২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পেনাল্টি বাঁচিয়ে নায়ক ক্রোয়েশিয়ার ‘বল-সেভিক’ লিভাকোভিচ

ডমিনিক লিভাকোভিচ - ছবি : সংগৃহীত

জাপানের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে তিনি হয়ে উঠেছিলেন দলের ত্রাতা। তিনটি শট বাঁচিয়ে দলকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলেছিলেন ডমিনিক লিভাকোভিচ। শুক্রবার কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে আরো একবার পাহাড় হয়ে দাঁড়ালেন ক্রোয়েশিয়ার ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার গোলরক্ষক। ১২০ মিনিটের খেলায় তাকে একবারই মাত্র পরাস্ত করতে পারলেন নেইমাররা। টাইব্রেকারে আবার জাপান ম্যাচের ছবি দেখা গেল। আরো একবার দলকে জেতাতে বড় ভূমিকা নিলেন তিনি। ব্রুনো পেটকোভিচ যদি গোল করে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে সমতা ফেরান, তা হলে ক্রোয়েশিয়াকে তত ক্ষণ খেলায় রাখলেন লিভাকোভিচ। নইলে ব্রাজিলের ঝড়ে অনেক আগেই উড়ে যেতেন লুকা মদ্রিচরা।

প্রথমার্ধে ক্রোয়েশিয়ার গোল লক্ষ্য করে পাঁচটি শট মেরেছিল ব্রাজিল। কোনো শট থেকেই গোল হয়নি। বার বার নিজের শরীর ব্যবহার করে ওই সব বল আটকে দিয়েছেন লিভাকোভিচ। ব্রাজিলের ফুটবলারদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল, গোল করতে না পেরে কতটা হতাশ হয়ে পড়ছেন তারা। কখনো ডান পায়ে, কখনো হাতে, কখনো বা বুকে। একের পর এক বল আটকেছেন লিভাকোভিচ। দ্বিতীয়ার্ধেও ওই একই ছবি। চারটি গোল করতে পারত ব্রাজিল। কিন্তু একটিও হয়নি।

অতিরিক্ত সময়ে ক্রোয়েশিয়ার গোল লক্ষ্য করে আরো পাঁচটি শট মারে ব্রাজিল। তার মধ্যে নেইমারের গোল ছাড়া বাকি চারটি শটও বাঁচিয়ে দেন তিনি। টাইব্রেকারে মদ্রিচের কাছে সুযোগ ছিল, কারা প্রথম পেনাল্টি মারবে সেটা ঠিক করার। বিশ্বকাপে শেষ সাতটি টাইব্রেকারে যে দল প্রথমে শট মেরেছে তারা হেরেছে ছয়বার। তার পরও নিজেরা প্রথম শট মারতে যায় ক্রোয়েশিয়া। কারণ, গোলরক্ষকের উপর ভরসা ছিল তাদের। মদ্রিচরা চেয়েছিলেন প্রথম শটে গোল করে এগিয়ে যেতে। সেটাই হয়েছে। রদ্রিগোর শট বাঁচিয়ে দেন লিভাকোভিচ। তার চোখ-মুখ বলে দিচ্ছিল, কতটা আত্মবিশ্বাস আছে তার মধ্যে। সেই আত্মবিশ্বাসে ভর করেই দলকে সেমিফাইনালে তুললেন লিভাকোভিচ।

পরিবারের সবাই শিক্ষিত। বাবা দেশের সাবেক মন্ত্রী। দাদা চিকিৎসক, দাদি শিক্ষক। কিন্তু লিভাকোভিচ ছোট থেকেই ফুটবলের ভক্ত। ইকের ক্যাসিয়াস, ড্যানিয়েল সুবাসিচ তার আদর্শ। পরিবার অবশ্য সব সময় পাশে থেকেছেন লিভাকোভিচের। স্বপ্ন পূরণে তাঁকে সাহস জুগিয়েছেন বাবা, মা।

তবে জাতীয় দলের জার্সিতে কেরিয়ারের শুরুটা ভালো হয়নি লিভাকোভিচের। ২০১৬ সালের মে মাসে প্রথম ক্রোয়েশিয়া শিবিরে ডাক পান তিনি। পরের বছর চিন কাপে চিলির বিরুদ্ধে অভিষেক হয় তার। সেই ম্যাচে টাইব্রেকারে বেশ কিছু ভুল করেছিলেন তিনি। তাঁর বগলের তলা দিয়ে বল গোলে চলে গিয়েছিল। লিভাকোভিচের ভুলে ম্যাচ হারে ক্রোয়েশিয়া। ওই গোলরক্ষকই এ বার হয়ে উঠলেন দেশের নায়ক।

২০১৮ সালের বিশ্বকাপেও দলের সাথে ছিলেন লিভাকোভিচ। কিন্তু নিয়মিত সুযোগ পেতেন না। লভ্রে কালিনিচের খারাপ ফর্মের জন্য ২০২০ সালের ইউরো কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্ব থেকে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক হয়ে যান তিনি। তার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

২০১৮ সালের বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ছিলেন সুবাসিচ। তিনি সেবার টাইব্রেকারে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ও কোয়ার্টার ফাইনালে দলকে জিতিয়েছিলেন। ওই কাজ এ বার করলেন তাকে আদর্শ মেনে চলা লিভাকোভিচ।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement