মাত্র ৪ বার বল পেয়েই ইংল্যান্ডের নায়ক ওয়াটকিন্স
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১১ জুলাই ২০২৪, ১৩:৩৩
গত বুধবারের আগে পর্যন্ত পুরো ইউরোয় খেলেছিলেন মাত্র ২২ মিনিট। সেই অলি ওয়াটকিন্সকে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ৮১ মিনিটে মাঠে নামিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। মাত্র চার বার বল পায়ে লাগিয়েছিলেন ওয়াটকিন্স। অ্যাস্টন ভিলার স্ট্রাইকারের জন্য সেটাই যথেষ্ট ছিল। ৯০ মিনিটের মাথায় তার করা গোলেই জিতেছে ইংল্যান্ড। পৌঁছে যায় ইউরো কাপের ফাইনালে।
১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আরো একবার বড় ট্রফি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে ইংল্যান্ডের। গত ইউরো কাপের ফাইনালে উঠেছিল তারা। সে বার হারতে হয়েছিল ইতালির কাছে। এবার সামনে স্পেন।
নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে গোল করে রাতারাতি নায়ক হয়ে যাওয়া ওয়াটকিন্স দেরি করে অনুশীলনে আসার জন্য পরিচিত। বুধবার রাতে তার গোলটিও এলো দেরিতে, নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মিনিটে।
২৮ বছরের ওয়াটকিন্সের সিনিয়র ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু ২০১৪ সালে। ওই সময় তিনি ছিলেন এক্সেটার সিটিতে। তবে সেই ক্লাব লোনে তাকে ছেড়ে দিয়েছিল ওয়েস্টন সুপার মেয়রের হয়ে খেলতে। ইংল্যান্ডের সেই ক্লাবেই ওয়াটকিন্সের ফুটবল জীবন শুরু। ওয়াটকিন্সের দোষ ছিল একটাই, তিনি ঠিক সময়ে অনুশীলনে পৌঁছাতে পারতেন না। সময় মেনে কাজ করা ওয়াটকিন্সের অভ্যাসে নেই।
তার পুরনো কোচ রায়ান নর্থমোর বলেন, ‘ও এক্সটার থেকে আসত। অনেকটা দূর। তাই রোজ দেরি হতো। কিন্তু দলের বাকিরা ওকে কোনো ছাড় দিত না। ওয়াটকিন্স অনেক ধরনের অজুহাত দিত। কিন্তু দেরি করার জন্য পাঁচ ইউরো করে দিতেই হতো।’
শুধু দেরি করে আসাই নয়, প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু আনতেও ভুলে যেতেন ওয়াটকিন্স। নর্থমোর বলেন, ‘খেলার সরঞ্জাম আনতে ভুল যেত। বাকিরা তখন আরো বেশি করে ওর ঘাড়ে চেপে বসত। দ্বিগুণ জরিমানা নিত। মৌসুমের শেষে সেই জরিমানার পরিমাণ এতটাই হয়ে গিয়েছিল যে সেই টাকায় স্পেন ঘুরে এসেছিল ওরা। ওয়াটকিন্সকেও নিয়ে গিয়েছিল। চারজনের ঘোরার টাকা ওই জরিমানা থেকেই উঠে এসেছিল।’
সময়ে অনুশীলনে পৌঁছাতে না পারা ওয়াটকিন্সকে তবু কেন দলে রাখা হয়েছিল, তা নিয়ে নর্থমোর বলেন, ‘একজন ১৮ বছরের ছেলের পক্ষে দলের ৯ নম্বর পজিশনে খেলা সহজ ছিল না। বড় দায়িত্ব। ও সেই দায়িত্ব নেয়ার জন্য তৈরি ছিল।’
ওয়াটকিন্সের সাফল্য স্বস্তি দিয়েছে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি কেনকেও। তিনি ম্যাচ শেষে বলেন, ‘আমরা বড় দল। এই রকম দলে খেলতে হলে সব সময় তৈরি থাকতে হয়। পাঁচ মিনিট হোক বা এক মিনিট, যতক্ষণই খেলার সুযোগ পাক, তার মধ্যেই বাকিদের থেকে নিজেকে আলাদা করে চেনাতে হয়। ওয়াটকিন্স এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল। ধৈর্য ধরে বসেছিল। মাঠে নামার সুযোগ আসতেই ও রকম গোল করে দিলো! দুর্দান্ত।’
১৯৬৬ সালে ফুটবল বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। তাছাড়া বলার মতো কোনো সাফল্য নেই তাদের ফুটবলে। কিন্তু যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগকে ইউরোপের সেরা মনে করা হয়, বড় প্রতিযোগিতায় সেই দেশের সাফল্যের হার বেশ খারাপ। ২০১৬ সালে দায়িত্ব দেয়া হয় সাউথগেটকে। আইসল্যান্ডের কাছে হেরে ইউরো থেকে বিদায় নেয়ার পর পরই কোচ করা হয়েছিল তাকে। সাউথগেটের প্রশিক্ষণে বদলাতে থাকে ইংল্যান্ড। ২০১৮ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলে। ২০২১ সালে ইউরো কাপের ফাইনালে ওঠে। শেষ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল ইংল্যান্ড। এবারের ইউরো কাপে আবার ফাইনালে কেনেরা।
আর দলকে ফাইনালে তোলার নেপথ্যে ওয়াটকিন্স। খেলা শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে তাকে নামানোর সিদ্ধান্ত সাউথগেটের। তিনি ফিল ফোডেনকে তুলে নামান কোল পামারকে। প্রায় একইসাথে কেনকে তুলে নামান ওয়াটকিন্সকে। ওই জোড়া বদলই কাজে লাগে।
ওয়াটকিন্স বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই অপেক্ষা করছিলাম এই মুহূর্তটার জন্য। সন্তানদের নামে কসম খেয়ে বলছি, আমি পামারকে বলেছিলাম, আমরা একসাথে নামছি, তুমি আমাকে গোল বানিয়ে দেবে।’
৯০ মিনিটের মাথায় পামারের বাড়িয়ে দেয়া পাস থেকেই গোল করেন ওয়াটকিন্স।
রোববার রাতে স্পেনের বিরুদ্ধে ওয়াটকিন্স শুরু থেকে খেলবেন কিনা জানাননি কোচ। কিন্তু ওয়াটকিন্স যখনই খেলতে নামুন, দলকে জেতানোর জন্য তৈরি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা