টানা সপ্তম দিনে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে ঢাবি শিক্ষকরা
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃত্বে প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে টানা সপ্তম দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় প্রত্যয় স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এন ওহিদুজ্জামান বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কেমন আছেন প্রত্যয় স্কিম বাতিলের আন্দোলনে জাতি সেটি জানতে পেরেছে। তারা দাবি তুলেছেন শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল হওয়া উচিত। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছেন সেটি শুধু শিক্ষকদের স্বার্থের আন্দোলন নয়; বরং এটি ভবিষৎ প্রজন্মের আন্দোলন। উচ্চশিক্ষা রক্ষার আন্দোলন। শিক্ষকদের ঘাড়ের ওপর চাপানো প্রত্যয় স্কিমের একটি যুক্তি সরকারের পক্ষে নেই। তারা বলছেন এই স্কিমে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা বলতে চাই, ভুল বোঝাবুঝি নয়; বরং ভুল স্বীকার করে প্রত্যয় স্কিম বাতিলসহ শিক্ষকদের তিন দফা দাবি মেনে নিন। আজ বিশ্বের অনুন্নত, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশেও শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল আছে। ভেবে কষ্ট লাগে আমাদের মতো উন্নয়নশীল ডিজিটাল বাংলাদেশেও শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল নেই। দীর্ঘসূত্রিতা না করে শিক্ষকদের তিন দফা বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের আন্দোলন করছেন না। আমরা বিশ্বের নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএচডি ডিগ্রি অর্জন করেছি। আমাদের সিভিগুলো ওজন করে দেখুন। পাল্লা কত ভারী হয়। ইচ্ছা করলে আমরা বাইরের দেশে থেকে যেতে পারতাম। ভালো স্যালারির জব করতে পারতাম; কিন্তু সেটি না করে জাতির স্বার্থে নিজেদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করছি। আর আমাদের বলছেন স্বার্থপরতার আন্দোলন করছি। স্পষ্ট চিত্তে বলতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নিঃস্বার্থভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আপনাদের মতো বিলাসবহুল জীবন চাই না। আমাদের পাওনা দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছি। অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নিন।
সভাপতি নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, প্রতয় স্কিম বাতিলের দাবিতে দেশের ৪০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ষোল হাজার শিক্ষক শিক্ষক ফেডারেশনের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেছে। নায্য দাবি আদায়ে আমাদের এই আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা করছে কুচক্রী গোষ্ঠী। অমুক তমুক দলের এজেন্ডা নিয়ে নাকি আমরা আন্দোলন করছি বলে বানোয়াট মন্তব্য করছে। সরকার আমাদের সাথে এখনো কোনো ধরনের সংলাপে আসেনি।
তিনি আরো বলেন, ’৭১-এর পরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পাকিস্তানপন্থী আমলারা মিথ্যাচার করেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়কে খণ্ড, বিখণ্ড করেছে আমলারা। বাংলাদেশের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা আমলাদের হাত দিয়েই ঘটে। বর্তমানে দেশকে বিপথে নেয়ার প্রচেষ্টাও করছে একশ্রেণীর আমলা। আমরা আবারো সরকারকে বলতে চাই, কারো কথায় কান না দিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনের ব্যাপারে একটু ভাবুন। শিক্ষকদের সাথে বসে আলোচনা-পর্যালোচনা করুন। নতুবা শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরবেন না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা