১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ব্রিটেনের নির্বাচনে লেবার পার্টি রেকর্ড জয়ের আভাস

-

- লেবার পার্টি ৬৫০ আসনের মধ্যে ৪৮৪টি পেতে পারে
- এই প্রথম ভোট দিচ্ছেন অভিবাসীরা

ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে লেবার পার্টি রেকর্ডসংখ্যক আসনে জয়ী হয়ে ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে বলে একটি জরিপে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার জরিপ কোম্পানি সার্ভেশনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবারের ভোটে কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৬৫০ আসনের মধ্যে ৪৮৪টি আসনে জয় পাবে। এর আগে ১৯৯৭ সালে সাবেক নেতা টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে লেবার পার্টি ৪১৮টি আসনে জয়ী হয়ে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছিল। কিন্তু এবার দলটি ওই ফলাফলকেও ছাড়িয়ে অনেক দূর যাবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এর বিপরীতে গত ১৪ বছর ধরে ব্রিটেনের ক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ পার্টি (টোরি) মাত্র ৬৪টি আসন পেতে পারে বলে অনুমান প্রকাশ করা হয়েছে। এটি হতে পারে ১৮৩৪ সালে রক্ষণশীল এই দলটির প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল। ডানপন্থী রিফর্ম ইউকে পার্টি সাতটি আসন পেতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সার্ভেশন তাদের বিশ্লেষণে মাল্টিলেভেল রিগ্রেশন ও পোস্ট-স্ট্রাটাফিকেইশন (এমআরপি) কৌশল ব্যবহার করেছে। এতে স্থানীয় পর্যায়ের জনমত থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের বড় ধরনের নমুনাগুলোও পর্যালোচনা করা হয়েছে। রয়টার্স।
জরিপকারী সংস্থাগুলো বলেছে, এই মডেলে জরিপ চালানোর বদলে জরিপের তথ্যগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। অন্য এমআরপি বিশ্লেষণগুলোও দেখিয়েছে, নির্বাচনে লেবার পার্টি এর চেয়ে আরো কম ব্যবধানে জয় পেতে যাচ্ছে, তবে সার্বিকভাবে কেউই এই ফলাফলের অন্যথা হবে বলে পূর্বাভাস দেয়নি। এর আগে রেডফিল্ড ও উইলটন স্ট্র্যাটেজিসের ব্রিটেনজুড়ে পরিচালিত নিয়মিত জরিপে নির্বাচনে লেবার নিশ্চিত জয়ের পথে রয়েছে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল।

প্রথম ভোট দিচ্ছেন অভিবাসীরা : এ দিকে আজ ৪ জুলাই পার্লামেন্ট নির্বাচনে এবারের নির্বাচনেই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন অভিবাসীরা। অনেক অভিবাসীই এতে উচ্ছ্বসিত। শিক্ষার্থী ভিসায় গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন প্রথেশ পালরাজ। ২৭ বছর বয়সী প্রথেশ রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি যে দেশ থেকে এসেছি, সেখানে বিদেশীদের ভোট দেয়ার অনুমতি নেই... আমি এখানে এসেছি শিক্ষার্থী ভিসায়, কিন্তু যুক্তরাজ্যের সরকার আমাদের ব্রিটেনের নাগরিকদের মতোই ভোট দেয়ার সুযোগ দিয়েছে। আমি এতে উচ্ছ্বসিত।’
গত বছর মালয়েশিয়া থেকে শিক্ষার্থী ভিসায় ব্রিটেনে গিয়েছেন তেহ ওয়েন সুন। ৩৩ বছর বয়সী এই নারী থাকেন ইংল্যান্ডের স্যালফোর্ড শহরে। তিনিও ভোট দেবেন। রয়টার্সকে এই সুন জানান, নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল কনজারভেটিভ পার্টি ও লেবার পার্টির মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য তিনি দেখতে পান না। তবে যে দল অভিবাসীদের প্রতি সহনশীল এবং উদার, সেই দলের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
বস্তুত, গত বেশ কয়েক বছর ধরে ব্রিটেনের নির্বাচনী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে অভিবাসী ইস্যুটি। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীদের গ্রোথ ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে কনজারভেটিভ পার্টি। তারপর ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এক্ষেত্রে দলটির উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য নেই।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কনজারভেটিভ দলের বর্তমান শীর্ষ নেতা ঋষি সুনাক অবশ্য সম্প্রতি কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন, যেমন অভিবাসী আগমন সংক্রান্ত বিধি কঠোর করা, অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডা পাঠানো প্রভৃতি। কিন্তু বাস্তবে এসব পদক্ষেপ কতখানি কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে খোদ কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যেই।


আরো সংবাদ



premium cement