১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ব্রাজিল-স্পেন শ্বাসরুদ্ধকর ৬ গোলের ম্যাচে জেতেনি কেউ!

ব্রাজিল-স্পেন শ্বাসরুদ্ধকর ৬ গোলের ম্যাচে জেতেনি কেউ! - ছবি : সংগৃহীত

গোলের পর গোল হলো, রুদ্ধশ্বাস লড়াই হলো। সান্তিয়াগো বার্নাব্যু থেকে উত্তেজনা ছড়ালো গোটা দুনিয়া জুড়ে। যেখানে ছেড়ে কথা বলেনি কেউ, চোখ রাঙিয়েছে সমানে সমানে। শুরু থেকে শেষ, লড়াইয়ের তীব্রতা কমল না এতটুকু। তবে নাটকীয়তায় ঠাসা ম্যাচটিও শেষ পর্যন্ত যদিও দেখল না বিজয়ীর মুখ।

মঙ্গলবার রাতে মাদ্রিদের সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে অনুষ্ঠিত ফিফা প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল ও স্পেন। বড় দুই দলের লড়াইয়ে উত্তেজনার কমতি ছিল না। তবে ছয় গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে জেতেনি কেউ। জমজমাট লড়াই শেষ হয়েছে ৩-৩ সমতাতে।

একটি ‍ফুটবল ম্যাচ থেকে যা যা প্রত্যাশা করা হয় সব রসদই যেন ছিল এ ম্যাচে। শুরুতে স্পেনের একচ্ছত্র দাপট, এরপর ব্রাজিলের রূপকথার গল্পের মতো ঘুরে দাঁড়ানো। শেষ মুহূর্তের অবিশ্বাস্য গোলে হারতে হারতে ব্রাজিলের বেঁচে আসা, স্পেনের জিততে না পারার হতাশা; সব মিলিয়ে ষোলআনা শিহরণ ছড়ানো একটা ম্যাচ ছিল।

ম্যাচের ৩৬ মিনিটে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। তবে ১৪ মিনিটের ব্যবধানে সেই দুই গোল পরিশোধ করে ফেলে সেলেসাওরা। শেষদিকে পেনাল্টি পেয়ে ফের এগিয়ে যায় স্পেন। জয়টাও প্রায় পেয়েই গিয়েছিল, তবে শেষ বাঁশি বাজার আগে তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পেনাল্টি। এবার পেনাল্টি মান বাঁচায় ব্রাজিলের।

ম্যাচের ১২তম মিনিটেই এগিয়ে যায় স্পেন। ধারাবাহিক আক্রমণ চালিয়ে পেনাল্টি আদায় করে নেয় তারা।স্বাগতিকদের আক্রমণে সামলাতে না পেরে বক্সের ভেতর লামিনে ইয়ামালকে ফাউল করে বসেন জোয়াও গোমেজ। স্পট কিক থেকে গোল করতে ভুল করেননি রদ্রি।

৩৬তম মিনিটে স্পেন ফের এগিয়েছে যায়। দুর্দান্ত এক গোলে ২-০ লিড এনে দেন দানি অলমো। ইয়ামালের পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর একাধিক ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারকে বোকা বানান অলমো।

দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না ব্রাজিল। বল পায়েই রাখতেই হিমশিম খাচ্ছিল তারা। তবে ভাগ্যের সহায়তায় ৪০তম মিনিটে গোলমুখ খুলে ফেলে তারা। গোলটি আসে স্পেন গোলরক্ষকের ভুলে। সতীর্থের ব্যাকপাস আরেকজনকে দেয়ার চেষ্টায় রদ্রিগোর পায়ে বল তুলে দেন উনাই সিমোন।

এমন উপহার পেয়ে কোনো ভুল করেননি রদ্রিগো। অনেকখানি এগিয়ে থাকা গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠান রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড। ব্যবধান ২-১ করে ব্রাজিল। এই ব্যবধানেই বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতির পর রাফিনিয়াকে তুলে বিস্ময়-বালক এনদ্রিককে মাঠে নামান দরিভার। বার্নাব্যুকে মাতিয়ে তুলতে এনদ্রিকের সময় লাগল মাত্র ৪ মিনিট। বক্সের ভেতর দৃষ্টিনন্দন এক ভলিতে গোল করে ব্রাজিলকে ২-২ সমতায় ফেরান ১৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার।

ব্রাজিল সমতা ফেরানোর পর দুই দলই আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকে সমান তালে। তবে ৮৫ মিনিটে ফের পেনাল্টি আদায় করে নেয় স্পেন। ডি-বক্সে দানি কারভাহালকে ফাউল করে স্পেনকে পেনাল্টি উপহার দেন বেরালদো। এবারও ভুল করেননি স্পেন অধিনায়ক রদ্রি। গোল করে স্পেনকে লিড এনে দেন ৩-২ গোলে।

আক্রমণের তেজ বাড়ালেও এই গোল পরিশোধ দিতে পারছিল না ব্রাজিল। ম্যাচ প্রায় জিতেই যাচ্ছিল স্পেন, যখন সবে শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষায় তখনই দেখা মেলে আরেক নাটকের। কয়েক সেকেন্ড বাকি থাকতে পেনাল্টি পেয়ে যায় ব্রাজিল। ব্রাজিলের উইঙ্গার গালেনোকে বক্সে ফাউল করেন বসেন কারভাহাল।

স্পট কিকে গোল আদায় করতে ভুল করেননি পাকেতা। উল্লাসে মাতে ব্রাজিল। যদিও বিজয় উল্লাস আর করা হয়নি। রোমাঞ্চকর লড়াই শেষে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল।


আরো সংবাদ



premium cement