ব্রেস্ট ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা
- ডা: নাহিদ শারমিন নূপুর
- ১৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০
মাইকেল এনজ্যালো একজন বিখ্যাত ভাস্কর ছিলেন। ডাক্তার হয়েও ১৫২৪ সালে ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য তৈরি। করেছিলেন এক অনবদ্য ভাস্কর্য ‘নাইট’। তিনি ‘নাইট’ নামক ভাস্কর্যের বাম ব্রেস্ট ও নিপল অস্বাভাবিকভাবে ফোলা দেখান; যা মূলত ব্রেস্ট টিউমার তথা ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্দেশ করে। তখন ব্রেস্ট ক্যান্সারের কোনো ফলপ্রসূ চিকিৎসা ছিল না। সময়ের সাথে সাথে মেধা, মনন ও প্রাযুক্তিক উন্নয়ন ও গবেষণার উৎকর্ষ সাধনের ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে। সঠিক চিকিৎসার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো সঠিক রোগ নির্ণয়। ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য সাধারণত যেসব পরীক্ষা করা হয় সেগুলোর হলোÑ ১. নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা; ২. ডাক্তারকে দিয়ে স্তন পরীক্ষা করানো; ৩. ফাইন নিডিল এসপিরেশন সাইটোলজি বা এফএনএসি ল্যাবরেটরি পরীক্ষা; ৪. ইস্ট্রোজেন-প্রজেস্টেরন রিসিপটর টেস্ট ও ৫. জেনেটিক এনালাইসিস।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায় আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় অন্তরায় হলোÑ আমাদের মা-বোনদের সঙ্কোচ ও সচেতনতার অভাব। ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায় নবদিগন্তগুলো হলোÑ
ব্রেস্ট কনজারভেটিভ সার্জারি : প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে ঞধন ঋবসধৎধ (খবষুড়ুড়ষ) ২.৫ মিলিগ্রাম একটি করে দু-তিন মাস খেলে টিউমারের আকৃতি উল্লেখজনকভাবে ছোট হয়ে যায়। তখন টিউমার কেটে বাদ দেয়া যায়। এই প্রক্রিয়ায় পুরো ব্রেস্ট ফেলে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি : ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ হিসেবে সবসময়ই যার দিকে আঙুল প্রদর্শন করা হয় তা হলো ইস্ট্রোজেন হরমোন। ব্রেস্ট টিউমার নিজে প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ ইস্ট্রোজেন নিঃসরণ করে। ইস্ট্রোজেন হরমোন নিঃসরণ প্রায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয় ঋবসধৎধ (খবষুড়ুড়ষ) যা অ্যাডভান্সড ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায় এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এ ছাড়া বাজারের প্রচলিত ওষুধগুলোও ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমনÑ ঞবসড়ীরভবহ, নড়ষড়হব ইত্যাদি।
ইমিউনো থেরাপি : ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায় ইমিউনো থেরাপি হিসেবে হারসেপটিও ব্যবহৃত হচ্ছে।
কেমোথেরাপি : বর্তমানে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, কম এমন নতুন কিছু ওষুধ কেমোথেরাপি হিসেবে ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
রেডিও ও ব্র্যাকি থেরাপি : বিভিন্ন মাত্রায় ক্যান্সার টিসুর ওপর তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রয়োগ করে ক্যান্সার টিসুকে এই প্রক্রিয়ায় নির্মূল করার চেষ্টা করা হয় রেডিও থেরাপির মাধ্যমে। আর ব্র্যাকি থেরাপির প্রক্রিয়াটি হলোÑ ক্যান্সার বা টিউমারের মাঝে একটি রেডিও অ্যাকটিভ বস্তু ইনপ্লান্ট করা হয়। এই বস্তু নির্দিষ্ট সময় ধরে নির্দিষ্ট পরিমাণে রেডিয়েশন নির্গম করে ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করে।
মান্টিমডুলারি ট্রিটমেন্ট : সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি ও হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির সমন্বয়কে মাল্টিমডুলারি ট্রিটমেন্ট বলে।
আমাদের দেশে নাটক, গল্প বা উপন্যাসের নায়ক বা নায়িকার হঠাৎ ব্লাড ক্যান্সার তথা লিউকেমিয়ায় মারা যাওয়ার ঘটনা দেখে দুঃখ হয়। কারণ আমাদের কাছে ব্লাড ক্যান্সার রোগটি বেশি পরিচিত। কিন্তু ব্রেস্ট ক্যান্সারের ব্যাপ্তি আমাদের দেশে ব্লাড ক্যান্সারের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। আজ থেকে ৫০০ বছর আগে মাইকেল এনজ্যালো ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আজ ৫০০ বছর পরও কি আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন? উত্তরটা আপনাদের জন্যই রইল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা