২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নেপাল ০ : ০ নেপাল

ফাইনালে নেপালকেই পেল বাংলাদেশ

-

ফাইনালে অপেক্ষাকৃত দুর্বল কিরগিজস্তানকে পেতে বাংলাদেশের ২ গোলে জয় দরকার ছিল নেপালের বিপক্ষে। অথচ দু'গোল তো দূরের কথা একটি গোলেও পরিষ্কার সুযোগ তৈরী করতে পারেনি জেমি ডে বাহিনী। আবার ডিফেন্সের দৃঢ়তায় কোনো গোলও হজম নয়। ফলে শনিবার নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামের এই খেলা গোলশূন্য ড্র হওয়ায় সোমবারের ফাইনালে নেপালেকেই পেল বাংলাদেশ।

তবে তৃপ্তি একটিই। ঢাকা থেকে আসা দলটি তিন দলের মধ্যে সেরা হয়েই ফাইনালে গেছে। আর নেপাল হয়েছে রানার্সআপ। অন্য দিকে সারাক্ষণ নেপালের অমঙ্গল কামনা করতে থাকা কিরগিজ অলিম্পিক দলকে বিদায় নিতে হলো। ফাইনালে উগ্র নেপালি দর্শকদের সামনে খেলাটা বেশ কঠিন সফরকারীদের জন্য।

রাইট ব্যাক মোহাম্মদ ইমন ও স্টপার ব্যাক মেহেদী হাসানের অভিষেক ঘটিয়ে আজ নেপালের বিপক্ষে খেলতে নামে বাংলাদেশ। কিরগিজদের বিপক্ষে জয়ী একাদশের পুরোটাতেই পরিবর্তন আনেন জেমি ডে। উদ্দেশ্য স্কোয়াডের সকলকে জুনের বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের জন্য দেখে নেয়া। ডিফেন্স লাইনে একটি ভুল ছাড়া প্রথমার্ধে ভালোই খেলেছে জামাল ভূঁইয়ারা। ম্যাচে দাপট ছিল সফরকারীদেরই। স্ট্রাইকার মাহাবুবুর রহমান সুফিল ৭ ও ৪৪ মিনিটে বলের দখল নিতে পারলে লিড আসত তখনই। প্রথম ৪৫ মিনিটে নেপালই সবচেয়ে সুযাগ পায়। ১১ মিনিটে অঞ্জন বিষ্টার ফাঁকা হেড ক্রসবার ঘেঁষে যাওয়ায় রক্ষা বাংলাদেশ দলের।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নেপালি স্ট্রাইকার সুনীল বাল মাঠে নামার পর আক্রমণে গতি আসে স্বাগতিকদের। তারা বাংলাদেশ দলের লেফট ব্যাক পজিশন দিয়ে আক্রমণ শানাতে থাকে। কোচ জেমি ডে এ অবস্থা দেখে ৭০ মিনিটের মধ্যে চার ফুটবলার বদল করেন। এরপরও বাংলাদেশ গোলের পরিষ্কার সুযোগ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ। এই দল ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে জিতবে সেটাই প্রশ্ন।

৫৪ ও ৬৫ মিনিটে নেপাল দু'বার গোলের খুব কাছে চলে যায়। ৫৯ মিনিটে সুনীল বালের পাসে সানজু রাইয়ের শট ডান দিকে শরীর ফেলে রুখে দেন সোহেল। ৬৫ মিনিটে অভিষেক রিজালের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় গোল হয়নি।

৭৫ মিনিটে ইয়াসিন আরাফাতের ক্রসে বাংলাদেশ গোল পাওয়ার উপক্রম হলেও আবদুল্লাহ’র হেড সামনে থাকা মেহেদী রয়েলের গায়ে লাগায় বল জালে যায়নি। ভুল পাসের কারণে লাল সবুজদের বেশ কয়েকটি আক্রমন নষ্ট হয়। উদ্দেশ্যবিহীন পাসও হয়ে দাঁড়ায় সমস্যা। চমৎকার খেলেছেন অভিষেক হওয়া ডিফেন্ডার মেহেদী হাসান। ইমনও ভালো করেছেন।

বাংলাদেশ দল : সোহেল, রাফি (বাদশা ৫৬ মি.) ইমন, মেহেদী, জামাল (সোহাগ ৬৫ মি.), রাকিব (বিপলু ৭২ মি.), সুফিল, আবদুল্লাহ, সুমন ( রয়েল ৬৭ মি.), মানিক (সোহেল রানা ৭৯ মি.), আরাফাত।

এবার ভুল করেননি সোহেল

সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১১ ও ২০১৮-এ বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিলো। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয়েছিলো দিল্লিতে, আর পরেরটি ঢাকায়। দুই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপই বাংলাদেশের জন্য করুণ ছিল।

ওই সময় লাল সবুজদের সর্বনাশটা করেছিল নেপালিরাই। তবে ওই খেলায় হিমালয়ের দেশটির জয়ের পেছেনে গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের অবদানই বেশি ছিল।

দিল্লিতে ০-১ ও ঢাকায় ০-২ গোলে হারে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সেই দুঃখজনক ঘটনার পর জাতীয় দলে আর খেলা হয়নি সোহেলের। যদিও দলের সাথে সবসময়ই ছিলেন ঢাকা আবাহনীর এই কিপার।

আড়াই বছর পর ওই সোহেল আবারো বাংলাদেশের গোল পোস্টে। প্রতিপক্ষ ওই নেপাল। পার্থক্য শুধু এতটুকু এবারের ভেন্যু কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়াম। তবে এবার আর ভুল করেনি শহীদুল আলম। তার কৃতিত্বে তিন জাতি ফুটবলে বাংলাদেশ ও নেপালের এই লিগ ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়।

বয়সভিত্তিক জাতীয় দল, সিনিয়র জাতীয় দল এবং আবাহনী সব পর্যায়েই ছেলে মানুষের মতো গোল হজমের বাজে নজির চট্টগ্রামের ছেলে সোহেলের। সব মিলিয়ে তার এই গোল খাওয়ার সংখ্যা ১৫/১৬টির মতো। একজন গোলরক্ষকের এই ধরনের একটি ভুলই তার ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। সেখানে সোহেল ধৈর্য ধরে খেলে যাচ্ছেন। কখনো তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। কখনো বা বিস্ময় জাগানিয়া গোল হজম।

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের অন্যতম সিনিয়র ফুটবলারও তিনি। ৬৫ মিনিটে জামালকে তুলে নেয়া হলে সোহেলের হাতেই দেয়া হয় আর্মব্যান্ড। সব মিলিয়ে ভালোই করেছেন দীর্ঘদেহী এই কিপার। ফলে নেপালের মাঠে ড্র হলো বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ। এ নিয়ে দুই দলের টানা দুই ম্যাচে গোলশূন্য ড্র হলো।


আরো সংবাদ



premium cement