১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের আগে আলোচনায় টাইব্রেকার

আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের আগে আলোচনায় টাইব্রেকার - ছবি : সংগৃহীত

সাবারই আকাঙ্ক্ষা আর্জেন্টিনা- ব্রাজিলের খেলা দেখা! তাহলে কী সেমিতে আর্জেন্টিনা- ব্রাজিলের দেখা হবে? কাল সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন করা হলো আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্ক্যালোনিকে। তার সোজা জবাব, ‘আরে সেমি ফাইনালতো আরো পরে। আগে আমাদের জিততে হবে কোয়ার্টার ফাইনালে।’

আজ শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ম্যাচের আগে কাল মেইন মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বেশি আলোচনায় ছিল টাইব্রেকার। কারণ ডাচদের ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায় মেসিদের কাছে টাইব্রেকারে হেরেই। আবার আর্জেন্টিনারো ২৮ বছর পর ফাইনালে খেলা হয়েছিল এ পেনাল্টি শ্যুট আউটে জিতেই। তাই কাল দু’দলের ভিন্ন ভিন্ন সংবাদ সম্মেলন জুড়েই ছিল এই টাইব্রেকার প্রসঙ্গ।

আজ বাংলাদেশ সময় রাত একটায় লুসাইল স্টেডিয়ামে দেখা হবে এই দু’দলের। ডাচ কোচ লুই ফন গাল বা লিওনেল স্ক্যালোনি কেউ বলেননি তারা ম্যাচকে টাইব্রেকারে নিতে চায়। দু’কোচেরই জবাব, আমাদের লক্ষ্য ৯০ মিনিটের মধ্যেই খেলার শেষ করতে। আর হ্যাঁ, যদি ম্যাচ স্পট কিকে গড়ায় তাহলে আমরা প্রস্তুত। গতকাল এবং গত পরশু দু’দলই এ পেনাল্টিকে গোল করা অনুশীলন করেছে।

আর্জেন্টিনা এবং নেদারলান্ডস এ পর্যন্ত ৯ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে জয়ের পাল্লা ইউরোপিয়ানদেরই ভারী। তাদের চারম্যাচে জয়ের বিপরীতে আর্জেন্টিনার জয় তিনবার। তবে কোনোবারই আর্জেন্টিনা ডাচদের ৯০ মিনিটের ম্যাচে হারাতে পারেনি।

১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে লুইস সিজার মেনোত্তির দল অতিরিক্তি সময়ের গোলে ৩-১ করে নোরলান্ডসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে দু’দলের খেলা। সে খেলা গোল শূন্য ড্র হয়। ২০১৪ সালের সেমিফাইনালে দলের খেলা গোলশূন্যতে ১২০ মিনিট পার হওয়ার পর গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরোর কৃতিত্বে জয় আর্জেন্টিনার। আর্জেন্টিনা সর্বশেষ যে ১৩টি বিশ্বকাপের নক আউট ম্যাচ খেলেছে ইউরোপিয়ান দেশগুলোর বিপক্ষে এর মধ্যে ৭টিই গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে। তাই আজো এই ম্যাচের জয় পরাজয় ৯০ মিনিটে না হওয়ার সম্ভাবনা কোনো অংশেই কম নয়।

আর্জেন্টিনা ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে ডাচদের কাছে এই কোয়ার্টার ফাইনালে ১-২ গোলে হেরেছিল। নেদারল্যান্ডস তাদের সর্বশেষ ২০ বিশ্বকাপের ম্যাচে কোনো নন ইউরোপিয়ান দলের কাছে ৯০ মিনিটের ম্যাচে হারেননি। তাদের সর্বশেষ হারটা ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের কাছে। কোচ লুই ফন গাল দায়িত্ব নেয়ার পর গত ১৯ ম্যাচে অপরাজিত নেদারল্যান্ডস। এই কোচের অধীনেই গত ১১টি বিশ্বকাপের ম্যাচে অপরাজিত ডাচরা। এটা তাদের জাতীয় দলের সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড।

অন্য দিকে আর্জেন্টিনা গত ৪০ ম্যাচে একটি খেলাতেই হেরেছিল। তা কাতার বিশ্বকাপে সৌদিআরবের কাছে। দু’দিন আগে আর্জেন্টিনার ফুটবলার অ্যাঞ্জল ডি মারিয়া বলেছিলেন তার দেখা সবচেয়ে বাজে কোচ হলেন লুই ফন গাল। এই প্রসঙ্গে ডাচ কোচ বলেন, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকার সময় নানা ধরণের ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল ডি মারিয়ার। ফিটনেসেও ছিল ঘাটতি। এজন্য আমি তাকে একাদশে না খেলানোয় সে অসন্তুস্ট ছিল। কোচতো সব সময় সেরাদেরই মাঠে নামাবে।

কোচ ভন গাল জানান, আমাদের আজকের ম্যাচে লক্ষ্যই থাকবে নির্ধারিত সময়েই খেলা শেষ করা। এরপরো প্রস্তুত টাইব্রেকার নিয়ে। সংবাদ সম্মেলনে আসা ডিফয় এমফিসও উল্লেখ করলেন তা। তার মতে, গ্যালারিতে আর্জেন্টিনার দর্শকের ব্যাপক উপস্থিতি থাকবে। এরপরো আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। এটা কোনো চাপও নয়। কারণ আমরা পেশাদারী।

আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার ম্যাক অ্যালিস্টার জানান, আমরা যদি আমাদের খেলাটাই খেলতে পারি তাহলে জিততে কোনো সমস্যাই হবে না। আমরা ম্যাচটা উপভোগ করতে চাই। তবে ডাচরা অবশ্যই টাফ প্রতিপক্ষ। আমরা চাইবো ৯০ মিনিটেই খেলা শেষ করতে।

১১ দিনে চার ম্যাচ খেলা আর্জেন্টিনা দলে ভর করছে ইনজুরিও। সর্বশেষ মিডফিল্ডার ররিগো ডি পল এই বাজে সংবাদ শোনান। যদিও কাল স্ক্যালোনি তথ্য দেন, ডি পল ঠিকই আছে। এরপরও ডি মারিয়া এবং ডি পলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত মেডিক্যাল টিমের সাথে কথা বলেই। কোচ জানান, মেসিকে আটকাতে প্রতিপক্ষরা কৌশলের আশ্রয় নিবেই। কিন্তু আমরা আমাদের টেকনিকে তাদের বোকা বানাবো।’

টাইব্রেকারে প্রসঙ্গে বলেন, ‘টাইব্রেকার নিয়ে কেন কথা বলছেন। আমরাতো ৯০ মিনিটেই জিততে চাই। এজন্য আক্রমণাত্মক থাকবে আমাদের খেলা। এরপরও এই স্পট কিকের জন্য খেলোয়াড়দের অনুশীলন করানো হয়েছে।’


আরো সংবাদ



premium cement