২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

 জয়ের অপেক্ষার অবসান কী হবে জামালদের?

- ছবি : সংগৃহীত

এ এক ঐতিহাসিক দিন। তা বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য। বিশ্বের দুই প্রান্তে মঙ্গলবার বাংলাদেশ এবং ভারতের দুই ফুটবল ম্যাচ। একটি শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল খেলা। অন্যটি রেসে এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। ভুটানের চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ছয়টায় অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা সাফের ফাইনালে মুখোমুখি দুই দল। আর ভারতের মাঠে কোলকাতার সল্টলেকে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ভারতীয় সিনিয়র পুরুষ দলের সামনে বাংলাদেশ সিনিয়র দল। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এই ম্যাচ। এবারের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে এখনও কোনো ম্যাচ জেতা হয়নি লাল সবুজদের। দুই খেলাতেই হার জামাল ভূঁইয়াদের।

অন্য দিকে ভারত দুই ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট সংগ্রহ করে এগিয়ে আছে জেমি ডে বাহিনীর চেয়ে। বাংলাদেশ সর্বশেষ কবে জিতেছিল ভারতের বিপক্ষে তা অনেকেই ভুলে গেছেন। তাদের সর্বশেষ জয় ঢাকায় ২০০৩ সালে। সাফ ফুটবলের সেমিফাইনালে। ১-১ এ খেলা শেষ হওয়ার পর মতিউর মুন্নার গোল্ডেন গোলে জয় জর্জ কোটানের দলের। যদিও অফিসিয়ালি তা ড্র হিসেবই উল্লেখ আছে। সে হিসেবে লাল সবুজরা সর্বশেষ তাদের হারিয়েছিল গত শতাব্দীতে। ১৯৯৯ এর কাঠমান্ডু এস এ গেমসের সেমিফাইনালে। ১-০তে জয় সাহাজউদ্দিন টিপুর গোলে। যদিও দুই দলের গত দুই ম্যাচ ড্র হয়। ২০১৩ সাফে ১-১ এবং ২০১৪ এর ফিফা প্রীতি ম্যাচ ২-২ এ শেষ হওয়া। এবার কি জেমি ডে বাহিনী পারবে ভারত বধের ২০ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে।

দুই দলের আগের ২৮ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মাত্র দু’টিতে। বাকী ২৬ ম্যাচের ১৫টিতে জয় ভারতীয়দের। ড্রতে খেলা শেষ হয় অবশিষ্ট ১১ ম্যাচ। জয় পরাজয়ের পরিসংখান ছাড়া র‌্যাংকিংও এগিয়ে রেখেছে ভারতকে। তাদের অবস্থান ১০৪। আর বাংলাদেশ তলানীর দিকে। ১৮৭ তে। এবারের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও তাদের পারফরম্যান্স বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। তারা নিজেদের মাঠে ওমানের কাছে ১-২ গোলে হেরেছিলে ৯০ মিনিটের গোলে। ৮১ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল ভারত। এরপর গত ম্যাচে তাদের লড়াকু গোলশূন্য ড্র এশিয়া চ্যাম্পিয়ন কাতারের বিপক্ষে।

অবশ্য এবারের ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে জামাল ভ’ঁইয়ারা দুই ম্যাচে হারলেও তাদের পারফরম্যান্স ছিল ইতিবাচক। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তারা দাপটের সাথে খেলেও হেরেছে ০-১ গোলে। ইনজুরি টাইমে রেফারী পেনাল্টি না দেয়ায় সে ম্যাচে পরাজয় এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। আর ১০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কাতারের টুটি চেপে ধরেও জয় বঞ্চিত জেমি ডে’র শিষ্যরা। তাদের চারটি শট প্রতিহত হয় গোল লাইন থেকে। গোলের মোট চান্স মিস হয় সাতটি। এরপর খেলার ধারার বিপরীতে  দুই গোল হজম করে ০-২ গোলে হার।

 এই মুহুর্তে বাছাই পর্বের ‘ই’ গ্রুপে ভারত দুই খেলায় এক পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ দলের মধ্যে চতুর্থ স্থানে আছে। আর পয়েন্ট শূন্য বাংলাদেশের অবস্থান সবার নীচে। তবে আজ বাংলাদেশ যদি ভারতকে হারাতে পারে তাহলে তারা বাছাই পর্বে জয় পাবে ২০০১ সালের পর। তাদের  আগের জয় ২০০১ সালে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে। ৩-০তে জিতেছিল সেই ম্যাচ। ২০১১ সালে তাদের লেবাননেন বিপক্ষে নিজ মাঠে ২-০  গোলের জয় থাকলেও তা ছিল প্রাক বাছাই পর্বের ম্যাচে। অবশ্য বিশ্বকাপ প্লে -অফ কোয়ালিফায়ার্সে বাংলাদেশ ২০১১ সালে পাকিস্তানকে ৩-০ এবং এবার লাওসকে ১-০তে পরাজয়ের স্বাদ দেয়।

 আফগানিস্তানকে টপকে গ্রুপে তৃতীয় স্থান পেতে হলে আজ ভারতের জয়ের বিকল্প নেই। তারা যে উজ্জ্বীবিত ফুটবল খেলেছে গত দুই ম্যাচে তাতে তারা আজ নিজ মাঠে হাজার হাজার দর্শকের সামনে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশের বিপক্ষে। অবশ্য ভারতের ফুটবলের যতো উন্নতিই হোক না কেন বাংলাদেশের সাথে তাদের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হয়। সর্বশেষ দুই ম্যাচে ভারত কোনো মতে হার এড়ায়। তা সুনীল ছেত্রীর গোলে।

বাংলাদেশ ২-১ গোলে ভারতের বিপক্ষে প্রথম জিতেছিল ১৯৯১ সালের কলম্বো সাফ গেমসে। পরেরটি ১৯৯৯ সালের এই একই গেমসে। আর ভারত শেষ বারের মতো লালসবুজদের পরাজিত করতে পেরেছিল ২০০৯ সালর সাফ ফুটবলে। তা ঢাকাতে ১-০তে।


আরো সংবাদ



premium cement