২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হাঁপানি রোগের প্রতিকার

-

শীতকালে হাঁপানির প্রকোপ বেড়ে যায়। হাঁপানি রোগটি জীবননাশক না হলেও খুবই কষ্টদায়ক। যদি বাবা-মায়ের এ রোগ থাকে, তাহলে তা সন্তানের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে। এ রোগে প্রবল শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, গলা সাঁই-সাঁই করে বুকে প্রচণ্ড চাপ বোধ থাকে, কেশে কেশে হয়রান হতে হয়। অনেকক্ষণ কাশির পর শক্ত শ্লেষ্মা খানিকটা উঠলে তবে রোগী একটু আরাম পায়। হাঁপানির টানে উঠলে রোগী ভাষণ কষ্ট পায় কোষ্টকাঠিন্য রোগীর হাঁপানি থাকলে কষ্ট দুঃসহ হয়ে ওঠে।
হাঁপানি রোগের কারণ
হাঁপানির আসল কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের সাথে শ্বাসনালীর বিভিন্ন রকমের সংবেদশীলতা এর জন্য দায়ী হতে পারে। বিভিন্ন উত্তেজক উপাদান বা ট্রিগার ফ্যাক্টরের ওপর ভিত্তি করে হাঁপানির কারণ হলোÑ
Ñঅ্যালার্জির কারণে হাঁপানি
Ñভাইরাস সংক্রমণের কারণে
Ñব্যায়ামের কারণে
Ñপেশাগত কারণ
Ñআবহাওয়ার কারণে
Ñওষুধের কারণে
Ñকখনো কখনো মানুষিক চাপের কারণে হাঁপানি হতে পারে।
সাধারণত অ্যালার্জির কারণে সবচেয়ে বেশি হাঁপানি হয়ে থাকে। অ্যালার্জির কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার আগে সাধারণত চোখ লাল হয়, নাক থেকে পানি পড়ে, নাক চুলকায়, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয় এবং কখনো কখনো গায়ে লাল চাকা ওঠে।
ঘরবাড়ির ধুলার অবস্থিত মাইট নামের এক প্রকার কীট, পাখির পালক, জীবজন্তুর পশম, ছত্রাকের স্পোর, রান্নার ধোঁয়া, সিগারেটের ধোঁয়া, কিছু খাদ্য, কিছু ওষুধ, শিল্পকারখানার ব্যবহৃত কিছু রাসায়নিক পদার্থ। এসব জিনিসে অ্যালার্জি হতে পারে আবার নাও হতে পারে। কোন কোন জিনিসে অ্যালার্জি হয় সে বিষয়ে আগে থেকে জানতে হবে এবং তা থেকে দূরে থাকতে হবে
এ ছাড়া ঋতু পরিবর্তনের সময়, যেমন শীতকাল, বসন্তকাল এবং শীতকাল। এ সময় সবচেয়ে বেশি হাঁপানি হয়। শীতকালে সাধারণত সর্দিজ্বর বা ফ্লুতে বেশি করে আক্রান্ত থাকি, যা হাঁপানি হওয়ার একটি অন্যতম কারণ।
প্রতিকার
হাঁপানি থেকে বাঁচার জন্য আমাদের কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
Ñ শীতের সময় অ্যাজমার প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। শীতল বাতাস হাঁপানির উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়, তাই ঠাণ্ডাবাতাস যেন সরাসরি শ্বাসনালীতে প্রবেশ না করে সে জন্য মাস্ক বা মুখে রুমাল ব্যবহার করতে হবে।
Ñ নাক দিয়ে শ্বাস নেয়ার অভ্যাস করুন। কারণ নাক দিয়ে শ্বাস নিলে বাতাসের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা উভয়ই বেড়ে যায়। এতে শ্বাসনালী স্বস্তি পায়।
Ñ সাধারণত ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যতটুকু সম্ভব চোখ, নাক বা মুখে হাত দেয়ার অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করুন।
Ñনিজে ঘর ঝাড়ামোছা, কাপর পরিষ্কার করা থেকে বিরত থাকুন, ঘর ঝাড়ামোছার সময় বাইরে থাকতে হবে।
Ñবাসায় কার্পেট ব্যবহার করবেন না, বিশেষ করে শোবার ঘরে কোনো অবস্থায় কাপের্ট রাখবেন না।
Ñবিছানার চাদর, বালিশের কভার অন্তত সপ্তাহে একবার ধুতে হবে ও কমপক্ষে এক ঘণ্টা রোদে রাখতে হবে, যাতে মাইট মরে যায়।
Ñরান্না করার সময় অবশ্যই রান্নাঘরের জানালা খুলে রান্না করবেন।
রান্নাঘরের ধোঁয়া যাতে শোবার ঘরে প্রবেশ করতে না পারে, সে দিকে খেয়াল রাখবেন। শীতকালে হাঁপানি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে উপরের বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরার্মশ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
লেখক : জেড এইচ সিকদার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ।


আরো সংবাদ



premium cement