২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

হাঙ্গেরির স্বপ্ন ভেঙ্গে সেমিফাইনালে ইতালি

হাঙ্গেরির স্বপ্ন ভেঙ্গে সেমিফাইনালে ইতালি - ছবি : সংগৃহীত

চার দলের সেমিফাইনালে যেতে এই ম্যাচে ড্র করলেই চলত হাঙ্গেরির। ইতালির সামনে জয়ের বিকল্প ছিল না। কিন্তু আসর জুড়ে চমক জাগানিয়া পারফরম্যান্স দেখানো হাঙ্গেরি ‘আসল’ লড়াইয়ে নিজেদের হারিয়ে খুঁজল। প্রতিপক্ষকে তারা উপহার দিল গোল। ফরোয়ার্ডরা কাজে লাগাতে পারলেন না সুযোগ। দারুণ জয়ে উয়েফা নেশন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠার লক্ষ্য পূরণ করল রবার্তো মানচিনির দল।

হাঙ্গেরির বুদাপেস্টের পুসকাস অ্যারেনায় সোমবার রাতে উয়েফা নেশন্স লিগে 'এ' লিগের তিন নম্বর গ্রুপের শেষ ম্যাচে হাঙ্গেরির সাথে ২-০ গোলে জিতেছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালি। ইতালির হয়ে গোল দুটি করেন জিয়াকোমো রাসপাদোরি ও ফেডেরিকো দিমারকো।

২৭তম মিনিটে প্রথম এগিয়ে যায় সফরকারী দল। ইতালিকে একরকম গোল উপহার দেয় হাঙ্গেরি। এক ডিফেন্ডার ব্যাকপাস দেন গোলরক্ষকের উদ্দেশে। এগিয়ে এসে গোলরক্ষক গুলাসি বল ক্লিয়ার করতে পারেননি ইতালির উইলফ্রেদের চাপে পড়ে। কাছেই বল পেয়ে ফাঁকা জালে বল পাঠান জিয়াকোমো রাসপাদোরি। গত শুক্রবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানের জয়েও দলের একমাত্র গোলটি করেছিলেন ২২ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ হারায় ইতালি। রাসপাদোরির পাসে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জিওভান্নি দি লরেন্সোর নিচু শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

বিরতির আগে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি হাঙ্গেরির উইলি ওরবান। দমিনিক সোবোসলাইয়ের ফ্রি-কিক ডি-বক্সে পেয়ে আদাম সালাই পাস দেন দূরের পোস্টে, কিন্তু কাছ থেকে ফাঁকা জালে শট নিতে পারেননি আরবি লাইপজিগের এই ডিফেন্ডার। ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৫১তম মিনিটে আবারো সুযোগ হারায় হাঙ্গেরি। ডাবল সেভ করে ইতালিকে গোল হজম করা থেকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।

পরের মিনিটেই উল্টো ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইতালি। নিকোলো বারেল্লা ডি-বক্সে খুঁজে নেন ক্রিস্তানতেকে। ডান দিকের বাইলাইনের কাছ থেকে এই মিডফিল্ডারের পাস দূরের পোস্টে পেয়ে ফাঁকা জালে বল পাঠাতে একটুও ভুল করেননি ফেদেরিকো দিমারকো।

৫৫তম মিনিটে আরেকটি দারুণ সেভ করেন দোন্নারুম্মা। কাছ থেকে কালাম স্তাইলিসের হেড পা দিয়ে ফেরান পিএসজির গোলরক্ষক। শেষ দিকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেনি সফরকারীরা। তবে ঠিকই ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রবার্তো মানচিনির দল।

তবে ম্যাচটি ইতালি জিতলেও বল দখল থেকে শুরু করে আক্রমণ সবখানেই এগিয়ে ছিল হাঙ্গেরি। শুধু কাজের কাজ গোলটিই আদায় করতে পারেনি তারা। ৫৩ ভাগ বল দখল ছিল তাদের কাছে বিপরীতে ইতালির কাছে ছিল ৪৭ ভাগ। ইতালি ১১টি শট নিতে পারে যার তিনটি মাত্র লক্ষ্যে ছিল এবং দুটি শটকে তারা গোলে পরিনত করে, বিপরীতে হাঙ্গেরির ১৩টি শটের ৬টিই লক্ষ্যে ছিল কিন্তু একটিও গোলের মুখ দেখেনি। বলা যায় ছয় ছয়টি সেভ দিয়ে একাই হাঙ্গেরিকে রুখে দিলেন ইতালিয়ান গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।

এই টুর্নামেন্ট থেকে হাঙ্গেরির অর্জন অবশ্য কম নয়। গত জুনে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে আসর শুরুর পর তারা হেরে যায় ইতালির মাঠে গিয়ে। পরের ম্যাচেই ১-১ গোলে রুখে দেয় জার্মানদের। এরপর ইংল্যান্ডের মাঠে তারা তুলে নেয় ৪-০ গোলের বিস্ময়কর এক জয়। পরের ম্যাচে গত শুক্রবার জার্মানিকে তাদের মাঠেই ১-০ গোলে হারিয়ে তিন সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নে গড়া ‘গ্রুপ অব ডেথ’ থেকে শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে যাওয়ার সম্ভাবনা জাগায় হাঙ্গেরি। কিন্তু ইতালির বিপক্ষে পেরে উঠল না তারা।

এ জয়ে ৬ ম্যাচে তিন জয় ও দুই ড্রয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ লিগের তিন নম্বর গ্রুপের সেরা হলো ইতালি। সমান ম্যাচে তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে হাঙ্গেরি।

গ্রুপের আরেক ম্যাচে ইংল্যান্ড ও জার্মানির লড়াই ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে জার্মানরা। আগেই দ্বিতীয় স্তরে নেমে যাওয়া ইংলিশদের পয়েন্ট স্রেফ ৩।


আরো সংবাদ



premium cement