২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাদক থেকে দূরে থাকুন

-


আমাদের দেশে মাদকাসক্তের ৯০ শতাংশের বয়স ২৫ বছরের নিচে। মাদকের কারণে অনেক সতেজ প্রাণ ঝরে পড়ে। বিশ্বব্যাপী মাদকদ্রব্য একটি বিরাট সমস্যায় রূপ ধারণ করেছে। ধ্বংস করে দিচ্ছে দেশ ও জাতির সুপ্ত প্রতিভা ও বিকাশকে, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে। নেশা এমনই এক ব্যাপার যা শুধু নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির ব্যক্তিগত, দাম্পত্যগত বা পরিবারগত ক্ষতি সাধন করে না, তারা পুরো সমাজটাকেই করে তোলে ক্ষতিগ্রস্ত। একটি সতেজ তরুণের নেশায় আসক্ত হওয়া মানে সমাজ থেকে একটা সম্ভাবনাময় প্রতিভার বিনাশ ঘটা। এ বিনাশ দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির ব্যাপার।
Ñনেশায় মানুষ বিচার বুদ্ধিহীন হয়ে পড়ে
Ñ নিষ্ঠুর হয়ে পড়ে
Ñ উচ্ছৃঙ্খল হয়ে যায়
Ñ নেশা বিরাট বিরাট মানসিক রোগের জন্ম দিয়ে থাকে। নেশার কারণেÑ
Ñ সিজোফ্রেনিয়া
Ñ বিষণœতা
Ñম্যানিয়া দেখা দিতে পারে
যা রোগী ও তার আত্মীয়ের জন্য আরো ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি করে থাকে। তাই যারা নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন কিংবা নেশার কারণে মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তাদের দরকার সুচিকিৎসা। তাই এ সময় করণীয় হলো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া। নেশায় নানাভাবে জড়িয়ে পড়ে কিশোর-কিশোরী, এগুলো হলো-
মা-বাবার মাত্রাতিরিক্ত আদর
Ñ মা-বাবার মাত্রাতিরিক্ত শাসন
Ñ মা-বাবার অবহেলা
Ñ অনাদর
Ñ পারিবারিক কোন্দল
Ñ অপরিণত মন
Ñ ব্যক্তিত্বের ত্রুটি
Ñ ওষুধ গ্রহণের ফলাফল বুঝতে না পারা
Ñবেকারত্ব
Ñ অভিজ্ঞতা লাভের ইচ্ছা
Ñ নতুন স্বাদ গ্রহণের ইচ্ছা
Ñ বিশৃঙ্খলা
Ñ চিত্তবিনোদন পাওয়ার আকাক্সক্ষা
Ñ আমোদ-প্রমোদের আশায়
Ñ উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য
Ñ ধূমপানের অনিয়ন্ত্রিত বদ অভ্যাস
Ñ আর্থিক অনটন
Ñ পারিবারিক চাপ
Ñ শৈশবের অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা
Ñ বন্ধু-বান্ধবের অসৎ প্রলোভন
Ñ প্ররোচনা
Ñ প্রচলিত সামাজিক রীতি-নীতি ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রবণতা
Ñ নতুনত্বের কামনা
Ñনতুনের প্রতি ঝোঁক
Ñরোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পাওয়ার তীব্র বাসনা
Ñহতাশাবোধ
Ñ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অল্পতেই ভেঙে পড়া
Ñ ব্যক্তিগত কলহ-দ্বন্দ্ব
Ñ মনোমালিন্য।
Ñ মনের অমিল-অশান্তি
মাদকের নেশার একপর্যায়ে কেউ কেউ আবার মদে আসক্ত হয়ে পড়ে। এরা অনেকেই কৌতূহলবশত এটি সেবন করে। কখনো কখনো রোমাঞ্চের জন্য বা এনজয় করার জন্য মদ খেয়ে থাকে। কেউ কেউ কোনো পার্টিতে, অনুষ্ঠানে, বন্ধু-বান্ধবীর জন্মদিনে মদ পান করে। ফলে একসময় তা নেশায় পরিণত হয়। অনেকে আবার বিয়ার খায়। বিয়ারও এক প্রকার মদ বা অ্যালকোহল। অনেক মডার্ন মানসিকতার ছেলেমেয়ে ফ্যাশন হিসেবে বিয়ার পান করে আর মিউজিকের তালে তালে হারিয়ে যায় আমোদ-প্রমোদের জগতে। রাতে দেরি করে বাড়ি ফেরে। অনেক মা-বাবা সন্তান কোথায় যায়, কখন আসে খেয়ালও করেন না বা খুব বেশি স্বাধীনতা দিয়ে তাদের সন্তানদের নষ্ট করে দেয়। কিন্তু এমনটি ঠিক নয়। এর পরিণাম খারাপ হয়। ছেলেমেয়ের ব্যাপারে সজাগ হওয়া দরকার প্রতিটি মা-বাবার। সন্তান কোথায় যায়, কোথায় থাকে, কাদের সাথে মেশে, কখন বাড়িতে ফেরে, ফিরে এসে ঠিকঠাক মতো বাড়ির খাবার খায় কি না, তা খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়া সন্তান আগের চেয়ে অন্যরকম হয়ে গেছে কি না, অন্য মনস্ক থাকে কি না, বেশিক্ষণ একা একা থাকে কি না, বাড়িতে কোন সময় কোন ধরনের বন্ধু-বান্ধব আসে সে সম্পর্কে খোঁজখবর রাখা উচিত। বাবা-মা একটু সচেতন হলেই ছেলেমেয়েদের মাদকাসক্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়। আর যদি কোনোভাবে ছেলেমেয়ে মাদকাসক্ত হয়েই যায় তখন তাকে মাদকমুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে। যারা মাদকে নির্ভরশীল বা ডিপেন্ডেন্স হয়ে যায় তাদের মধ্যে বিভিন্ন উপসর্গ ও প্রভাব লক্ষ্য করা যায়Ñ
Ñ চলাফেরায় অসংলগ্নতা প্রকাশ পায়
Ñস্মৃতিশক্তি কমে যায়
Ñ মনোযোগের ক্ষমতা হ্রাস পায়।
Ñ ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।
Ñমাদক ব্যবহারকারী ক্রমান্বয়ে নিস্তেজ ও অবসন্ন হয়ে যায়
Ñঅধিক মাত্রায় মাদকসেবী ব্যক্তি মাতালের মতো আচরণ করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঘুমিয়ে পড়ে
Ñ প্যালপিটিশন দেখা দেয়
Ñ ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি পায়
Ñ চামড়ায় ফুসকুড়ি দেখা যায় অনেক সময়
Ñ বমি বমি ভাব বা বমি হয়
Ñমুখমণ্ডল সজীবহীন হয়ে পড়ে
Ñ চোখ দু’টি লাল হয়ে যায়
Ñস্বাস্থ্যের অবনতি দেখা যায়
Ñ খাদ্য গ্রহণে অনীহা দেখা দেয়
Ñ ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কমে যায়
Ñ যৌন অনুভূতি কমে যায়
Ñকোনো কোনো ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে বৃদ্ধি পায়
Ñ মস্তিষ্ক কোষের ক্ষয়ক্ষতি হয়
মাদকের নেশা এমনই এক নেশা যা একটি সুন্দর জীবনকে নষ্ট করে দেয়। মাদকের কুফল গোটা যুবসমাজকে ধরে রাখে অন্ধকারে। মাদক এমনই এক দ্রব্য যা গ্রহণ বা ব্যবহার করলে নেশা সৃষ্টি হয়। আর যা নেশা সৃষ্টি করে তাই হলো মাদকদ্রব্য। অন্য কথায় যেসব দ্রব্য মস্তিষ্কের ওপর সরাসরি কাজ করে আচরণের অনাকাক্সিক্ষত পরিবর্তন ঘটায় এবং যা বিভ্রান্তি ও নেশা সৃষ্টিকারী এবং যা চিত্ত বিভ্রমকারী সেগুলোই হলো মাদকদ্রব্য। মাদকের নেশায় আসক্ত হতে পারেনÑ
Ñছাত্র-ছাত্রী
Ñডাক্তার-নার্স
Ñ ফার্মাসিস্ট-কেমিস্ট
Ñ ওষুধ বিক্রেতা
Ñমেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ
Ñবেকার যুবক-যুবতী
Ñমা-বাবার অবহেলিত সন্তান
Ñমেডিক্যাল-হাসপাতালের আয়া-বয়Ñ ব্রাদার
ব্যর্থ প্রেমিক-প্রেমিকা
এদেরও মাদকে আসক্ত হওয়ার অবচেতন মনের সুপ্ত প্রবণতা থাকে। এমন অনেক মানুষই আছেন যারা দিনের পর দিন রাতের পর রাত নিদ্রাহীনতায় ভোগেন। নিদ্রাহীনতার কষ্টে রাতভর জ্বলতে থাকেন। অনিদ্রা মানুষের মনমস্তিষ্কে লক্ষণীয় প্রভাব ফেলে। ফলে নিদ্রাহীন ব্যক্তিও কখনো কখনো মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে মাদকের নেশায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। বিভিন্ন কারণে নেশাগ্রস্ত হয়। নেশাগ্রস্ত হয়ে সুন্দর জীবন অসুন্দরের কালিমা দিয়ে ভরতে থাকে। নিজে জ্বলে অন্যকেও জ্বালাতে থাকে। তাই এর সমাধান দরকার, দরকার চিকিৎসা। মাদকমুক্তকরণে বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা দরকার। একটি বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসাই সুস্থ জীবন উপহার দিতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬ ব্যক্তি ভর্তি পাঁচবিবিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক ব্যক্তির মৃত্যু স্পেশাল অলিম্পিকে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, প্রশংসিত দেওয়ানগঞ্জের রবিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরো ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা থাই-মিয়ানমার সীমান্ত শহরের কাছে আবারো সংঘর্ষ শুরু : থাই সেনাবাহিনী পাঁচবিবিতে মোটরসাইকেল ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গায় ১৪০তম দেশ হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলো বার্বাডোস সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে আছে : রিজভী কুষ্টিয়ায় অস্ত্রসহ যুবলীগ নেতা আটক পাকিস্তানে একসাথে ৬ শিশুর জন্ম, সবাই সুস্থ

সকল