা কোনো দেশেই নেই।
হাত থেকে কিভাবে নভেল করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে? কেন বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ? কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সময় মুখে হাত দিলে বা কফ-থুথু হাতে লেগে গেলে, ওই হাত দিয়ে যা কিছু ধরা হবে যেমনÑ টেবিল, চেয়ার, দরজার হাতল, কিবোর্ড ইত্যাদিতে ভাইরাস থেকে যেতে পারে এবং এগুলো যে কেউ স্পর্শ করলে সেখানে থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। যেকোনো বস্তুর ওপর এ ভাইরাস বেশ কয়েক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। আর সে কারণে ঝুঁকি এড়াতে ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার বিকল্প নেই।
চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ না করার পরামর্শ দেয়া হয় কেন?
আক্রান্ত ব্যক্তি মাস্ক ছাড়া হাঁচি-কাশি দিলে ভাইরাস বেরিয়ে মেঝে, চেয়ার, টেবিলসহ নির্জীব জিনিসে ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো ৪৮ ঘণ্টার মতো বেঁচে থাকতে পারে। তখন অন্য কেউ সে জিনিসগুলোকে স্পর্শ করে সে হাত দিয়ে তার চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করলে জীবাণুগুলো দেহে প্রবেশ করে ওই ব্যক্তিটিকে সংক্রমিত করতে পারে। এ জন্য হাত না ধুয়ে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ না করতে পরামর্শ দেয়া হয়।
আক্রান্ত মা কি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন?
বুকের দুধের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর কোনো তথ্য বা প্রমাণ এখনো নেই। তবে আক্রান্ত মা অবশ্যই দুধ খাওয়ানোর সময় মাস্ক পরবেন, সাবান দিয়ে হাত ও স্তন ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, শিশু কোলে থাকা অবস্থায় হাঁচি-কাশি দেবেন না। করোনায় নিউমোনিয়ার মতো জটিলতা হতে পারে।
নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন নেয়া থাকলেও কি করোনা সংক্রমণ হতে পারে? করোনায় নিউমোনিয়ার মতো জটিলতা হলেও নতুন এ ভাইরাসের বিপরীতে নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন যেমন নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন বা হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ ‘বি’র ভ্যাকসিন কাউকে সুরক্ষা দেবে না। তবে কেউ আগে থেকে এ ভ্যাকসিন নিয়ে থাকলে তা তার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে।
স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে থাকতে কী করতে হবে? কোয়ারেন্টিনে থাকলে কি করোনার ভয় থাকে না?
যেসব দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে, সেসব দেশ থেকে আগতদের সবারই ১৪ দিন কোয়ারিন্টনে থাকা উচিত। কোয়ারেন্টিন মানে হলো, এ ১৪ দিন তিনি নিজে ঘরের বাইরে যাবেন না, আবার বাড়িতে অন্য কারো সাথে মিশবেন না। ঘরে অবস্থানকালে পরিবারের অন্যদের সংস্পর্শও এড়িয়ে চলতে হবে। কোয়ারেন্টিনে থাকা রোগীর খাবার ঘরের দরজার বাইরে রেখে আসতে হবে, কেউ ভেতরে ঢুকবে না। ঘরের বাইরের অন্য কোনো প্রয়োজন দেখা দিলে নিজে না গিয়ে কারো সহায়তা নেয়াই ভালো। ঘরে পোষা প্রাণী থাকলে তাদের সংস্পর্শে না যাওয়াই ভালো। এককথায় নিজে নিজেকেই অন্যদের থেকে পৃথক করে রাখা। এতে পরিবার বা সমাজের অন্যরা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁঁকিতে থাকে না। কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় যদি কারোর জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা প্রভৃতি লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করার নির্দেশনা রয়েছে।
কখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে?
বিদেশ থেকে আগত বা তার সংস্পর্শে থাকা কারো যদি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। তাই যাদের রোগের লক্ষণ নেই তাদের পরীক্ষা করার কোনো প্রয়োজন নেই। এতে রোগ শনাক্ত হবে না।
করোনা মানেই কি মৃত্যু?
করোনা মানেই মৃত্যু নয়। বরং সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে শিশুসহ সবাই ক্রমে সুস্থ হয়ে ওঠে। এ জন্য দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত। ভালো হবে প্রতিদিন সুষম খাবার, টাটকা শাকসবজি ও ফলমূল খেতে পারলে। এ ছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। ধূমপান ও মদপান একদম নয়।
সবার কি মাস্ক পরার প্রয়োজন আছে?
সুস্থ সাধারণ মানুষের মাস্ক ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ এ ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না, বরং তা হাঁচি-কাশি এবং জীবাণুযুক্ত হাতের স্পর্শে বেশি বেশি ছাড়ায়। তাই গণহারে, রাস্তাঘাটে ঢালাও মাস্ক পরে চলাফেরার কোনো যুক্তিই নেই। বরং আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যকে রক্ষার জন্য বাধ্যতামূলক মাস্ক পরবেন, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখ বা নাক থেকে ভাইরাস বা জীবাণু অন্য মানুষে ছড়িয়ে না পড়ে। পাশাপাশি আক্রান্ত বা কোয়ারেন্টিনে রাখা রোগীদের সেবাদানকারী ডাক্তার, নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। তা ছাড়া বিদেশফেরত যাদের বাড়িতে নিজেদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তারা এবং তাদের সেবাদানকারী পরিবারের লোকজন এবং আশপাশের লোকজন শুধু একই ঘরে থাকার সময় মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। তবে শুধু মাস্ক পরলেই হবে না, সেই সাথে কিছু নিয়মও মানতে হবে। যেমন কিছুক্ষণ পরপর সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া অব্যাহত রাখতে হবে, নিয়মিত মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে, ব্যবহারের পর মাস্ক যেখানে-সেখানে না ফেলে ঢাকনাযুক্ত পাত্রে ফেলতে হবে এবং পরবর্তীতে তা পুড়িয়ে ফেলা ভালো।
কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়?
১. আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দিলে টিস্যু ব্যবহার করবেন এবং সে টিস্যু পুড়িয়ে ফেলতে হবে, যাতে সেখান থেকে ভাইরাস না ছড়ায়। কেউ যদি রুমাল ব্যবহার করেন, তাহলে সে রুমাল ও হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নেবেন। ভালোভাবে হাত না ধুলে সেখান থেকে ভাইরাস ছড়াবে। তাই সব সময় সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে দুই হাত ধুয়ে নেবেন অথবা চাইলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যায়। হাতের কাছে কিছু না থাকলে কনুইয়ের ভাঁজে নাক-মুখ ঢাকতে হবে। ২. অপরিষ্কার হাতে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করবেন না। ৩. বাইরে থেকে ঘরে ঢুকে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে তারপর অন্য কিছু ধরবেন। কারণ এ হাত দিয়ে যা কিছু ধরা হবে সেখানেই ভাইরাস থেকে যেতে পারে। টেবিল, চেয়ার, দরজার হাতল, কিবোর্ডে ভাইরাস থেকে যেতে পারে। সেখান থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই এগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে। ৪. খাবার ভালোভাবে সিদ্ধ করে খাওয়া দরকার। ডিম পোচ করে না খেয়ে ভালোভাবে ভাজি করে খাওয়া উচিত। ফলমূল ভালো করে ধুয়ে খেতে হবে, কোনো সবজি দিয়ে সালাদ করার আগে সেগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। ৫. অনেকের গৃহপালিত পশুপাখি থাকে। কোনো পশুপাখি অসুস্থ হয়ে পড়লে বা রোগাক্রান্ত মনে হলে সেটিকে সরিয়ে নিতে হবে। সেই প্রাণীকে কেউ স্পর্শ করলে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। ৬. কুশলবিনিময়ের ক্ষেত্রে করমর্দন, কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন। ৭. জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। যথাসম্ভব ঘরে বা বাড়িতে থাকুন, খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়াই ভালো।
করোনাভাইরাস নিয়ে ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। ভয়ের পরিবর্তে মানুষ যদি অধিকতর সচেতন থাকে, তাহলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা কঠিন কিছু নয়। এ ভাইরাস একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে সংক্রমণের সুযোগ যদি না পায়, তাহলে তা ছড়াবে না। আবার দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা গেলে ব্যবস্থাপনা কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। নতুন এ করোনাভাইরাসের জন্য এখনো কোনো টিকা বা চিকিৎসা উদ্ভাবন না হলেও আনুষঙ্গিক অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব।
লেখক : প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক


আরো সংবাদ



premium cement