২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনী

- ছবি : নয়া দিগন্ত

টুর্নামেন্ট শুরুর ঠিক আগে নাম প্রত্যাহার ঢাকা আবাহনীর। দেশের অপর দল বসুন্ধরা কিংস গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়। শেষ ভরসা ছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের প্রথম সেমিফাইনালে তাদের দুই দফা পিছয়ে পড়ায় আকর্ষণহীন ফাইনালের শঙ্কা জাগছিল।

শেষ পর্যন্ত তার আর হতে দেয়নি মারুফুল হকের দল। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত সময়ের গোলে তারা ৩-২ হারায় ভারতের গোকুলাম কেরালা এফসিকে। ফলে ২০১৬ সালের পর আবার এই আসরের ফাইনালে চট্টগ্রামের আকাশী নীল শিবির।

৩১ অক্টোবর ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ অপর সেমিতে মুখোমুখি হতে যাওয়া মালয়েশিয়ার তেরাঙ্গানা এফসি এবং ভারতের মোহনবাগানের মধ্যকার জয়ী দল। চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ যারা দেখেননি তারা মিস করেছেন দারুন উপভোগ্য এক ম্যাচ।

বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নতিটা যেসব ক্ষেত্রেই হচ্ছে সেটা আবারও প্রমাণিত হলো। পিছিয়ে পড়েও তারা জিততে জানে। জানে শেষ সময় পর্যন্ত লড়তে। এই কারণেই ৮০ মিনিটে পিছিয়েও ৮৯ মিনিটের গোলে ম্যাচে ফেরা বাংলাদেশের ক্লাবের। এরপর অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে অর্থাৎ ১০৪ মিনিটে জয়সূচক গোল করে ফাইনাল নিশ্চিত করা।

শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে চট্টগ্রাম আবাহনী। এতে বেশ কোনঠাসা ভারতের গোকুলাম কেরালা এফসি। এই পরিস্থিতিতে যা করা দরকার সেই কাজই করেছে গোকুলাম কেরালা। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে সুযোগ পেয়েই দুই গোল আদায় ভারতীয় দলটির।

২৯ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার রিয়াদুল হাসান রাফির ভুলে বল পেয়ে ডান পায়ের বুদ্ধিদীপ্ত শটে গোকুলামকে এগিয়ে নেন হেনরি কিসোকো। ১-০ তে লিড নিয়েই বিরতিতে যায় গোকুলাম। তবে বিরতির পরপরই সমতা চট্টগ্রাম আবাহনীর। ৪৭ মিনিটে জাতীয় দলের ফুটবলার আরিফুর রহমানের থ্রু পাস বলে পেয়ে ডান পায়ের প্লেসিং শটে বন্দর নগরীর দলকে ম্যাচে ফেরান আইভরিকোস্টের চার্লস দিদিয়ের।

এরপর মন্টিনেগ্রোর লুকা এবং স্থানীয় আরিফের দুটি শট ঠেকান বিপক্ষ কিপার। চট্টগ্রাম আবাহনী যখন দ্বিতীয় গোলের অপেক্ষায় তখন ৮০ মিনিটে খর্বাকৃতির গোলরক্ষক নেহালের ভুলে ফের লিড গোকুলামের। মার্কুস যোসেফের শট নেহালের হাতের উপর দিয়ে জালে গেলে নিজেদের জয়ী ভাবতে শুরু করে গোকুলাম।

৮৩ মিনিটে জামাল ভূঁইয়া এবং ৮৮ মিনিটে দিদিয়েরের শট লক্ষ্য মিস করলে হতাশা বাড়তে থাকে আসরের স্বাগতিকদের। তখনই এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে উপস্থিত গ্যালারী ভর্তি দর্শক এবং টিভি পর্দার সামনে থাকা ফুটবল প্রেমীদের উল্লাসে মাতান সেই দিদিয়ের। ৮৯ মিনিটে গত মওসুমে রহমতগঞ্জে খেলা সাবেক সেনাবাহিনীর সদস্য সোহেল রানার কাট ব্যাকে দিদিয়েরের শটে পরাস্ত বিপক্ষ কিপার। বলের আশ্রয় সোজা জালে। ফলে ২-২ এ নব্বই মিনিটের খেলা শেষ।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের ১০৪ চার মিনিটে এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী। বদলী কায়সার আলী রাব্বীর ক্রসে প্রথমে শট নেন নাইজেরিয়ান ম্যাথু চিনেডো। সেই বল গোললাইনের উপর দাঁড়ানো কেরালার ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হলে ফিরতি বলে ম্যাথুর হেড সেই ডিফেন্ডারের হাতের বাধা ডিঙ্গিয়ে গোল লাইন অতিক্রম করে। আসরে এটি তার চতুর্থ গোল।

১১৬ মিনিটে গোকুলামের নাওসা সিংয়ের শট গোলে যাওয়ার আগে ক্লিয়ার করেন রহমত মিয়া। ১১৮ মিনিটে ভারতীয় দলের হেনরি কিসোকো লাল কার্ড পেয়ে বহিস্কৃত হন। তিনি চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডারকে কনুই দিয়ে আঘাত করায় তাকে লাল বার্ড দেখান ডর্দানের রেফারী।

অপর সেমিফাইনালে মালয়েশিয়ার তেরাঙ্গানা এফসির প্রতিপক্ষ ভারতের মোহানবাগান। গতকাল দুই সেমিফাইনালের তারিখ বদল করে আয়োজকরা। এই দুই সেমিফাইনাল হওয়ার কথা ছিল। সেমিফাইনাল দুই দিনে হওয়ায় এখন ফাইনাল ৩০ অক্টোবরের বদলে ৩১ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement