২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

শুভ জন্মদিনে মেসি

শুভ জন্মদিনে মেসি - ছবি : সংগৃহীত

যুগে যুগে যত রথী মহারথী ফুটবলের রাজ্যে এসেছিলেন রাজত্ব কায়েম করতে, তার যে কয়েকজন আলোর দূতি ছড়িয়েছে এবং মিঠি মিঠি আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

২৪ জুন ১৯৮৭ আর্জেন্টিনার ছোট্ট শহর রোজারিও তে বাবা হোর্হে হোরাসিও এবং মা সেলিয়া মারিয়ার ঘরে জন্ম নেয়া এক বিস্ময় বালক যার পুরো নাম লিওলেন আন্দ্রেস মেসি।যাকে লিওলেন মেসি কিংবা ছোট্ট মেসি নামে বেশি চেনে গোটা দুনিয়ার মানুষ। মাত্র ১১ বছর বয়সে হরমোন গ্রোথ জটিলতায় ভুগছিলেন কিন্তু বাবা পেশায় একজন ইস্পাত কারখানায় কাজ করা শ্রমিক তার পক্ষে চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করার সামর্থ্য ছিল না। সেই সময় এগিয়ে আসেনি আর্জেন্টাইন কোন ফুটবল ক্লাব কিংবা সংগঠন। ১১ বছর বয়সী বালকের ফুটবল প্রতিভা দেখে কাতালান ক্লাব বার্সা কর্তৃপক্ষ হয়তো তখনই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন যে এ ছোট্ট বালকটিই একদিন সেরাদের সেরা হবে। তাই তো বার্সালোনার নিজে অর্থায়নে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে চুক্তি স্বাক্ষর শেষে যোগ দেন বার্সা জুনিয়র দলে। ওই বছর ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়ে পরের বছর ২০০৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে বার্সেলোনার মূল দলে জায়গা করে নেয় এবং অপরিহার্য খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে।

গল্পের শুরুটা ঠিক এখানেই। বার্সায় কাটানো দু'দশকে সব ইতিহাস যেন নিজের করে নিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন ক্ষুদে যাদুকর বার্সাকে দিয়েছে দুহাত ভরে। একই দলের হয়ে রেকর্ড ৫২০ ম্যাচ খেলে ৪৭৪টি গোল করে যা এখন পর্যন্ত কোনো ফুটবলারের পক্ষে একটি ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ। ক্লাব ক্যারিয়ারে জিতেছে ৭টি স্প্যানিশ কাপ, ১০টি স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়ন, ৩টি ইউয়েফা সুপার কাপ, ৩টি ক্লাব বিশ্বকাপ, ৪টি চ্যাম্পিয়নন্স‌ লীগসহ সর্বমোট ৩৩টি ট্রফি যা একজন ফুটবলারের একই ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ!

এসব তো ক্লাবের হয়ে অর্জন ব্যক্তি মেসির অর্জন কম কিসে সর্বমোট ৭টি ব্যালন ডি অর জিতেছেন যা ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ! ৬টি ইউরোপীয় গোল্ডেন বুট! এত কিছুর পরও নিন্দুকেরা বার বার ধুয়ে দিয়েছেন বলেছেন ক্লাবের হয়ে এত কিছু অর্জন করলেও জাতীয় দলের হয়ে মেসি বড়ই কৃপণ।

২০০৫ সালে আর্জেন্টিনার দলে অভিষেক হয় এখন পর্যন্ত ১৬২ ম্যাচ খেলে ৮৬টি গোল করেন যা আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সেরা গোলদাতা এবং দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ। ২০১৪ বিশ্বকাপে একক নৈপূন্য দলকে ফাইনালে নিয়ে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন করতে না পারলেও বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন। ২০১৮ বিশ্বকাপের পর অভিমান করে হঠাৎ আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দেয় কয়েক মাস পর আবার অভিমান ভুলে দলে ফেরে। ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে তার নেতৃত্বে ফুটবলের পরাশক্তি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।

সর্বশেষ ২০২২ ফাইলাসিমা কাপে ইতালিকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেন। ফুটবল ক্যারিয়ারে অপূর্ণতা বলতে শুধুমাত্র বিশ্বকাপ ট্রফি ছুঁয়ে না পারা। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ তার নেতৃত্বে অংশ নেবে আর্জেন্টিনা। মেসির ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপটা জয় করে অর্জনের ষোল কলা পূর্ণ করার কোনো কমতি রাখবে না। আজ তার ৩৫তম জন্মদিন।

শুভ জন্মদিন লিওম।


আরো সংবাদ



premium cement