২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাইলস চিকিৎসার পরামর্শ

-

পাইলস রোগটি আমাদের কাছে অর্শ বা অরিশ নামে পরিচিত। এ রোগে মলদ্বার থেকে মাঝে মধ্যে রক্ত যায়। কখনো বেশি কখনো কম। মলত্যাগের সময় অনেকের মলদ্বার ফুলে ওঠে আবার কারো কারো মাংশ পিণ্ড ঝুলে পড়ে যা আবার আপনাআপনি ভেতরে ঢুকে যায় অথবা চাপ দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে এর চিকিৎসা ও প্রতিকার কী? যুগ যুগ ধরে এ জাতীয় রোগীরা প্রতারণার শিকার হয়ে আসছেন। অনেক হাতুড়ে চিকিৎসক আছেন যারা বিনা অপারেশনে চিকিৎসার নামে রোগীদের বিভ্রান্ত করছেন।
তারা অনেকে মলদ্বারে বিশাক্ত কেমিক্যাল ইনজেকশন দিচ্ছে যাতে মলদ্বারে মারাত্মক ব্যথা হয় এবং মলদ্বারের আশপাশে পচন ধরে এবং এ জন্য রোগী অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা ভোগ করে।
পরিণামে কারো কারো মলদ্বার সরু হয় এবং বন্ধ হয়ে যায়। তখন পেটে মলত্যাগের বিকল্প পথ করে দিয়ে ব্যাগ লাগিয়ে দিতে হয়।
আবার কোনো কোনো হাতুড়ে চিকিৎসক বিষাক্ত কেমিক্যাল পাউডার দেন যা মলদ্বারে লাগালেও মলদ্বার পচে ঘা হয়ে যায় এবং রোগীর একই পরিণতি হয়।
রোগীরা যখন বিনা অপারেশনের কথা শোনেন তখন এ জাতীয় চিকিৎসার জন্য খুবই প্রলুব্ধ হন। তিনি যখন প্রতারণার শিকার হয় তখন আর তার কিছুই করার থাকে না।
ইদানীংকালে আমরা দেখতে পাই, লেজার সার্জারির মাধ্যমে ধনন্তরি পাইলস চিকিৎসা হচ্ছে। বিষয়টি মোটেই সত্য নয়। কারণ এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে লেজারের মাধ্যমে পাইলস চিকিৎসায় কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নেই। আমরা বহুবার বলেছি, রিং লাইগেশন এবং লংগো অপারেশনের মাধ্যমে প্রায় ১০০ শতাংশ রোগীর মলদ্বারে কোনোরকম কাটাছেঁড়া ছাড়া চিকিৎসা করা সম্ভব।
প্রচলিত অপারেশনে মলদ্বারের তিনটি মাংস পিণ্ড কাটতে হয়। যা আজকাল আমরা শুধু তাদের জন্যই করি যারা রিং লাইগেশনের জন্য উপযুক্ত নয় এবং লংগো অপারেশনের যন্ত্র কিনতে অক্ষম। লেজার দিয়ে পাইলস অপারেশন প্রচলিত অপারেশনের মতোই।
পার্থক্য শুধু এতটুকু যে এ ক্ষেত্রে লেজার বিম দিয়ে কাটা হয় এবং প্রচলিত অপারেশনে সার্জিক্যাল নাইফ দিয়ে কাটা হয়।
প্রচলিত অপারেশনের মতো লেজার অপারেশনেও তিনটি ক্ষত স্থান হবে। লেজার অপারেশনের পর সাধারণত অপারেশনের মতোই ব্যথা হয়, ঘা শুকাতে ১-২ মাস সময় লাগে। প্রচলিত অপারেশনের মতোই একই ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ইংল্যান্ডের খ্যাতনামা সার্জন অধ্যাপক ডা: নিকলসের মতে লেজার সার্জারিতে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নেই।
বরং এতে অত্যন্ত ব্যয়বহুল যন্ত্র এবং বিশেষ প্রশিক্ষণের দরকার হয়। এ ছাড়া নিরাপত্তার জন্য চোখে গগলস পরতে হয়। চিকিৎসা ব্যয়ও বেশি। পাইলস চিকিৎসার জন্য বহু ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। যেমন- ইনজেকশন, রিংলাইগেশন, ইলেকট্রোকোয়াগুলেশন, আল্ট্রয়েড, ক্রায়োথেরাপি, ইনফ্রারেড ফটোকোয়াগুলেশন, এনাল ডাইলেটেশন, লেজার থেরাপি, প্রচলিত অপারেশন এবং লংগো অপারেশন।
সব ধরনের পদ্ধতির মেরিট এবং ডিমেরিট বিবেচনা করলে এবং বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সার্জনদের প্র্যাকটিস বিবেচনা করলে তিনটি পদ্ধতি বেশি প্রচলিত আর তা হচ্ছে রিংলাইগেশন, লংগো অপারেশন ও প্রচলিত অপারেশন।
রিংলাইগেশন ও লংগো অপারেশনে মলদ্বারে কোনোরূপ কাটাছেঁড়া ছাড়াই ৯০-৯৫ শতাংশ রোগীর পাইলস রোগের সমাধান সম্ভব।

লেখক : বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ বিশেষজ্ঞ, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, (অব) কলোরেকটাল সার্জারি বিভাগ, বিএসএমএমইউ, ঢাকা।
চেম্বার : ইডেন মাল্টি-কেয়ার হসপিটাল, ৭৫৩ সাতমসজিদ রোড, (স্টার কাবাব সংলগ্ন) ধানমন্ডি, ঢাকা।
ফোন : ০১৭৫৫৬৯৭১৭৩-৬।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবার কবরে শুয়ে ছেলের প্রতিবাদ ইসরাইলি হামলায় গাজায় আরো ৭১ জন নিহত পানছড়ি উপজেলায় চলমান বাজার বয়কট স্থগিত ঘোষণা আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে : দুদু যুক্তরাষ্ট্র টি-টোয়েন্টি দলে নিউজিল্যান্ডের এন্ডারসন লড়াই ছাড়া পথ নেই : নোমান জার্মানির অর্থ যেভাবে সিরিয়ায় যুদ্ধাপরাধে ব্যবহার হচ্ছে জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেনের মেয়াদ বাড়ল

সকল