১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দাঁতের যতেœ জরুরি

-

আজকাল প্রায় প্রত্যেকেই কম বেশি স্কেলিং’ নামটির সাথে পরিচিত। আর এই পরিচিতি ঘটেছে দন্ত চিকিৎসার দ্রুত অগ্রগতির কারণেই। আবার অনেকেই ‘দাঁত ওয়াশ’ করা নামেও পরিচিত। তবে সুন্দরতম এবং সঠিক ভাষা হলো দাঁত স্কেলিং করা।
স্কেলিং কী? প্রতিবার খাবার পর আমাদের দাঁতের গায়ে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যকণা জমে থাকে, একে বলা হয় ডেন্টাল প্লাক। এই ডেন্টাল প্লাক যখন পরিষ্কার করা হয় না, তখন মুখের ভেতর অবস্থিত লালা এবং অন্যান্য জৈবিক রসের সমন্বয়ে তা জমে কঠিন আকার ধারণ করে পাথরে পরিণত হয়। দাঁতের এই পাথর দাঁত এবং মাড়ির মাঝে জমতে শুরু করে। দাঁতের এই পাথর যে পদ্ধতিতে অপসারণ করা হয় তাকে স্কেলিং বলা হয়।
প্রাথমিক অবস্থায় দাঁতের পাথর হালকা হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে, পরবর্তীতে এই পাথর কালচে বর্ণের হতে পারে। দাঁতের পাথর যেহেতু দাঁত ও মাড়ির মাঝে জমতে শুরু করে, তাই ধীরে ধীরে দাঁত এবং মাড়ির মধ্যকার দূরত্ব বাড়তে থাকে। স্বাভাবিক অবস্থায় দাঁত আমাদের চোয়ালের মধ্যস্থিত হাড়ের মাঝে পেরিওডেন্টাল লিগাস্টে নামক বিশেষ ধরনের যোজক কলার মাধ্যমে ধারণ করা থাকে। কিন্তু যখন দাঁতের পাথর জমা আরো বেড়ে যায় এবং এর কোনো চিকিৎসা নেয়া হয় না, তখন দাঁত ধীরে ধীরে তার যোজককলাকে হারাতে থাকে এবং একটা সময় আসে যখন দাঁত নড়তে শুরু করে। এর পর দাঁতটি পড়ে যায়।
স্কেলিং হলো সেই পদ্ধতি, যার মাধ্যমে দাঁতের অবাঞ্ছিত পাথর দূর করা হয়। স্কেলিংয়ের মাধ্যমে দাঁতের কিছু অবাঞ্ছিত দাগও দূর করা সম্ভব। স্কেলিং করার জন্য বিশেষ রকমের আধুনিক স্কোলার মেশিন ব্যবহার করা হয়। এতে রোগী ব্যথা পান এবং রক্তপাত খুব সামান্য হতে পারে। স্কেলিং করার পর পলিং করা হয়। কারণ স্কেলিং করার ফলে দাঁতের বাইরের আবরণ অমসৃণ হয়ে যায়। তাই পলিশিং করলে তা মসৃণ হয়ে যায় এবং সেখানে দ্রুত পাথর জমা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। পলিশিং করা হয় বিশেষ রকমের পলিশিং পেস্ট এবং অত্যাধুনিক ব্রাশের মাধ্যমে।
স্কেলিং করলে দাঁতের ক্ষতি হয় না। অনেকেই মনে করেন, স্কেলিং করলে দাত ফাঁকা হয়ে যায়। আসলে এটি ব্যক্তি রোগীর ভুল ধারণা। আসল কথা হলো দাঁতে পাথর জমার ফলে এক দু’দাঁতের মধ্যবর্তী স্থান এবং দাঁত ও মাড়ির সংযোগস্থলের যে স্বাভাবিক ফাঁকা স্থান থাকে, তা পাথরের মাধ্যমে ভরাট হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়তে থাকে। যখন স্কেলিং করা হয়, তখন পাথরগুলো সরে যাওয়ার ফলে হঠাৎ করে জায়গাগুলো ফাঁকা মনে হয়। আর কিছুই নয়। স্কেলিং করার পর নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা হবে এবং মাড়ির কিছু বিশেষ ব্যায়াম ম্যাসাজ আছে। যা করলে দাঁতের সৌন্দর্য প্রায় পুরোপুরি রক্ষা পায়।
স্কেলিং দাঁতের ক্ষতি করে না, বরং দাঁতের সৌন্দর্য রক্ষায় স্কেলিংয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে একটি কথা হলো, যার তার কাছে স্কেলিং না করিয়ে অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের মাধ্যমে স্কেলিং করাই সর্বোত্তম। বছরে কমপক্ষে দু’বার স্কেলিং করা প্রয়োজন।
লেখিকা : ডাইরেক্টর ও ডেন্টাল সার্জন, নাহিদ ডেন্টাল কেয়ার, ১১৭/১ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা। ফোন : ০১৭১২-২৮৫৩৭২

 


আরো সংবাদ



premium cement