২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

প্রাকৃতিক ওষুধ আমড়া

-

আল্লাহ যেখানে মানুষ সৃষ্টি করেছেন তার আশপাশে খাদ্যশস্যের ভেতরেও রোগ আরোগ্যের শেফাও দিয়েছেন। এমননি একটি দেশীয় ফল আমড়া। ইংরেজি নাম : এড়ষফবহ ধঢ়ঢ়ষব. বৈজ্ঞানিক নাম : ঝঢ়ড়হফরধং ঢ়রহহধঃধ. আমড়া বাংলাদেশের অতি পরিচিত জনপ্রিয় ফল। এতে ভিটামিন সি ছাড়া ক্যারোটিন ও শর্করা রয়েছে। আমড়া যদিও রান্না করে খাওয়া যায়; কিন্তু বেশির ভাগ লোক কাঁচা কামড়ে চিবিয়ে খায় পুরো ভিটামিন পাওয়া ও স্বাদের জন্য। চলুন তাহলে জেনে নেই আমড়ার কিছু বিস্ময়কর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী আমড়াতে রয়েছে শর্করা ১৫ গ্রাম, আমিষ ১.১ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫৫ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩.৯ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৮০০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.২৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৯২ মিলিগ্রাম, অন্যান্য খনিজ পদার্থ ০.৬ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি। আমড়ার উপকারিতা * পিত্তবমনে : ভাদ্র-আশ্বিন মাসে এই পিত্তবমন রোগ দেখা যায়। এটা হলে আগে থেকে রোদে শুকিয়ে রাখা আমড়া গাছের ছাল ৫ গ্রাম এক কাপ গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে দুই ঘণ্টা পর পানি ছেঁকে নিয়ে অল্প অল্প করে দিনে তিন-চারবার খেলে ভালো হয়। * অগ্নিমন্দায় : সুপরিপক্ব আমড়া বেটে মলমের মতো করে কোনো পাত্রে আমসত্ত্বের মতো করে মেলে রোদে শুকিয়ে রাখতে হয়। অগ্নিমন্দা হলে ওই শুকনো আমড়া আধা কাপ পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দৈনিক দুইবার দুই-তিন দিন খেলে ভালো হয়। * শরীর জ্বালাপোড়া হলে : কখনো কোনো কারণে শরীর জ্বালাপোড়া করলে গোসলের আগে আমড়ার ছাল বেটে সাত-আট চামচ রস নিয়ে এক কাপ পানিতে মিশিয়ে ওই পানিতে কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। তার পর এক ঘণ্টা পর গোসল করার সময় শরীর ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পরে গায়ে তিলের তেল মালিশ করতে হবে। তিন-চার দিন এভাবে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। * অজীর্ণ রোগে : যাদের মল সাদাটে, তার সাথে পিত্ত, হাত-পায়ে জ্বালা, বিকেলে চোখ জ্বালা, মুখে স্বাদ নেই, তারা পাকা আমড়া বেটে এক কাপ পানির সাথে একটু চিনি দিয়ে খেলে উপকার হবে। তিন-চার দিন খেতে হবে। * অরুচিতে : কারো কারো পেটে ক্ষুধা কিন্তু মুখে বিস্বাদ, তারা আমড়া গাছের ছালের রস এক চামচের সাথে অল্প পানি, চিনি বা মধু দিয়ে শরবত বানিয়ে খেলে মুখে রুচি আসে। * গ্রহণী রোগে : কারো দিনে দুই-তিনবার, রাতে নয়। আবার কারো দুইবার প্রচুর মল বেরিয়ে যায়। আবার দুই-তিন দিন পর এক দিন তিন-চারবার দাস্ত হয়। এমন যাদের হয়, তারা আমড়া গাছের আটা পানিতে ভিজিয়ে একটু চিনি দিয়ে খেলে ভালো হয়। দৈনিক দুইবার চার-পাঁচ দিন খেতে হবে। * শুক্র তারল্যে : আমড়ার আঁটি ভেঙে এর শাঁস বের করে বেটে রস বের করে সেই রস খেলে শুক্র গাঢ় হয়। রতিশক্তি বাড়ে। ব্যবহার : আমড়া দিয়ে সুস্বাদু আচার চাটনি ইত্যাদি তৈরি করা যায়। আমড়া মহান আল্লাহ তায়ালার এক অপূর্ব দান। এর উপকারিতার শেষ নেই। তাই ফল খান বেশি বল পাবেন বেশি। বাড়ির আশপাশে ফলের চারা রোপণ করুন, পুষ্টির অভাব দূর করুন।


আরো সংবাদ



premium cement