১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউরোপিয়ান সুপার লিগ বিশ্বের কোটি কোটি ফ্যান কি খুশি?

ইউরোপিয়ান সুপার লিগ বিশ্বের কোটি কোটি ফ্যান কি খুশি? - ছবি : সংগৃহীত

প্রস্তাবিত ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে বিতর্ক এতটাই বেড়েছে যে ফ্যান, সাবেক খেলোয়াড়, এমনকি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কিংবা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁর মতো সরকার প্রধানরাও এতে যোগ দিচ্ছেন।

এখন পর্যন্ত যারা সরব হয়েছেন তার বেশিরভাগই এই পরিকল্পনার বিরোধী।

কিন্তু সারা দুনিয়ায় কোটি কোটি ফ্যান রয়েছে যে ১২টি সেরা ক্লাবের তারা নিয়মিতভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। এই ভাবনাটিই অনেকের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিচ্ছে, বিশেষভাবে ইউরোপের বাইরে যেসব ফ্যান থাকেন।

ইএসএল নামে পরিচিত ইউরোপিয়ান সুপার লিগের প্রস্তাবে বলা হচ্ছে, এই নতুন টুর্নামেন্টের স্থায়ী ক্লাব থাকবে ১২টি। তারা হলো, ইংল্যান্ডের আর্সেনাল, চেলসি, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও টটেনহাম, স্পেনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ, এবং ইতালির এসি মিলান, ইন্টার মিলান ও জুভেন্টাস।

ইউরোপের বর্তমান ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে এটা ভিন্ন। নিজ দেশের জাতীয় লিগে কোনো ক্লাব বিজয়ী হলে সেটি সাথে সাথে ইউয়েফাতে জায়গা পেয়ে যায়।

টিভিতে আরো উত্তেজক ম্যাচ?
এভাবেই ১২টি ক্লাব টেলিভিশনের পর্দায় সারা বিশ্বে তাদের ফ্যানদের মন মাতাবে।

এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন অ্যামেরিকার ফুটবল ফ্যানদের জন্য তো এটা খুশির খবর হওয়ার কথা। কিন্তু সবাই এতে খুশি না।

এটা সত্যি যে ইএসএল-এর খবরে ইউরোপের বাইরে থেকে অনেক ফ্যান সোশাল মিডিয়ায় তাদের খুশির কথা জানিয়েছেন।

কিন্তু ইউরোপের ভেতরের ফ্যানদের অনেকেই এই পরিকল্পনাকে মেনে নিতে পারছেন না।

তারা বলছেন, বড় ক্লাবগুলোর অর্থের লোভ বেড়ে গেছে, কারণ এই টুর্নামেন্ট থেকে ইউয়েফার চেয়েও বেশি টাকা-পয়সা কামাতে পারবে।

ধারণা করা হচ্ছে, ইএসএল থেকে ক্লাবগুলো শুধুমাত্র টিভি সম্প্রচার থেকেই বছরে ৪৮০ কোটি ডলার আয় করতে পারবে।

বর্তমান টুর্নামেন্টের আয় থেকে এটা দ্বিগুণ বেশি।

ব্রাজিলের ফ্যান জুলি চিচারিনি থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখান থেকে তিনি টুইট করেছেন, ক্লাবগুলোর তরফে এটা একটা জঘন্য লজ্জার কাজ হতে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশের মুশফিক-উস সালেহিন রিয়াল মাদ্রিদের ফ্যান। তিনি টুইটারে লিখেছেন, টাকার জন্য ইউরোপীয় ফুটবল আত্মা বিক্রি করছে।’

কিন্তু এদের বাইরে ইন্টারন্যাশনাল ফ্যানরা নতুন সুপার লিগ নিয়ে যথেষ্ট উত্তেজিত।

টুর্নামেন্ট বড়, মজাও বেশি
নাইজেরিয়ার ফ্যান জন টুইটারের জানিয়েছেন, ইএসএল-এ তার দল চেলসি নিয়মিতভাবে ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলোর মুখোমুখি হবে, এটা জেনে তিনি খুশিই হয়েছেন।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদর সাথে চেলসির যে সেমিফাইনাল টাইয়ের ম্যাচ রয়েছে, সেটা ওই দুই ক্লাবের মধ্যে গত ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ঘটতে যাচ্ছে। সুপার লিগে এ ধরনের ম্যাচ হবে প্রতি বছর। এরকম আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে। টুর্নামেন্ট যত বড় হবে, ম্যাচেও হবে আরো বেশি মজা।’

চার্লস ওয়েশোমো থাকেন নাইজেরিয়ার লেগোস শহরে। তিনি লিভারপুলের বিরাট ফ্যান। তিনিও ইএসএল-এর প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। আমি এর পেছনে কারণ গত পাঁচ কি ছয় বছরে ফুটবলের মান অনেক কমে গেছে।’

ইউয়েফা এবং ফিফার মতো ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখন ইএসএল হলে তারা নড়েচড়ে বসার সুযোগ পাবে।

গত কয়েক দশক ধরে ইউয়েফা এবং ফিফা একচেটিয়া ব্যবসা করেছে। এ সময় অনেক কেলেঙ্কারির ঘটনা আমরা দেখতে পেয়েছি। ইএসএল হলে এখন তারা সমস্যাগুলো আরো তাড়াতাড়ি সমাধান করতে উদ্যোগী হবে। যেমন, বর্ণবাদ বা ভিএআর ইস্যুতে আমরা তাদের বিশেষ কোনো ভূমিকা রাখতে দেখিনি।’

তরুণ ফ্যানদেরই আগ্রহ বেশি
গত বছর ডিসেম্বর মাসে ইংলিশ ফ্যানদের নিয়ে বিবিসি একটি জরিপ চালিয়েছিল। তার ফলাফল থেকে দেখা গিয়েছিল ওই সময় বেশিরভাগ উত্তরদাতা এই ইএসএল পরিকল্পনার বিরোধী হলেও তরুণদের মধ্য থেকে কম বিরোধিতা করা হয়েছিল।

বয়স ৫৫-এর নিচে এমন উত্তরদাতার জানিয়েছিলেন, ইউরোপিয়ান সুপার লিগের আয়োজন করা হলে তারা খুশিই হবেন।

৫৫-এর ওপরে বয়স এমন উত্তরদাতাদের মাত্র ১০ ভাগ এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছিলেন।

তবে এটা মনে রাখা দরকার যে ইএসএল গঠনের এটা এক প্রাথমিক পদক্ষেপ। আগামী কয়েক মাস ধরে এনিয়ে একটা টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে।

যেমন, বর্তমান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ অথবা রানার-আপ প্যারিস স্যঁ-জারমেইনের মতো ক্লাবগুলো ইএসএল পরিকল্পনার সাথে নেই।

ইউয়েফা বলছে, ১২টি ক্লাবের প্লেয়াররা ভবিষ্যতে ওয়ার্ল্ড কাপের মতো টুর্নামেন্টের নিজের দেশের হয়ে খেলতে পারবেন না।

ইএসএল-এর ম্যাচগুলো দেখার জন্য ফ্যানদের আরো বেশি টাকা-পয়সা খরচ করতে হবে কি-না, তাও পরিষ্কার না। টিভি রাইটস কীভাবে বিক্রি হবে সে সম্পর্কে কোনো ব্যাখ্যা নেই।

যেমন, ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচগুলো চলতি মৌসুম থেকে ব্রাজিলে বিনা পয়সায় ফেসবুকে সম্প্রচার করা হবে। ২০১/২২ সাল থেকে ম্যাচগুলো টিভিতেও দেখানো হবে।

ইএসএল কী এসব করতে পারবে?

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

সকল