২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ল্যাজিওকে উড়িয়ে দিয়ে শেষ আট অনেকটাই নিশ্চিত করলো বায়ার্ন

ল্যাজিওকে উড়িয়ে দিয়ে শেষ আট অনেকটাই নিশ্চিত করলো বায়ার্ন -

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬’র প্রথম লেগে এ্যাওয়ে ম্যাচে ল্যাজিওকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ। এর মাধ্যমে সাম্প্রতিক ঘরোয়া লিগে বাজে পারফরমেন্স থেকে বেরিয়ে আসতেও সক্ষম হয়েছে বেভারিয়ান্সরা।

রোমার স্তাদিও অলিম্পিকোতে রবার্ট লিওয়ানদোস্কির ৯ মিনিটের গোলে লিড পায় সফরকারীরা।
ইউরোপীয়ান আসরে চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নেমে কাল গোল পেয়েছেন ১৭ বছর বয়সী জামাল মুসিয়ালা। ইংলিশ এই তরুণ মিডফিল্ডারের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বায়ার্ন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি মুসিয়ালার প্রথম গোল। স্টুটগার্টে জন্মগ্রহনকারী মুসিয়ালা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী ইংলিশম্যান হিসেবে গোলের কৃতিত্ব দেখালেন।

লেরয় সানের গোলে বিরতির আগেই বায়ার্ন ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। বিরতির পরপরই ফ্রান্সেসকো আকারবির আত্মঘাতি গোলে বায়ার্নের বড় জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

ম্যাচ শেষে বায়ার্ন কোচ হান্সি ফ্লিক স্কাই স্পোর্টসকে বলেছেন, ‘কোয়ার্টার ফাইনালের পথে আমরা বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছি।’

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে জোয়াকুইন কোরেয়ার সান্তনাসূচক গোলে ল্যাজিও গোলের খাতায় নাম লেখায়। কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা বায়ার্ন মিডফিল্ডার লিও গোরেৎকা বলেছেন, ‘শুরু থেকেই আমরা আগ্রাসী ছিলাম এবং নিজেদের পরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পেরেছি। কঠিন কিছু সপ্তাহ কাটিয়ে শক্তিশালী পারফরমেন্স দেখানোটা জরুরি ছিল এবং আমরা সেটাই করে দেখিয়েছি। সম্প্রতি আমাদের সময়টা খুব একটা ভাল যাচ্ছে না। এই ধরনের একটি ম্যাচ নিজেদের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সবকিছুই পরিকল্পনা মাফিক হয়েছে, এগিয়ে যাবার জন্য এটাকেই প্রথম ধাপ হিসেবে আমরা মনে করছি।’

আগামী ১৭ মার্চ মিউনিখে ফিরতি ম্যাচে শেষ আট নিশ্চিত করতে হলে সিমোনে ইনজাগির ল্যাজিওকে অকল্পনীয় কিছু করে দেখাতে হবে। ইনজাগি বলেছেন, ‘বায়ার্ন বিশ্ব সেরা দল। পরের ম্যাচটিকে আরো সহজ করে তুলতে তাদেরকে অবশ্যই আমাদের ভুলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।’

থমাস মুলারের জায়গায় মূল একাদশে মুসিয়ালাকে সুযোগ দিয়ে ফ্লিক সকলকে হতবাক করে দিয়েছিলেন। কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ায় দলের বাইরে ছিলেন মুলার। বেঞ্জামিন পাভার্ডও করোনার কারনে বিশ্রামে ছিলেন। অন্যদিকে থাইয়ের ইনজুরির কারণে দুই মিডফিল্ডার কোরেনটিন তোলিসো ও সার্জি গ্যানাব্রিও দলে ছিলেন না। কিন্তু তারপরেও বায়ার্নকে আটকানো যায়নি। বিশেষ করে গত সপ্তাহে বুন্দেসলিগায় পাঁচ পয়েন্ট হারানোর পর আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিতে থাকা বায়ার্নকে চেপে ধরার এই একটি সুযোগ ছিল যা কোনোভাবেই কাজে লাগাতে পারেনি ল্যাজিও। উল্টো ল্যাজিওর রক্ষণভাগের ভুলে ৯ মিনিটে লিওয়ানদোস্কি গোল করে বায়ার্নকে এগিয়ে দেন। মাত্তেও মুসাচির ব্যাক-পাসে পোলিশ তারকা ল্যাজিওর অভিজ্ঞ গোলরক্ষক পেপে রেইনাকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান। এটি ছিল লিওয়ানদোস্কি ৭২তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গোল। সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় তিনি রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক তারকা রাউলকে পিছনে ফেলে তৃতীয় স্থান দখল করেছেন।

ইংলিশ অনুর্ধ্ব-২১ মিডফিল্ডার মুসিয়ালা ২৪ মিনিটে রেইনাকে কাটিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। বিরতির ঠিক আগে কিংসলে কোম্যানের শট থেকে ফিরতি বলে সানে ব্যবধান ৩-০’তে নিয়ে যান। বায়ার্ন উইঙ্গার সানে বলেছেন, ‘প্রথম মিনিট থেকেই আমরা নিজেদের প্রমান করেছি। শুধুমাত্র সুযোগ অপেক্ষায় ছিলাম এবং যখন সেটা পেয়েছি কাজে লাগিয়েছি। বলের পজিশন নিশ্চিত করে পিছন থেকে আমরা তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছি।’

বিরতির পর তিন মিনিটের মধ্যে দুই গোল হয়েছে। ৪৭ মিনিটে ল্যাজিওর কর্নার থেকে কাউন্টার এ্যাটাক করে বসে বায়ার্ন। সেই আক্রমণ থেকে নিজেদের জালে বল জড়ান আকারবি। ৪৯ মিনিটে বায়ার্নের রক্ষনভাগের ভুলে গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারকে পরাস্ত করেন কোরেয়া।

এর আগে ২০০৩/০৪ মৌসুমে গ্রুপ পর্বে চেলসির বিপক্ষে ৪-০ গোলে ঘরের মাঠে পরাজিত হয়েছিল ল্যাজিও। এদিকে এনিয়ে টানা ১৮ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে অপরাজিত থাকলো বায়ার্ন। গত ডিসেম্বরে গ্রুপ পর্বে এ্যাথলেটিকোর মাদ্রিদের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছিল জার্মান জায়ান্টরা। বাকি ম্যাচগুলোতে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছেড়েছে।
সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement